সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ মোট ২৫ জন সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার

সিটিভি নিউজ।।      প্রেস বিজ্ঞপ্তি===    রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল, শাহবাগ, মুগদা, ওয়ারী, খিলগাঁও ও শাহজাহানপুরসহ বিভিন্ন এলাকা হতে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ মোট ২৫ জন সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার; ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র জব্দ করেছে র‌্যাব-৩।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক তোড়জোড় চালানোর পরিকল্পনা করছিল। এছাড়াও থার্টি ফার্স্ট নাইট, ধর্মীয় উৎসব এবং জাতীয় বা রাষ্ট্রীয় উৎসবসমূহে তারা বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকান্ড ঘটিয়ে উৎসবমুখর সাধারণ জনতা ও পথচারীদের নিকট হতে ছিনতাই করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়ে গুরুতর জখম করে থাকে। এসব ভুক্তভোগীদের বেশির ভাগই কোন আইন শৃংখলা বাহিনীর দ্বারস্থ হয় না। ফলে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা দিন দিন বেপরোয়াভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের প্রায় সকলেই মাদকাসক্ত। সাম্প্রতিককালে ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা বৃদ্ধির বিষয়টি ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে। ফলশ্রæতিতে র‌্যাব উক্ত ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। র‌্যাব-৩ বিগত ০৬ মাসে ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ৫৮টি অভিযান পরিচালনা করে দুই শতাধিক ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় ২৯/১২/২০২২ তারিখ সন্ধ্যা হতে রাত পর্যন্ত র‌্যাব-৩ এর কয়েকটি আভিযানিক দল একযোগে রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল, শাহবাগ, মুগদা, ওয়ারী, খিলগাঁও ও শাহজাহানপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য ১। মোঃ সুজন ফকির (২০), পিতা-মোঃ জলিল ফকির, সাং-টোনা, থানা-পিরোজপুর সদর, জেলা-পিরোজপুর, ২। ইউসুফ ঘরামী (২৪), পিতা-আনিচ ঘরামী, সাং-আগরপুর, থানা-বাবুগঞ্জ, জেলা-বরিশাল, ৩। মোঃ শুভ (২৬), পিতা-মোঃ আফসার, মাতা-শিরিন আক্তার, সাং-অরাঙ্গাবাজ, থানা-দোহার, জেলা-ঢাকা, ৪। মোঃ সবুজ (২০), পিতা-আনিসুল, মাতা-সবুরা, সাং-তৈরা, থানা-অটোয়ারী, জেলা-পঞ্চগড়, ৫। মোঃ রাজ্জুল মোল্লা (৩৫), পিতা-মৃত আজিজুল মোল্লা, সাং-বানিয়াপাড়া, থানা-কুমারখালী, জেলা-কুষ্টিয়া, ৬। মোঃ হাবিবুর রহমান (২০), পিতা-খোকন সরদার, সাং-দুপলাডাঙ্গা, থানা-জাজিরা, জেলা-শরিয়তপুর, ৭। মোঃ মিলন (৩০), পিতা-মোঃ কুদ্দুস বেপারী, সাং-জাকিরতবক, থানা-বরগুনা সদর, জেলা-বরগুনা, ৮। মোঃ স্বপন (২৮), পিতা-মৃত কলম কাজী, সাং-রাজনগর কাজি কান্দী, থানা-নড়িয়া, জেলা-শরিয়তপুর, ৯। মোঃ আল আমিন (২১), পিতা-মৃত সেলিম, সাং-দাসারা, থানা-পালং মডেল, জেলা-শরীয়তপুর, ১০। মোঃ সিদ্দিকুর রহমান টুটুল @ কালু (২৮), পিতা-মৃত নুরুল ইসলাম মোল্লা, সাং-বালিগাঁও, থানা-টংগীবাড়ী, জেলা-মুন্সিগঞ্জ, ১১। মোঃ রফিক (৩৬), পিতা-আব্দল হাকিম, সাং-শরীফপুর, থানা-জয়দেবপুর, জেলা-গাজীপুর, ১২। মোঃ জাকির (৩০), পিতা-মৃত মোহাম্মদ আলী, সাং-বাগাকান্দি, থানা-হোমনা, জেলা-কুমিল্লা, ১৩। মোঃ রুবেল আলম (২৬), পিতা-মৃত হাসান মিয়া, সাং-রাঙ্গুনিয়া লিচু বাগান, থানা-রাঙ্গুনিয়া, জেলা-চট্টগ্রাম, ১৪। মোঃ সজল (২৫), পিতা-মোঃ মাহাতাব, সাং-খায়েরহাট, থানা-মুলাদি, জেলা-বরিশাল, ১৫। মোঃ নুরা (২২), পিতা-মোঃ আনোয়ার হোসেন, সাং-পুরানবন্দর মোল্লাবাড়ী, কান্দাপাড়া, থানা-বন্দর, জেলা-নারায়নগঞ্জ, ১৬। মোঃ ইব্রাহীম খলিল (২৫), পিতা-মৃত শওকত হোসেন, সাং-আব্দুল্লাহপুর, থানা-রায়পুর, জেলা-নরসিংদী, ১৭। মোঃ সেলিম রেজা(২৮), পিতা-আব্দুল হাকিম, সাং-সানবাড়ী, থানা-ধর্মপাশা, জেলা-সুনামগঞ্জ, ১৮। মোঃ আজিম (২৪), পিতা-মোঃ মোতালেব, সাং-আটি বাজার, থানা-কেরানীগঞ্জ মডেল, জেলা-ঢাকা, ১৯। মোঃ মোজ্জাম্মেল হোসেন (২৬), পিতা-মৃত রফিকুল ইসলাম, সাং-মাইজবাড়ী, থানা-মুক্তাগাছা, জেলা-ময়মনসিংহ, ২০। মোঃ মানিক হোসেন (২৫), পিতা-মোঃ মকবুল হোসেন, সাং-গোপীবাগ, আর কে মিশন রোড, থানা-ওয়ারী, ডিএমপি, ঢাকা, ২১। মোঃ শামীম আলী (৩০), পিতা-মৃত অহেদ আলী বেপারী, সাং-ইলিশা বেপারী পাড়া, থানা-ফুলপুর, জেলা-ময়মনসিংহ, ২২। ওমর আলী @ মিলন (৪০), পিতা-মৃত মাওলা আলী, সাং-টোং বাড়ী, থানা-মুগদা, ডিএমপি, ঢাকা, ২৩। মোঃ রনি(৩৩), পিতা-আব্দুল শহীদ, সাং-নবাবপুর, থানা-হোমনা, জেলা-কুমিল্লা, ২৪। মোঃ রুবেল(৩২), পিতা-মোঃ আবুল কালাম, সাং-মাছিমপুর, থানা-তিতাস, জেলা-কুমিল্লা, ২৫। মোঃ জাহাঙ্গীর আলম(৩৮), পিতা-মৃত আরশাদ মিয়া, সাং-পারারবন, থানা-মেঘনা, জেলা-কুমিল্লাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকালে উক্ত আসামীদের নিকট হতে সুইচ গিয়ার, চাকু, ক্ষুর, এন্টিকাটার,  কাঁচি, বেøড, মোবাইল ফোন এবং নগদ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র জব্দ করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, যেকোন উৎসবকে কেন্দ্র করে এদের তৎপরতা বাড়ে। আসন্ন থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে উৎসবের আমেজ তৈরী হলে এ সংঘবদ্ধ চক্রটি কয়েক রাত যাবৎ ছিনতাইয়ের জন্য উঠেপড়ে লাগে। এছাড়াও থার্টি ফার্স্ট নাইটে নাশকতা তৈরীর মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ছিনতাই করারও পরিকল্পনা ছিল এই কুচক্রটির। সাধারণত লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন, রেষ্টুরেন্টের সামনে এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আশপাশের এলাকায় ছিনতাইকারী এই চক্রটির সদস্যরা ঘোরাফেরা করতে থাকে। এছাড়াও সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের অন্যান্য সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন অলি গলিতে উৎপেতে থাকে। সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে সর্বস্ব লুটে নেয়। সন্ধ্যা হতে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের প্রাণঘাতী আঘাত করতে দ্বিধা বোধ করেনা। খিলগাঁও মালিবাগ রেইল গেইট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালভার্ট রোড, নাসিরের টেক হাতিরঝিল, শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং, পল্টন মোড়, গোলাপ শাহর মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আব্দুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা হতে ভোর রাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি পরিলক্ষিত হয়।

ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা যেসকল ব্যক্তির কাছ থেকে ছিনতাই করবে তাদেরকে আগে থেকে অনুসরণ করতে থাকে এবং অনুসরণকৃত ব্যক্তির সাথে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ধরনের কথা বলে থাকে। একপর্যায়ে কথা বলতে বলতে উক্ত ব্যক্তিকে সুবিধামতো কোনো জায়গায় নিয়ে যায় এবং সেখানে ছিনতাইকারী চক্রের অন্য সদস্যরা উপস্থিত হয়। চক্রের একজন সদস্য উক্ত ব্যক্তির সঙ্গে বিতর্কতায় জড়ায় ও মারধর শুরু করে। লোকজন এগিয়ে আসলে বলে, নিজেদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির কারণে এ মারামারি। ততক্ষণে ছিনতাইয়ের কাজটি তাদের চক্রের কেউ একজন সেরে ফেলে। এছাড়াও তারা ছিনতাইয়ের কাজে বিভিন্ন অভিনব কৌশল অবলম্বন করে থাকে এবং ছিনতাইয়ের কাজে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে। যখন কোন রিকশা অথবা সিএনজি আরোহী যাত্রীদেরকে টার্গেট করে তারা অন্য একটি রিক্সা অথবা সিএনজি নিয়ে উক্ত ব্যক্তির পিছনে যেতে থাকে। ছিনতাইকারীদের সুবিধামত স্থানে পৌঁছে যাত্রীকে এবং চালককে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রিক্সা ও সিএনজি যাত্রীর সর্বস্ব লুটে নেয়।

ছিনতাইকারীরা তাদের ছিনতাইকৃত অর্থ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের নেশা করে এবং কেউ কেউ জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। উক্ত চক্রের সদস্যদের রাজধানীতে বসবাসের জন্য স্থায়ীভাবে কোন বাসস্থান নেই। তারা সকলেই রাজধানীর ভাসমান অবস্থায় বসবাস করে। উক্ত চক্রের সদস্যদের মধ্যে প্রায় সকলের বিরুদ্ধে মাদক ও ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বিভিন্ন অপরাধে উক্ত চক্রের সদস্যরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ধৃত হওয়ার পরে তারা জামিনে মুক্ত হয়ে পুনরায় একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।

ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের সাড়াঁশি অভিযান চলমান রাখা এবং এসকল ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় আনার ফলে পথচারীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসছে। রাজধানীবাসী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে রাজধানীতে আগত যাত্রীরা যাতে নিরাপদে দৈনন্দিন কাজকর্ম সম্পন্ন করে নির্বিঘেœ স্বস্তির সাথে বাড়ী ফিরে যেতে পারেন এলক্ষ্য নিয়ে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের বিরুদ্ধে র‌্যাবের সাড়াঁশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।  সংবাদ প্রকাশঃ ৩১১২২০২২ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ