কুমিল্লা গোমতির নদীর মাটি কাটা অভিযানে গত ১ মাসে শতাধিক ড্রেজার মেশিন ধ্বংস

সিটিভি নিউজ।।    নেকবর হোসেন   কুমিল্লা প্রতিনিধি  জানান ===
কুমিল্লা গোমতির মাটি কাটা আর জেলা প্রশাসনের অভিযান চলছে সমান তালে। এ যেন প্রশাসন আর মাটি খেকোদের লুকোচুরি খেলা। এ দিকে গোমতির মাটি কাটা জিরো টলারেন্স আনতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন। গত এক মাসে জেলা প্রশাসনের অভিযানে শতাধিক মাটি কাটা ও বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করা হয়েছে। এভাবে গত কয়েকদিনে প্রতিদিনই গড়ে ১২ থেকে ১৫টি ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করা হলেও কোন ক্রমেই থামছে না মাটি কাটা। জেলা প্রশাসন বলছে মাটি কাটা বন্ধে কমিটি গঠন করা হবে, প্রতিদিনই অভিযান চলমান থাকবে এবং পুলিশ মাটি খেকোদের বাড়ি থেকে ধরে আনবে।
গোমতী নদীর চর, তীর এবং বাঁধ থেকে কোনভাবেই অবৈধ মাটি ব্যবসায়িদের সরানো যাচ্ছে না। দিনে অভিযান হলে, রাতে চলে মাটি কাটা ও পরিবহন। আবার মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম শুরু হলে ভেকু, ড্রেজার, পাইপ কিংবা ট্রলার ফেলে পালায় ব্যবসায়িরা।
গত এক মাসে কুমিল্লায় গোমতী নদীর গাজীপুর, গোলাবাড়ি, জাকুনিপাড়া, অরন্যপুর, টিক্কাচর, সংরাইশ , শুভপুর , বিষ্ণুপুর, দক্ষিণ রসুলপুর, আড়াইওরা, বদরপুর, আমতলী, দুর্গাপুর, শাহপুর, জালুয়াপাড়া, জগন্নাথপুর, চানঁপুর, কাপ্তান বাজার, পালপাড়া ভূইয়াবাড়ির ঘাট, দূর্গাপুর, আড়াইওড়াসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক ঘাটে অভিযান পরিচালনা অবৈধ ভাবে মাটি কাটা ও বালু উত্তোলনের অপরাধে শতাধিক ড্রেজার মেশিন ড্রেজার ধ্বংস করা হয়েছে। করোনাকালিন সময়ে জেলা প্রশাসনের অভিযান কিছুটা স্থবির থাকলেও আবার নতুন করে অভিযানে গত ৫ দিনে ৫১টি ড্রেজার ধ্বংস করেছে প্রশাসন।
এদিকে ২ মে রবিবার কুমিল্লা নগরীর সংরাইশ জগন্নাথপুর অরুন্যপুরে গোমতির মাটি কাটা বন্ধে অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ গোলাম মোস্তফা ও অতীশ সরকার। অভিযানে ১৪ টি ড্রেজার মেশিন জব্দ করে ধ্বংশ করা হয়। অভিযানে খবর টের পেয়ে মাটি খেকোরা পালিয়ে যায়। তাছাড়া সদর উপজেলা প্রশাসন ধ্বংশ করেছে ১৫টি ড্রেজার মেশিন। জেলা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার বাহিনীর সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটগন ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে এসব ড্রেজার ও মাটি-বালু উত্তোলনের সরঞ্জাম ধ্বংস করা হয়। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ গোলাম মোস্তফা জানান, আমরা অভিযানের সময় কাউকে পাইনি, যারা মাটি কাটে অভিযানের সময় ড্রেজার মেশিন রেখে পালিয়ে যায়। পথে তাদের নিজস্ব সোর্স থাকার কারনে আগ থেকেই তারা মাটি বহনকরা ট্রাকসহ সরে যায়। ফলে আমরা তাদের আটক বা জেল জরিমানা করতে পারিনা। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
জানা যায়, কুমিল্লা গোমতী নদীতে আদর্শ সদর উপজেলাধীন এলাকায় ৬ টি ঘাট ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। ৬ টি ঘাট ইজারা নিয়ে বালু উত্তোলনের কথা থাকলেও তারা বালু নয় নদীর দুই পাড়ের মাটি কেটে বিক্রি করছে । এ ৬ টি ঘাটের সাথে আরো নামে বেনামে একাধিক ঘাট বানিয়ে দিনে রাতে শত শত একর ফসলি জমির মাটি কাটা তারা। পাড় কেটে ক্ষতবিক্ষত করছে নদীর মানচিত্র। এ বালু মহালের ইজারার মেয়াদ শেষ হয়েছে মার্চ মাসে। গোমতি রক্ষা ও পাড়ের মাটি কাটা বন্ধে ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন করে আর কোন ইজারা দেয়নি জেলা প্রশাসন। ইজারা বন্ধ করে দিলেও এখনও মাটি খেকোরা প্রতিনিয়ত দিনে রাতে কাটছে দু পাড়ের ফসলি জমির মাটি।
গোমতী নদীর তীরে মাটিকাটা নিয়ে অধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সাঈদ বলেন, গত ১ মাসে প্রায় শতাধিক ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করা হয়েছে। দিনে ও রাতে আমাদের অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অনেক সময় আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে বালু উত্তোলনকারীরা পালিয়ে যায়। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি মাটি কাটা শূণ্যের কোটায় নামিয়ে আনা। একের পর এক অভিযান পরিচালনা করে যদি তাদের সরঞ্জামগুলো নিয়মিত ধ্বংস করা যায় তাহলে এসব অবৈধ মাটি ব্যবসায়িদের মনোবল ভেঙে যাবে। লোভী এবং অসাধু চক্র কাচা টাকার লোভে এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় এগুলো আর ছাড় দেয়া হবে না।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, মোবাইল কোর্ট চলমান থাকছেই। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিয়ে আলাদা কমিটি হবে। তারা তদন্ত করে বের করবে এই অবৈধ কাজের পেছনে কারা জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে কমিটি। এরপর পুলিশ বাড়ি থেকে তাদের ধরে আনবে। আমরা সক্রিয় আছি। কুমিল্লাবাসীকেও সচেতন হতে হবে নিজের সম্পদ রক্ষায়।
কুমিল্লা সদর আসনের সাংসদ আ ক ম বাহউদ্দিন বাহার এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা চাই কুমিল্লা সড়রে গোমতী নদীর জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে দাউদকান্দি পর্যন্ত কেউ যেন নদীর বাঁধ থেকে ড্রেজার বা ভেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন না করে। নদী তীরের কোন কৃষি জমি যে কেউ নষ্ট না করে। পুরো গোমতী এলাকায় বিশেষ করে ‘আমার নির্বাচনী এলাকায়’ যেন গোমতীতে কোন ড্রেজার দেখতে না পাই। কারা এসব ভেকু কিংবা ড্রেজার এনেছে তাদের বিরুদ্ধে যেন প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়া এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসককে বলেছি।সংবাদ প্রকাশঃ  ০৩২০২১ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ