
সিটিভি নিউজ।। এম ফয়জুল ইসলাম ফয়সাল, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
মুরাদনগর উপজেলার ১৯নং দারোরা ইউনিয়নের কেমতলী ও আশপাশের এলাকায় অবৈধভাবে ভেকু মেশিন দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় সরবরাহ করা হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, একদল অসাধু ব্যক্তি দলবদ্ধ হয়ে দীর্ঘদিন ধরে কৃষিজমি ধ্বংস করে মাটির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে শুধু ফসলি জমির উর্বরতা হারাচ্ছে না, পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোও ধ্বংসের পথে।
এলাকাবাসীর পক্ষে মোঃ জামাল হোসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ করেছেন যে, পুষ্কুরনিরপাড় গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ সালাউদ্দিন (৪০), পালাসুতা গ্রামের আলাল মিয়া (৪২), দারোরার আ: রহিমের ছেলে মোঃ করিম (৩৩), কাজিয়াতলের মৃত আঃ গনি হাজীর ছেলে মোঃ জহিরুল ইসলাম (৬০) ও একই গ্রামের লাল ফরিদ (৫০) মিলে দীর্ঘদিন ধরে কেমতলী গ্রামের জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে আশপাশের কৃষিজমির পাশাপাশি কেমতলী ও পালাসুতার সংযোগ সড়কও গর্তে পরিণত হয়েছে। ফলে স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও সাধারণ পথচারীদের চলাচলে ভয়াবহ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার অবৈধ মাটি কাটায় বাঁধা প্রদান করায় সালাউদ্দিন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা মিলে কয়েকজনকে বেধড়ক মারধর করে।
একজন নারী সম্প্রতি তাদের নম্বরবিহীন ট্রাক্টর চাপায় গুরুতর আহত হয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করতে গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চুপ করিয়ে দিচ্ছে। মিথ্যা মামলা ও হামলার শঙ্কায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। গতকাল শুক্রবার অবৈধ মাটি কাটায় বাঁধা প্রদান করায় অভিযুক্ত সালাউদ্দিন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা বাঁধা দানকারী ব্যক্তিকে বেধড়ক মারধর করে।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “মুরাদনগর একটি বিশাল উপজেলা। প্রতিটি ইউনিয়নে আমাদের নজরদারি থাকলেও একযোগে সব জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। তবে আমরা চিরতরে এসব বন্ধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
স্থানীয়দের মতে, ড্রেজার ব্যবসার মূল হোতারা এক সময় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তারপর এমপি জাহাঙ্গীরের ছত্রছায়ায় চলেছে তাদের তান্ডব। কিন্তু বর্তমানে বিএনপির কিছু অসাধু নেতা কায়কোবাদ পরিবারের নাম ভাঙিয়ে এই অবৈধ ব্যবসার নেতৃত্ব দিচ্ছে। ফলে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে অবাধে ফসলি জমির মাটি কাটা চলতে থাকায় প্রতিবাদের সাহস পাচ্ছে না জনগন।
একজন কৃষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের বাপ-দাদার রেখে যাওয়া জমি এভাবে শেষ হয়ে যাচ্ছে। কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হওয়া রাস্তা এখন কাদায় পরিণত হয়েছে। বৃষ্টি নামলে চলাচল একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়বে। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে পুরো এলাকা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।”
অভিযুক্ত সালাউদ্দিন বলেন, “সেখানে আমার অল্প কিছু জমি আছে। মাটি কেটে ট্রাক দিয়ে নিয়ে বিক্রি করি।” প্রতিবাদ করায় আক্রমণ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তৎক্ষনাৎ মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
ভুক্তভোগীরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় মেম্বার চেয়ারম্যানরা সদিচ্ছা নিয়ে চাইলে ভূমিখেকো নির্মূল সম্ভব। তারা চান, শুধু সাময়িক অভিযান নয়, বরং স্থায়ীভাবে এই অবৈধ মাটি কাটার ব্যবসা বন্ধ হোক। তা না হলে এলাকার কৃষি, পরিবেশ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।সংবাদ প্রকাশঃ ২২-০৩-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=