কুমিল্লা কাস্টমসের রেকর্ড রাজস্ব প্রবৃদ্ধি অর্জনে সেরা কর্মকর্তাদের পুরস্কার

সিটিভি নিউজ।।     রাজস্ব আদায়ে গত বছরের চেয়ে সেপ্টেম্বর মাসে ১৫৩%, জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ৭৩% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে কুমিল্লা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট। করোনাকালে বৈশ্বিক অর্থনীতি যখন নাজুক অবস্থায় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি অর্জন যখন চ্যালেঞ্জের মুখে তখন ব্যতিক্রমী ও প্রশংসনীয় প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে কুমিল্লা কাস্টমস ও ভ্যাট কমিশনারেট। ব্যতিক্রমী অগ্রগতির পেছনের পরিশ্রমি কর্মীদের পুরস্কৃত করার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে গত ২৭ অক্টোবর এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কুমিল্লা কমিশনারেট। অনুষ্ঠানে মোট ৫৫ জন কর্মকর্তাকে পুরস্কৃত করা হয়। ২৩ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে তাঁদের বিশেষ অবদানের জন্য সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি ও পুরস্কার দেয়া হয়। এ সবের মধ্যে রয়েছে রিটার্ন যাচাই, নিবারক কার্যক্রম, বকেয়া আদায়, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, নিরীক্ষা ও তদন্ত, রাজস্বের নতুন ক্ষেত্র বৃদ্ধিকরণ, নিবন্ধন ও মূসক জরিপ, সিগারেট ও বিড়ির নকল ব্যান্ডরোল সনাক্তকরণ।
অন্যান্য অর্জনগুলো হচ্ছে, অনলাইনে রিটার্ন পেশ ৯৩.৭১%, ইটভাটার বকেয়া আদায়ে প্রবৃদ্ধি ৬৪৩%, স্থান ও স্থাপনা খাতে প্রবৃদ্ধি ২১%, সার্টিফিকেট মামলা নিষ্পত্তি ৪০টি, ভ্যাট মামলা ৩৯ টি, শুল্ক ফাঁকি মামলা ১৬ টি, জরিপকৃত প্রতিষ্ঠান ৩৯৪৪ টি, রিটার্ন যাচাই করে ফাঁকি উদঘাটন ৫১ টি, নিবারণ অভিযান ৯৫৭ টি।

গুরুত্বপূর্ণ কর্মকান্ডের মধ্যে অবৈধ সিগারেটের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করা হয়। নকল/পুন: অবৈধ বিড়ি ও সিগারেট ব্যান্ডরোল প্রতিরোধে ৪০ টি অভিযান থেকে ১৬ টি সফল অভিযানে প্রায় ১১ লক্ষ শলাকা সিগারেট ও ১০ লক্ষেরও বেশি শলাকা বিড়ি আটক করা হয়। এর মূল্য  প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা।
কুরিয়ার সাভির্সগুলোতে গত তিন মাসে সাড়াঁশি অভিযান চালানো হয়।  ২০১ টির মধ্যে ২৮ টি সফল অভিযানে প্রায় ২২ লক্ষ টাকার মালামাল আটক করা হয়।
পর্যাপ্ত যানবাহনের স্বল্পতা সত্তে¡ও দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের ইটভাটাগুলোতে সফল ৩৫২ টি অভিযান পরিচালনা করে ৪.৭৫ কোটি বকেয়া রাজস্ব আদায় করা হয়; ইটভাটার বকেয়া আদায়ের প্রবৃদ্ধি গত বছরের তুলনায় ৬৪৩%।
স্থান ও স্থাপনা খাতে রাজস্ব আদায় হয় ১ কোটি ০৪ লক্ষ টাকা। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃ্দ্িধ ২১%; যা কর্মকর্তাদের সরেজমিন নিবিড় পরিদর্শন ও তদারকির ফসল।

প্রায় ৮ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন ও ৪২ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় করেছে।
১০৮ টি অভিযান পরিচালনা করে ভ্যাট সংক্রান্ত ৩৯ টি এবং কাস্টমস সংক্রান্ত ১৬ টি মামলা রুজু করা হয়। ইতোমধ্যে ২১ টি মামলা নিষ্পত্তি করে প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়েছে।
ছয় জেলায় করদাতাদের সচেতন করার লক্ষ্যে টেলিফোনে যোগাযোগের পাশাপাশি মোবাইলে এসএমএস, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি এবং স্থানীয় ক্যাবল অপারেটরে বিজ্ঞপ্তি ও বাসায় সশরীরে গিয়ে সম্মানিত করদাতাগণকে বুঝিয়ে রাজস্ব বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন। এছাড়াও শীর্ষ করদাতাদের উদ্বুদ্ধ করতে সৌজন্য গিফট সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে।

সেরা বিভাগীয় কর্মকর্তার স্বীকৃতি অর্জন করেন নোয়াখালী বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা জনাব মোঃ ফখর উদ্দিন। তিনি বলেন করোনাকালে আরেকটি যুদ্ধকে সামনে নিয়ে রাজস্ব সৈনিকদের কাজ করতে হবে। এ পুরস্কার আমাদের দায়বন্ধতা বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি সিগারেট/বিড়ি আটক ও অনলাইন রিটার্ন পেশে গুরুত্বপূর্ণ  অবদানের জন্য এ স্বীকৃতি পান। সার্টিফিকেট মামলা নিষ্পত্তিতে অবদানের জন্য সেরা রাজস্ব কর্মকর্তা হন বেলাল উদ্দিন ফাইজুল। তিনি বলেন সরকারের রাজস্ব বেশী আদায়ে ভূমিকা রাখতে পেরে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করছি।
সেরা সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হন নন্দিতা ভৌমিক। তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েও অনলাইন রিটার্ন পেশে নিজ বিভাগসহ অন্য বিভাগকে সহায়তা ও পরামর্শ সেবা দিয়ে ব্যতিক্রমী ভূমিকা রাখেন। নন্দিতা ভৌমিক বলেন, প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে কাজ করার আনন্দই আলাদা। সাফল্যে আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়।

এছাড়া, কর্মচারীদের মধ্যে মোঃ মনির হোসেন, গাড়ীচালক মোঃ জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া, অফিস সুপারিনটেনডেন্ট মোঃ ছালাহউদ্দিন তালুকদার পুরস্কৃত হন। পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্যান্যরা হলেন: সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা খ.ম. রিশাদুল আলম নূর, ফেরদৌস ওয়াহিদ, বিপ্লব চন্দ্র দাস, রাজীব রায়, রিজুয়ান রশিদ রিপন, মোঃ সরোয়ার হোসেন, মাসুদ রানা, মোঃ আবু সায়েদ, সুমন চন্দ্র দে, মোঃ মাহমুদুল হাসান মুন্সী, মোঃ জসিম উদ্দিন, মোঃ হারুন-অর-রশিদ, মোঃ সুবা মিয়া তালুকদার ও প্রনব তঞ্চঙ্গ্যাঁ; রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান, মোঃ মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া, মোঃ আমিনুল হক, মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, তপন কুমার দাশ ও মোঃ আমীর হোসেন।

অনুষ্ঠানে যুগ্ম কমিশনার জনাব মোঃ মুশফিকুর রহমান বলেন বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে কর্মকর্তাদের শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিস্বরুপ পুরস্কার প্রদান করা হয়। তিনি বলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীন শুল্ক, আয়কর ও ভ্যাট দপ্তরগুলোর মধ্যে কুমিল্লা কমিশনারেট রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ও রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানে রয়েছে। এ বিষয়ে কুমিল্লা কমিশনারেটের সহকারী কমিশনার (সদর) ছালাউদ্দিন রিপন বলেন, কুমিল্লা কমিশনারেট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্ধারিত সূচকসমূহের বেশিরভাগ সূচকে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। যে সকল পরিশ্রমী কর্মকর্তা এতে ভূমিকা রেখেছেন তাঁদের স্বীকৃতি প্রদান আবশ্যক হয়ে পড়েছে। রাজস্ব আদায়ে প্রথম স্থান অর্জনের পথ কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। পুরস্কারের ধারা অব্যাহত থাকলে সকলের কাজের মান বাড়ে।

কমিশনার জনাব মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, করোনাকালে কুমিল্লা টীম কখনো পশ্চাদমূখী বা কর্মবিচ্যুতি থাকেনি। দলবন্ধ প্রচেষ্টা প্রতিযোগিতা এ অভূতপূর্ব সাফল্যের মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। সক্ষম কর্মকর্তাদের বাছাই করে জটিলতর কাজে নিয়োগ, মনিটরিং উদ্বুদ্ধকরণ এক্ষেত্রে গতি বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। সর্বোপরি কর্মস্থলে
দেশাত্ববোধও সেবার মনোভাব থাকা জরুরী। সারা বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের এরকম কাজের ধারা অব্যাহত থাকা উচিত। গভীর রাতে নিবারণ কার্যক্রম, প্রত্যন্ত অঞ্চলের ইটভাটাগুলোতে অভিযান পরিচালনা এবং অফিস সময় ছাড়াও বাড়তি সময় কাজ করায় কর্মকর্তাদের মনোভাব প্রশংসনীয়। দক্ষ, সক্ষম, উপযুক্ত ও রাজস্ব বৃদ্ধিতে সকল কর্মকর্তাদের ভবিষ্যতেও পুরস্কৃত করা হবে।

সংবাদ প্রকাশঃ  ৩০১০২০২০ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ