Saturday, October 5, 2024
spot_img
More

    সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব লাখ লাখ মানুষ, ভাঙ্গনের মুখে পড়ে দিশেহারা

    সিটিভি নিউজ।। মোঃ আবদুল আউয়াল সরকার, জেলা প্রতিনিধি,কুমিল্লা:============
    অনেকেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র, আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। সময় যতো বাড়ছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বন্যা কবলিত মানুষের সংখ্যাও। জেলা ত্রাণ কর্মকর্তার তথ্য অনুযায়ী এরই মধ্যে জেলার ১৪ উপজেলায় ৭ লক্ষাধিক মানুষ পাবিন্ধী হয়ে পড়েছে। যদিও বেসরকারি হিসেবে সংখ্যাটা ১০ লাখ ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ বুড়িচংয়ে গোমতীর ভাঙ্গনের ফলে বন্যা কবলিত মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুণ। লোকালয়ে প্রবেশ করা পানির তীব্র স্রোতে শত শত শতাধিক মানুষের বাড়িঘর বিলীন হয়ে গিয়েছে। খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। এখনো বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে গোমতী নদীর পানি। এছাড়াও বন্যা কবলিত জেলার চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট, লাকসাম মনোহরগঞ্জসহ কয়েকটি উপজেলার ৫/৬ লাখ মানুষ দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে।
    জানা গেছে, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে কুমিল্লা বন্যা শুরু হয়। এরই মধ্যে জেলার চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, সদর দক্ষিণ, বরুড়া, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়াসহ জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলাই বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। সবখানেই বন্যার্তদের মাঝে হাহাকার দেথা গেছে। অনেক এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্রগুলো পানিবন্ধী হয়ে পড়ায় বন্যার্তদের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। সবশেষ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে গোমতী নদীর বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে গেলে আকাশ ভেঙ্গে পড়ে এ উপজেলার মানুষের উপর। মূলত ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতি বৃষ্টিতে গত মঙ্গলবার থেকেই কুমিল্লার গোমতী নদীতে পানি বাড়তে থাকে। ফাটল দেখা দেয় বাঁধের অন্তত ২০টি স্থানে। ভাঙ্গন রোধে নদীর বাঁধ রক্ষায় নানা চেষ্টা চালাতে থাকে মানুষজন। মানুষের উৎকণ্ঠ বাড়িয়ে দিয়ে গোমতীর পানি প্রবাহিত হতে থাকে বিপৎসীমার উপর দিয়ে।এরপরই রাত সাড়ে ১১টার দিকে খবর আসে- বুড়বুড়িয়া এলাকা দিয়ে ভেঙ্গে গেছে গোমতী নদীর বেড়িবাঁধ। এই বাঁধ ভাঙার কারণে বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যেতে থাকে। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত গোমতীর ভাঙ্গনের ফলে অন্তত ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ভাঙ্গা বাঁধ দিয়ে প্রবল স্রোতসহ লোকালয়ে ঢুকছে পানি। ফলে দুই উপজেলার অন্যান্য গ্রামগুলোও প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

    বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৬০ হাজার পরিবার বন্যা আক্রান্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ৭০ হাজার। ৩৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
    সরেজমিনে বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ভাঙ্গন কবলিত গ্রামের অন্তত ৫০০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে বাড়ি সংলগ্ন গোমতী নদীর পাড়ে। পাশের বিভিন্ন স্থানে বেঁধে রাখা হয়েছে শতাধিক গরু ও ছাগল। তার কাছেই কোনরকম ছাউনি টানিয়ে বসবাস করছে এক একটি পরিবার। নদীর পাড়ে বুড়বুড়িয়া থেকে ভান্তি পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এসব মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব মানুষগুলোর চোখে মুখে বিরাজ করছে অজানা আতঙ্ক। হঠাৎ ভাঙ্গনের মুখে পড়ে দিশেহারা তারা। এই চিত্র শুধু বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া এলাকারই নয়, বন্যা কবলিত এ উপজেলার ৪০টি গ্রামের মানুষই আছে প্রাকৃতিক মহাদুযোর্গে। পাশাপাশি প্লাবনের শঙ্কা রয়েছে পাশের ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা।
    বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি বিষয়ে যোগাযোগ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবেদ আলি জানিয়েছেন, কুমিল্লার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এতে পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে ১১৮টি ইউনিয়নের ৭ লক্ষাধিক মানুষ। আমরা বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছি। সহায়তা অব্যাহত রাখতে মন্ত্রণালয়ে চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে।
    কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. নাসিমা আক্তার বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় আমাদের ২২৭টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করছেন তারা।
    কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পংকজ বড়–য়া বলেন, দুর্গত এলাকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যা কবলিতদের জন্য শুকনো খাবার স্যালাইন ঔষধ মজুদ আছে। ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত আছে।

    বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া এলাকায় গোমতী নদীর বাঁধের ভাঙ্গন প্রায় ৩০০ ফুট ছাড়িয়েছে। অস্বাভাবিক স্রোত এবং পানির উচ্চতায় প্লাবনের কারণে প্রতিনিয়ত তলিয়ে যাচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা। দুর্গত হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। বেড়িবাঁধের আশেপাশের লোকজন আশ্রয় নিয়েছে উঁচু রাস্তার উপরে।

    ভয়াবহ বন্যায় ভাসছে মানবতা। ডুবে গেছে অধিকাংশ এলাকা। বিলীন হয়ে গেছে বেঁচে থাকার সর্বশেষ অবলম্বন। এখন শুধুই বাঁচার আকুতি। বন্যার্ত এসব এলাকায় ছুটে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। সরকারি-বেসরকারিভাবে এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন সংস্থা এবং সংগঠন। দুর্গত মানুষকে উদ্ধারের পাশাপাশি পৌঁছে দিচ্ছেন ত্রাণসামগ্রী। যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করছেন। সংবাদ প্রকাশঃ =২৫-৮-২০২৪ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ক্লিক করুন=

    আরো সংবাদ পড়ুন

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -
    Google search engine

    সর্বশেষ সংবাদ

    Recent Comments