আমি আমার সন্তানদের জন্য বাঁচতে চাই: এক বিছানায় শুয়ে সোহেলের ৪ বছর পার

সিটিভি নিউজ।। এবিএম আতিকুর রহমান বাশার, দেবীদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি/==========
এক সময়ের সুস্থ্য সবল দেহের অধিকারী যুবক সোহেল রানা(৩৫) বর্তমানে বিকলাঙ্গ হয়ে পরিবারের বোঝা হয়ে পড়ে আছেন ৪ বছর বিছানায়।
অভাবের সংসার, এক্ষুদ্র জীবনের ৫ বছর ছিলেন প্রবাসে, প্রবাস শেষে সাংসারিক জীবনে পথচলা শুরু। হঠাৎ পিঠে ব্যাথা, সেই ব্যাথা উপশমে মেরুদন্ডে অস্ত্রপ্রচার করে একেবারেই বিকলাঙ্গ হয়ে এক বিছানায়ই ৪ বছর চলে গেল তার। এখন তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ঈদ গেল, কিন্তু ঈদের আনন্দ ছিলনা তার পরিবার।
বিকলাঙ্গ সোহেল রানা(৩৫) কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার হাপুড়খাড়া গ্রামের (মধ্য পাড়ার) মৃত: সাহাজ উদ্দিনের পুত্র।
বৃহস্পতিবার (১২) জুন সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিজের অসুস্থ শরীর নিয়ে পরিবারের ভরনপোষণের বিষন্নতায় ভুগছেন তিনি। মধ্য বয়সী এ যুবক তার স্ত্রী, মা, দুই সন্তান নিয়ে কষ্টে অতিবাহিত হচ্ছে সংসার জীবন।
সোহেল’র মা’ রাবেয়া বেগম (৫৮) জানান, আমার হতভাগ্য এছেলেটি ৪ বছর আগে অসুস্থ হয়ে বিছানায় পরে রয়েছে। তার চিকিৎসায় নিজের সহায় সম্পত্তি, স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি, ধার-দেনা, ব্যাংক ঋণের টাকায় পুত্রের পিঠের ব্যাথা উপশমে ঢাকার একটি হাসপাতালে অপারেশন করান। কিন্তু পুত্র আমার সুস্থ্য তো হলোই না, উল্টো বুকের নিচ থেকে বামপাশ পুরোটাই প্যারালাইসিস রোগীর মত পুরো দেহটা অবস হয়ে গেছে। দ্বিতীয় বার অপারেশন করা হলে বুকের নিচ থেকে অপরপাশ (ডান পাশ) পুরুটা অবস হয়ে যায়। টাকার অভাবে আর চিকিৎসা করাতে পারছি না। তাই ঘরের এক কোনে এক বিছানায় ৪ টি বছর শুয়ে কাটাতে হচ্ছে তার। মা হয়ে ছেলের এমন করুন পরিণতি মেনে নিতে পারছি না। অশ্রু সিক্ত নয়নে তিনি বলেন দুটো হাত ও মাথা ছাড়া শরীরের বাকি অংশ তার দেহে আছে কিনা কিছু বলতে পারছে না।
সোহেলের স্ত্রী নাজমা আক্তার (২৭) জানান, আমার স্বামী বাঁচবে কিনা মরবে তাও জানি না। অভাবের সংসার ঈদ কেটেছে কোন রকম। হাঁটতে বসতেও পারে না। স্বামী বেঁচে থেকেও মৃত মানুষের মত পড়ে রয়েছে। কথা বলতে পারে, হাতও নাড়তে পারে। অবস অংশে ব্যাথা বা কোন অনুভূতি নেই, ক্ষিদাও বুঝেনা।
সোহেল জানান, ৫ বছর প্রবাস জীবন শেষে দেশে আসার কিছুদিন পর অর্থাৎ ২০২১ সাল থেকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ি। চিকিৎসক জানান, মেরুদন্ডের হাড়ে পানি জমেছে, তাই ব্যাথা হয়। চকিৎসা করেও কিছুই হয়নি। দু’টি অপারেশনের পূর্বে ব্যাথা নিয়ে চলাফেরা করতে পারলেও, অপারেশনের পর দুটো হাত ও মাথা ছাড়া শরীরের বাকি অংশ দেহে আছে কিনা বলতে পারছি না অভাব অনটনে সংসার, চিকিৎসা তো দুরের কথা, খেয়ে বেচে থাকাটাও এখন অনেক কষ্টসাধ্য। ছেলে- মেয়ের ভবিষ্যতে নিয়ে বড় চিন্তায় আছি। বিত্তবানরা আমার চিকিৎসায় পাশে দাড়ান। আমি সন্তানদের জন্য বাঁচতে চাই।
স্থানীয় জামাল মুন্সি বলেন, গ্রামবাসীরা সোহেলকে সাহায্য সহযোগিতা করছেন। তবে তবুও তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অসহায় এ পরিবারটির পাশে দেশের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।
এ রোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমম্পেক্সের মেডিকেল অফিসার জানান, ডাঃ মো. ইব্রাহীম হোসেন জানান, মেরুদন্ডের সমস্যাজনিত কারনে এ সমস্যা হতে পারে, রোগির হিস্ট্রি না জানলে সঠিক মন্তব্য করা সম্ভব নয়। তবে তার অনুভূতীর নার্বগুলো বিকল হলেও খাদ্যনালীর নার্বগুলো মস্তিষ্কের সাথে সচল রয়েছে। উন্নত চিকিৎসা করালে সুস্থ্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ছবির ক্যাপশনঃ মেরুদন্ড বিকল হয়ে এক বিছানায় শুয়ে ৪ বছর পার করা সোহেল রানার কিছু ছবি। সংবাদ প্রকাশঃ ১২-০৬-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like)
আরো পড়ুন