Tuesday, June 24, 2025
spot_img
More

    মনোহরগঞ্জে ৫ বছরেও স্বামী হত্যার বিচার না পেয়ে- ৪ ছেলে মেয়েকে নিয়ে আতঙ্কে – স্ত্রী – ৩ মেয়ের সংবাদ সম্মেলন

    সিটিভি নিউজ।। আবদুর রহিম মনোহরগঞ্জ (কুমিল্লা) প্রতিনিধি ===================
    কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার খিলা ইউনিয়নের খিলা গ্রামের বড় বাড়ীর বাসিন্দা দিনমজুর মোজাম্মেল হোসেন পৈতৃক সম্পত্তির বিরোধে প্রতিবেশি বাসিন্দা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব আলমের অত্যাচার ও নির্যাতনে অকাল মৃত্যুবরণ করেন। ২০২০ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর ৩ মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে জীবনযাপন করাটাই ছিলো অনেকটা কষ্টসাধ্যের, তারমধ্যে স্বামী হত্যার বিচার চাইবো কিভাবে।এরপরও কুমিল্লার আদালতে ও বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা বাহিনীর ও এলাকাবাসীর দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন লাভ হয়নি। ১ ছেলে ৩ মেয়েকে নিয়ে আতঙ্কে মানবেতার জীবনযাপন করছেন কোহিনুর বেগম। ক্ষমতা, অর্থ ও পেশী শক্তিতে ঘাতক মাহবুব আলম সবজায়গায় আধিপত্য বিস্তার করে বেড়াতো। কথাগুলো বলেই হাউমাউ করে কেঁদে দিলেন অকালে স্বামী হারানো কোহিনুর বেগম। গত কাল নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের ডেকে কথা গুলো বলেন কোহিনুর বেগম। পাশে ছিলো ৩ মেয়ে। কোহিনুর বলেন-আমার স্বামীকে হত্যার ৫ বছর পার হলেও বিচারতো পাইনি, বরং মাহবুবুর রহমানের আতংকে ও নির্যাতন নিয়ে আমাদেরকে দিন কাটাতে হচ্ছে। ২০২৪ সালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার পলায়ন করলে,মাহবুব এখন টাকার বিনিময়ে বিএনপির উপর নির্ভর করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কোহিনুর বেগম বলেন-আমি বিধবা একজন নারী, আমার ৩টি মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত হলেও, আমার স্বামীর পৈতৃক সম্পত্তির উপর একটি ঘর পর্যন্ত করতে পারছিনা। তাই আজ আমি অসহায় হয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে সকলের নিকট বার্তাটি দিতে চাচ্ছি। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার এবং আমাদের উপর মাহবুব আলমের চলমান নির্যাতন বন্ধের দাবি করছি। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সন্ত্রাসী মাহবুব আলম কর্তৃক নির্মম নির্যাতন ও অত্যাচারে বাবার হত্যার বর্ণনা দিয়েছেন নিহত দিনমজুর মোজাম্মেল হোসেনের বড় মেয়ে শারমিন আক্তার। এসময় শারমিন বলেন আমার বাবা ছিলেন সহজ সরল একজন মানুষ। দিনমজুরি করে আমাদের সংসার চালাতেন। ফ্যাসিস্ট মাহবুব সামান্য কিছু হলেই চড়াও হতো আমার বাবার উপর। তিনি বলেন ২০১৫ সালের ২ এপ্রিল আমাদের ঘরের আঙিনায় বাবা মাটির কাজ করা অবস্থায় মাহবুব ও তার পরিবারের লোকজন লাঠিসোটা, রড,ধামা, সাবল সহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাবার উপর হামলা করে। মাহবুব দেশীয় অস্ত্র সাবল দিয়ে বাবার মাথায় আঘাত করলে বাবা চিৎকার করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে, বাবার আত্মচিৎকারের আমরা এগিয়ে আসলে আমাদের উপরও তারা হামলা করে। তিনি বলেন আমাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে রক্তাক্ত জখম আহত বাবাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি হাসপাতালে নিয়ে য়াই, সেখানে বাবার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেলে প্রেরণ করেন। কুমিল্লা মেডিকেলে চিকিৎসাচলাকালীন মাহবুবের আত্মীয় পরিচয়ে ডা. মনসুর হেলাল নামে একজন অজ্ঞাত সন্ত্রাসী এসে বলেন আমরা যেন মাহবুবের বিরুদ্ধে কথা না বলি এবং দ্রুত হাসপাতাল ছেড়ে দেয়ার জন্য আমাদের হুমকি দেয়। নিরুপায় হয়ে গুরুতর আহত বাবাকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসতে বাধ্য হই । মেডিকেল থেকে আসার পর ধীরে ধীরে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন বাবা। আর আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিতে থাকে মাহবুব ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। আমরা তখন মনোহরগঞ্জ থানায় নিরাপত্তা এবং বিচার চেয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগ দায়েরের কয়েকদিন পর তৎকালীন ওসি আবদুল হাই এবং এসআই আনোয়ার হোসেন আমাদেরকে থানায় আসতে বলেন, আমরা থানায় আসার পথে খোদাই ভিটা নামকস্থানে আসলে মাহবুবের ভাতিজা মনসুর হেলাল, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি দেওয়ান জসিম উদ্দিন তাদের লোকজন নিয়ে আমাদের উপর হামলা করে। এরপর ভয় আর আতঙ্কে দিন কাটাতে হয়েছে আমাদের। তিনি বলেন এরপর বাবা একরকম চিকিৎসাহীনভাবে ২০২০ সালে মারা যান। তিনি বলেন অত্যাচার নির্যাতন করে আমার বাবাকে হত্যার ৫ বছর অতিক্রম হলেও আমরা এখনো বিচার পাচ্ছিনা। মাহবুব আগে ছিলো আওয়ামী লীগ নেতা এখন বিএনপি হওয়ার চেষ্টা করছে। মাহবুব এখন চাচ্ছে আমাদেরকে ভিটা বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য।
    তিনি বলেন -বাবার হত্যার পর আমাদের থানায় যেতে দেয়নি, বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও আলোর মুখ দেখেনি আমাদের বিচারটি। ৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পর আমরা মনোহরগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করলে আমাদের অভিযোগের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। পরে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি আমার মা বাদী হয়ে মাহবুবকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলার তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দেন। শারমিন আক্তার বলেন মামলা করার পর থেকে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে আবারো হুমকি দিতে থাকে মাহবুব ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। তিনি বলেন আমাদের বাবা না থাকায় এখন কোনো পুরুষ অভিভাবক নেই।তাই আমরা এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছি, যেকোনো সময় আমাদের উপর নৃশংস হামলা করতে পারে মাহবুব ও তার বাহিনী, তাই আমরা মাহবুবকে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সহায়তা কামনা করছি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মোজাম্মেলের স্ত্রী কোহিনুর বেগম, মেজো মেয়ে শিমু আক্তার এবং ছোট মেয়ে সেতু আক্তার।
    এ বিষয়ে মনোহরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপুল চন্দ্র দে জানান- বিষয়টি আমাকে অবগত করা হয়েছে। বিষয়টি যেহেতু অনেক আগের ও আদালতে বিচারাধীন তাই
    আমি আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক যে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করতে প্রস্তুত রয়েছি।
    এবিষয়ে অভিযুক্ত মাহবুবের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি । সংবাদ প্রকাশঃ ২৪-০৬-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=

    আরো সংবাদ পড়ুন

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -
    Google search engine

    সর্বশেষ সংবাদ

    Recent Comments