সিটিভি নিউজ, এম আর কামাল, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নিজবাড়িতে স্ত্রী ও সন্তানদের হাতে নৃসংশভাবে খুন হয়েছেন সৌদি ফেরত জামাল মিয়া। যদিও হত্যা করে গোপনে লাশ দাফন করতে গিয়ে আটক হয়েছেন নিহতের স্ত্রী শারমীন আক্তার ডলি (৪০), মেয়ে সামিয়া আক্তার (২০) ও ছেলে তানভীর হাসান ডালিম। মজার বিষয় হলো, বাবাকে হত্যার পর মেয়ে সামিয়া এক কল্প কাহিনী তৈরী করে এলাকায় প্রচার করেন। তার গল্পের সারাংশ ছিল এমন, তার বাবা বাথরুমে পড়ে গিয়ে মারা গেছে। ওই সময় এ্যাম্বুলেন্স ডেকে পাননি তাই হাসপাতালেও নেয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে হত্যার লোমহর্ষক ঘটনা। নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে দাপা ইদ্রাকপুরে।
এ ঘটনায় নিহত জামাল মিয়ার বড় ভাই আব্দুল হানান বাদী হয়ে বুধবার (২৬ আগস্ট) রাতে শারমিন আক্তারকে প্রধান আসামী করে তিনজনের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
ফতুল্লা মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) এস এম সফিকুল ইসলাম জানান, নিহত জামাল মিয়ার শরীরে আঘাতের চিহৃ গুলো প্রমান করে এটা হত্যাকান্ড। তাই নিহতের স্ত্রী ও দুই সন্তানকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। থানায় দীর্ঘসময় জিজ্ঞাসাবাদে প্রথম দিকে একেক জন এককভাবে বিভ্রান্তমূলক তথ্য দিচ্ছিল। এক পর্যায়ে রাতে তারা স্বীকার করে হত্যাকান্ডের বিষয়টি। পরিকল্পিতভাবেই তারা জামাল মিয়াকে হত্যা করে।
তারা জানায়, জামাল মিয়াকে রাতের খাবারের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে দেয়া হয়। এক সময় জামাল মিয়া গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়। পরে ঘুমের মধ্যে জামাল মিয়ার দুই পা চেপে ধরে ছেলে ডালিম। আর দুই হাত ধরে মেয়ে সামিয়া আক্তার। এরপর হাতুড়ী দিয়ে স্ত্রী শারমিন মাথায় একের পর এক আঘাত করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করে জামাল মিয়ার লাশ টেনে হেচড়ে বাথরুমে ফেলে রাখা হয়। পরে পরিকল্পনা মতে, তারা ঘটনাটির একটি গল্প বানায় এবং ভাড়াটিয়া ও প্রতিবেশীদের কাছে প্রচার করে। তবে কি কারণে জামাল মিয়াকে হত্যা করা হয়েছে তা পুলিশ প্রকাশ করেননি।
যে নাটক সাজানো হয়
এদিকে জামাল মিয়াকে হত্যার পর তার পরিবার বিশেষ করে মেয়ে সামিয়া আক্তার জানান, মঙ্গলবার দুপুরে সে মাসদাইরস্থ নিজ শ্বশুরালয় থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসে। তার বাবা রাত এগারোটার দিকে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরে। রাত আড়াইটার দিকে তার ঘুম ভেঙ্গে গেলে সে ডাইনিং রুমের আলো জ্বালানো দেখতে পেয়ে তা নিভাতে এসে দেখতে পায় যে তার বাবার মৃত দেহ বাথরুমের ভিতরে পরে রয়েছে। তখন সে তার মাসহ ছোট ভাইকে ডেকে তোলে। পরবর্তীতে তাদের বাড়ীর ভাড়াটিয়াদের ডেকে তোলা হয়।সবাই এসে মৃত দেহ বাথরুম থেকে বের করে নিয়ে আসে।
হাসপাতালে কেনো নিয়ে যাওয়া হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি তার স্বামীকে এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসার জন্য বলেছেন। কিন্তু তিনি এ্যাম্বুলেন্স পাননি, তাই হাসপাতালে নেয়া হয়নি। তাছাড়া পরিবারের সকলে এবং পাশ্ববর্তী ভাড়াটিয়ারাও বাবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি। এবং নিকটাত্মীয় স্বজনদের শলা পরামর্শে তাদের উপস্থিতিতে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
জানা যায়, মৃত জামাল ফতুল্লার দাপাইদ্রাকপুর এলাকার রেইনবো মোড় এলাকার মৃত মো. আলীর ছেলে। দীর্ঘদিন সে সৌদি আরব ছিল। দেড় বছর আগে সে দেশে ফিরে এসে আর সৌদি আরব যায়নি। মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার প্রবাসী জামালের নিজ বাড়ির বাথরুমে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ সময় তার পরিবার তাকে হাসপাতালে না নিয়ে, দাফনের প্রস্তুতি নেয়। সকালে প্রতিবেশীরা বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশের খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
সংবাদ প্রকাশঃ ২৭–৮–২০২০ইং । (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24 এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন। সিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)