বুড়িচং পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নে গরু চুরির হিড়িক;সালিশে সাব্যস্ত চোর রিপন

সিটিভি নিউজ।। আক্কাস আল মাহমুদ হৃদয়  বুড়িচং প্রতিনিধি।। কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়ন বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশ কিছু দিন ধরে গরু চুরির অভিযোগ উঠেছে। কণ্ঠনগর গ্রামের রিপনকে নিয়ে চুরির অভিযোগ এনে বিভিন্ন গ্রামবাসীর সাহেব সর্দার ঐক্য হয়ে দফায় দফায় সালিশি বৈঠক বসে।এতে অভিযুক্ত চুর রিপন সালিশ বৈঠকে উপস্থিত হয়নি এবং পলাতক রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,জেলার বুড়িচং উপজেলা পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের কণ্ঠনগর গ্রামের মধ্যমপাড়া সিরাজুল ইসলামের গোয়াল ঘর থেকে ২ গাভী ও ২ বাছুর গত ৪ অক্টোবর রাতে চুরি হয়ে যায়। এ বিষয়ে মোঃ সিরাজুল ইসলাম বুড়িচং থানাতে একই গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে রিপনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করা হয়। এই অভিযোগ পরিপ্রেক্ষিতে এসআই বিনোদ দস্তগীর বুড়িচং থানার গোল ঘরে উভয়কে নিয়ে একটি সালিশ বৈঠক বসে।উক্ত বৈঠকে অভিযুক্ত রিপন কিছু দিনের সময় চেয়ে চলে যায়। চলে যাওয়ার পর আর কোনো যোগাযোগ রাখে নাই এবং রিপন এখন পলাতক রয়েছে। চুরের বিচারের জন্য চার গ্রামের মানু্ষ ফুসলে উঠে এবং একটি গণস্বাক্ষর সহ করা হয়। গত ২৪ অক্টোবর দিনে গোসাই পুর মাদ্রাসার মাঠে একটি সালিশ বৈঠক বসা হয় উক্ত বৈঠকে অভিযুক্ত রিপন উপস্থিত হয়নি।এর কিছুদিন পর ৩১ অক্টোবর শনিবার বিকেলে গোসাইপুর মাঠে আবারও ৪ গ্রামের মানুষ ও সাহেব সর্দারা মিলে সালিশ বৈঠক বসে সেখানেও অভিযুক্ত রিপন অনুপস্থিত ছিলেন। উক্ত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পীরযাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জাহের, সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের,মোঃ ফরিদ উদ্দীন সর্দার,মোঃ সফিকুর রহমার ভূইয়া, মোঃ লিলু মিয়া বিএসসি টিচার,.মোঃ বিল্লাল হোসেন ঠিকাদার,মোঃ কবির হোসেন ঠিকাদার,মোঃ মিজানুর রহমান ভূইয়া,মোঃ মজিবুর রহমান পেশকার,মোঃ নোয়াব আলী সর্দার,মোঃ লিয়াকত আলী, মোঃ সফিকুল ইসলাম (এমপি বাড়ী)মোঃ নুরুল ইসলাম মাষ্টার,জহির মেম্বার,ইসমাইল সর্দার,জয়নাল আবেদীন সর্দার সহ প্রায় ৮ শ অধিক লোকজন। উক্ত সালিশ বৈঠকে চুর সাব্যস্ত হয় কণ্ঠনগর গ্রামের শাহীন মাস্টারের বাড়ীর মোঃ রিপন। উক্ত সালিশ বৈঠকের সর্দাররা বলেন, গরু চুরির অভিযুক্ত মোঃ রিপনের উপস্থিত না থাকায় কার্যকালাপ ও তার আচারণে এবং পূর্বের সকল কু-কর্মে প্রমাণিত হয় যে সে একজন চুর। আগামী শনিবার ৭ নভেম্বরের মধ্যে যদি রিপন অন্যায়ের শিকার না করে এবং সালিশ বৈঠকে উপস্থিত না হয় তাহলে তার সহযোগী এবং পরিবারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য। এ দিকে অসহায় সিরাজুল ইসলাম তার ৪ গরু না পেয়ে হতাশার মধ্য দিয়ে দিন যাচ্ছে।তাকে সবাই সঠিক বিচার করে দিবে কিন্তু দিন যতই যাচ্ছে ততই বিচার হালকা হয়ে উঠছে। তবে সিরাজুল ইসলামের মতো যাদের গরু চুরি হয়েছে তারা কি তাদের গরু বিচারের মধ্য দিয়ে ফিরে পাবে?সিরাজুল ইসলাম প্রতিনিধিকে বলেন, তার ৪ টি গরু ছিলো এক মাত্র সম্বল,মাদক ব্যবসায়ী ও গরু চুর রিপন আমার গরু নেওয়ার আগে আমার বাড়ির পাশে অনেকদিন দেখা গেছে এবং গরু চুরি হওয়ার পর তাকে আর দেখা যায়নি। সে গরু ফিরে দিবে কথা বলে কোনো ভাবে পালিয়ে যায়। আমি সকলের কাছে রিপনের বিচার চাই এবং আমার গরু চাই।পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নে গরু চুরির হিড়িক কথা শুনে অনুসন্ধানে নামে তালাশ বাংলা টিম,অনুসন্ধানে পাওয়া যায় রিপনের বিরুদ্ধে আরো কিছু তথ্য। গত ২/১০/২০২০ রাতে একই ইউনিয়নের শ্রীপুর উত্তর পাড়ার কাশেম মেম্বারের ভাই মোঃ হান্নানের ২টি গরু চুরি হয়েছে। ২২ অক্টোবর রাতে শ্রীপুর রাতে কাশেম মেম্বারের বাড়িতে ১১টি ঘর তালাবন্ধ করে রাখে। কিন্তু টের পাওয়ার কারণে কিছু নিতে পারে নাই।২৮ অক্টোবর রাতে কণ্ঠনগর দক্ষিণ পাড়া শাহবুদ্দিন বাড়ির ইউনুসের ২ টি গরু চুরি হয়।২৪ অক্টোবর রাতে বরিয়াচর রহীম হাজীর বাড়ীর ব্যবসায়ী সেলিম মিয়ার ২টি গরু চুরি হয়। এই ইউনিয়নের অটোচালক মিজানুর রহমান জানান,আমার বউয়ের কানের জিনিস নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে রিপন,মোঃ কাশেম জানান,আমার বিল্ডিং ঘরের জানালা ভেঙ্গে মোবাইল চুরি করে নিয়ে গেছে,চেনার কারণে চুরিকৃত মোবাইল ফেরত দিয়ে দেয় রিপন। প্রবাসী তাজুল ইসলামের ঘর থেকে স্বর্ণের চেইন চুরি করে রিপন।নেতা মোস্তফার দোকান থেকে মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। কণ্ঠনগর গ্রামের হুমায়ুন কবির জানান,রিপন একজন চুর, তার সাথে আরো সহযোগী চুর আছে। যুবলীগ নেতা কবির হোসেন জানান,চুরের বিচার চাই,তাকে অতি শিঘ্রই আইনের অধিনস্থে আনার উচিত।মোঃ শাহ্জালাল দোকানদার জানান,চুর রিপনের কারণে আমরা অতিষ্ঠ। সিরাজুল ইসলামের ভাই নূরুল ইসলাম জানান,সে একজন অরজিনিয়াল চুর, এসব চুরের কারণে আমরা সবাই অতিষ্ঠ।এছাড়া গ্রামের প্রায় শাতাধিক লোকজন জানান,রিপন একজন চুর। তার নামে অনেক অভিযোগ আছে,এনিয়ে অনেকের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এবং থানায় সহ অভিযোগ করা হয়েছে কিন্তু তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে নাই। এ বিষয়ে রিপনের পিতা ফিরোজ মিয়া জানান,আমার ছেলে রিপন আগে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলো কিন্তু এখন ব্যবসা করে না এবং গরু চুরির বিষটি মিথ্যা অভিযোগ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন এর বুড়িচং উপজেলার সভাপতি গাজী জহিরুল ইসলাম ( গোল্ডেন জহির) জানান, চুরি করা এক প্রকার মানবাধিকার লংঘন। আমি চাই প্রকৃত চুর এবং তার সহযোগীদের সুষ্ঠ বিচারের মাধ্যমে আইনের আওতাধীন আনা হোক। আমি এইসব চুরির ঘটনার প্রতি বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন (বিএইচআরসি) এর পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানাই।

এ বিষয়ে বুড়িচং থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাম্মেল হক পিপিএম জানান,আমি গরু চুরির বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি আইনগত ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে। তবে অন্য গরু চুরির বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগ আসে নাই।

সংবাদ প্রকাশঃ  ০২১১২০২০ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ