বিএনপির নেতার অভিযোগ নিয়ে মনোহরগঞ্জের সেই পরিবার বলছে ভিন্ন কথা

সিটিভি নিউজ।।   কুমিল্লা প্রতিনিধি।। জানান ===
শনিবার (২৬ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সমাবেশের সার্বিক বিষয় জানাতে শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লা নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি। এতে দলের পক্ষে কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
লিখিত বক্তব্যের একটি অংশে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ তুলে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গত ১৯ নভেম্বর কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের খিলা ইউনিয়নের বাতাবাড়িয়া গ্রামে গণসমাবেশ উপলক্ষে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের প্রস্তুতি সভায় হামলা চালিয়ে স্থানীয় ছাত্রদল নেতা লিটনের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে ছাত্রদল ও যুবদলের ৩ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।’ এ ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের দায়ি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা এসব অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে মনোহরঞ্জ উপজেলার ওই এলাকায়। খোদ লিটনের পরিবারের সদস্যরাই দাবি করেছেন, ওইদিন সেখানে কোন রাজনৈতিক সংগঠনের প্রস্তুতি সভাই ছিলো না। পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানে নিজেদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিলো। আর সেটিকেই রাজনৈতিক বিরোধ হিসেবে রূপ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের নেতারাও।
ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হলে শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় সাংবাদিকরা বিষয়টির সত্যতা জানতে লিটন নামের ওই ব্যক্তির বাড়িতে। তবে সে সময় বাড়িতে ছিলেন না লিটন। পরে লিটনের ছোট ভাই মোজাম্মেল হক ঘটনার বিস্তারিত জানান।
মোজাম্মেল হক বলেন, ওইদিন আমাদের বাড়িতে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠান ছিল। এখানে বিএনপির প্রস্তুতি সভার মিটিং কেন হতে যাবে? কুমিল্লায় সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতারা যেসব কথা বলেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। ওইদিন আমাদের বাড়িতে রাজনৈতিক কোন সহিংসতা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ওই পারিবারিক অনুষ্ঠানে পরিবারের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যরা উপস্থিত হলে তাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পত্তি ও বিভিন্ন বিষয়ে কথা ওঠে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে বাকবিত-ার ঘটনা ঘটে। পরে আশ-পাশের লোকজন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এসে ঘটনাটি সমঝোতা করে দেন।
লিটনের ভাবি সালমা বেগমও একই কথা বলেছেন। সালমার ভাষ্য, সেদিন মোট রাজনৈতিক মিটিং ছিলো না। পারিবারিক বিরোধকে রাজনৈতিক বিরোধে রূপ দেওয়ায় এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) মোস্তফা কামাল বলেন, ওইদিন তাদের বাড়িতে নিজেদের মধ্যে পারিবারিক বিরোধে বাকবিত-া ও হাতাহাতির ঘটনার খবর শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। পরে ঘটনার বিস্তারিত জেনে সকলকে শান্ত করে চলে আসি। সেখানে কোন রাজনৈতিক মিটিং ছিল না। এটি ছিল তাদের পারিবারিক অনুষ্ঠান।
খিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল-আমিন ভূঁইয়া বলেন, লিটনের বাড়িতে সেদিনের ঘটনাটি তাদের পারিবারিক বিষয়। পরিবার বড় হলে সম্পত্তিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এমন ঝামেলা থাকতেই পারে। এ ঘটনাকে রাজনৈতিক সহিংসতায় রূপ দেওয়ায় আমি অবাক হয়েছি। বিষয়টির তদন্ত হওয়া দরকার। আমাদের নেতা এলজিআরডি মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম মহোদয়ের উন্নয়নকে ঘোলা করার লক্ষ্যে বিএনপি নেতারা কুমিল্লা এমন মিথ্যাচার করেছে। খিলা ইউনিয়নে কোথায় রাজনৈতিক কোন হানাহানি নেই। আমরা সকলে সম্প্রীতি বজায় রেখে সহাবস্থানে বসবাস করছি। একদল লোক এলাকায় অশান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে এসব ঘটনা রটিয়েছে। এ ঘটনার নিন্দা জানাই।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.জাকির হোসেন বলেন, পারিবারিক একটি ঘটনাকে রাজনৈতিক বিরোধে রূপ দিয়ে ড.মোশাররফ সাহেবের মতো নেতা যেভাবে মিথ্যাচার করেছেন, এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে। বিএনপি সব সময়ে এভাবে মিথ্যাচার করে এলাকায় অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার আবদুর কাইয়ুম চৌধুরীও এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এটা তাদের পারিবারিক ঝামেলা। এখানে আওয়ামী লীগের কোন সম্পৃক্ততা নেই। বিএনপির এমন মিথ্যাচার দু:খজনক। পুরো মনোহরগঞ্জ জুড়ে এলজিআরডি মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম মহোদয় যে উন্নয়ন করেছেন এবং সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করেছেন, এতে সর্বস্তরের মানুষ বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এতে তারা দিশেহারা হয়ে মিথ্যাচারে নেমেছেন।

সংবাদ প্রকাশঃ  ২৬-১১-২০২২ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন=  

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ