কুমিল্লা’য় কুল চাষে বদলে গেছে ইউনুছের ভাগ্য

সিটিভি নিউজ।।    আব্দুল্লাহ আল মানছুর, কুমিল্লা প্রতিনিধি:===
পেশায় একজন কৃষক ইউনুছ ভূইয়া, জীবিকার তাগিদে ১৪ বছর প্রবাসে থেকে কঠোর পরিশ্রম করেও ভাগ্য বদলাতে পারেনি। দেশে এসে বেকার হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু কখনও তিনি হতাশ হননি। বরং সংসারকে মনে করেছেন একটি যুদ্ধ ক্ষেত্র। অন্যের অধীনে চাকরি না করে সুন্দরী কুল চাষের মাধ্যমে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে সক্ষম হয়েছেন ইউনুছ মিয়া। তাই দৃঢ় মনোবলকে পুঁজি করে পরিশ্রমের মাধ্যমে আজ হয়েছেন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার একজন আর্দশ উদ্যোক্তা। বাণিজ্যিকভাবে সুন্দরী কুল চাষ করে বেশ সফলতা পেয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা ইউনুস ভূইয়া। বর্তমানে তিনি ৬০ বিঘা জমিতে এই সুন্দরী কুল চাষ করে নিজে যেমন অর্থনৈতিকভাবে বেশ লাভবান হয়েছেন, তেমনি তারই বাগানে অনেক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কাজিয়াতল গ্রামের মোসলেম ভূইয়ার ছেলে ইউনুছ ভূইয়া। গাছ পরিচর্যা করছেন ইউনুছ ভূইয়া। প্রথমে নিজের এবং অন্যের জমি লিজ নিয়ে ৬৬ বিঘা জমি নিয়ে প্রথমে মাছের খামার করেন। কিন্তু অঞ্চলটি উঁচু হওয়ায় জমিতে সারা বছর পানি থাকে না, পানি কমে যায়। তেমন লাভও পাচ্ছিলেন না। তিনি ভাবতে থাকলেন মাছের খামারের পাড় ও পরিতেক্ত জমিতে কি করা যায়। তার অদম্য ইচ্ছা আর মনোবলের জোরে ১৮৩০ শতক জায়গায় পরে গড়ে তুলেন নানা জাতের ফল ও সবজি বাগান। কিছু অংশে টাঙ্গাইল থেকে এনে লেবুর চারা, কলা গাছ, একাশি গাছ ও বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি রোপন করলেন। আর কি করা যায় সেই ভাবনায় ইউটিউবে দেখলেন বল সুন্দরী কুল নামের বরই চাষ। বল সুন্দরী চাষ তার ভাল লাগলে নাটোর থেকে ২ হাজার ৫শত চারা সংগ্রহ করে জমিতে বল সুন্দরী বরই রোপন করলেন। আট মাসে কুলের ফল আসা শুরু করে। গত বছর অল্প কয়েকদিনে তিনি কয়েক লক্ষাধিক টাকার কুল বিক্রি করেছেন। এই বছর তার বাগানে বিপুল পরিমানের বাম্পার ফলন ফলিয়ে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছেন। তাকে দেখে এখন অনেকেই উৎসাহিত হচ্ছে। দূর দূরান্ত থেকে অনেক বেকার যুবকরা এসে দেখছেন এবং এ বিষয়ে নানা পরামর্শ তার কাছ থেকে নিচ্ছেন। ইউনুছ ভূইয়া বলেন, প্রথম বছরে প্রতি গাছে ১০/১২ কেজি কুল পেয়েছিলাম কিন্তু এ বছর প্রতি গাছে ৭০/৮০ কেজি করে কুল পাচ্ছি। ৩য় বছর পর্যন্ত ফলের সাইজ ঠিক থাকবে। পরে ছোট হতে থাকবে। তার দাবি সুদবিহীন ঋণ পেলে তার খামার আরো বড় করতে পারবেন। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকতা মাইন উদ্দিন আহমেদ বলেন, ইউনুস ভূঁইয়াাকে শুরু থেকে উপজেলা কৃষি অফিস হতে আমরা বিভিন্ন পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি। জৈব সার ব্যবহার করে যেন ফল ও সবজি উৎপাদন করতে পারে সেজন্য তাকে কেঁচো কম্পোস্ট প্রদর্শনী দিয়েছি। তিনি আরো জানান যে, আমাদের উদ্যোগ মুরাদনগর উপজেলায় ১০০ কৃষি উদ্যোক্তা তৈরির অন্যতম সেরা উদ্যোক্তা ইউনুস ভূঁইয়া। শুধু এই উপজেলায় নয় পুরো কুমিল্লার মধ্যে মুরাদনগরের কুল বাগান সবচেয়ে বড়। ৬০ বিঘা জমিতে চারো পাশে ক্যানেল তৈরি করে এ ফল বাগানটি গড়ে তুলেছেন। তার বলসুন্দরী কুল স্বাদে সুমিষ্ট ও অনন্য। আমরা ইউনুস ভূঁইয়ার পাশে আছি, উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে তাকে আরো এগিয়ে নিতে চাই।

সংবাদ প্রকাশঃ  ২৭-০২-২০২২ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে/লিংকে ক্লিক করুন=  

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ