ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রয়োজন সচেতনতা  == মোঃ আবদুল আউয়াল সরকার:

সিটিভি নিউজ ।।     ডেঙ্গু জ্বর (সমার্থক ভিন্ন বানান ডেঙ্গি) একটি এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস জনিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ। এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণের তিন থেকে পনেরো দিনের মধ্যে সচরাচর ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গগুলো দেখা দেয়। উপসর্গগুলির মাঝে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেশিতে ও গাঁটে ব্যথা এবং গাত্রচর্মে ফুসকুড়ি।
ট্যাংক কিংবা মাটির গর্তে পাঁচদিনের বেশি কোনো অবস্থাতেই পানি জমিয়ে রাখা যাবে না। পরিস্কার ও স্থবির পানিতে ডেঙ্গুর জীবানু বেশি জম্মায়।
৭. অব্যবহৃত গাড়ির টায়ারে যাতে পানি জমতে না পারে সেদিকে নজর দিতে হবে।
৮. ফ্রিজের নিচে, এসির নিচে, ফুলের টবে ও মাটির পাত্রে সামান্য পানি জমে থাকলে তা-ও নিষ্কাশন করুন।
চিকিৎসা
সাধারণ ভাইরাস জ্বরের মতোই এর চিকিৎসা। এজন্য আলাদা কোনো চিকিৎসা নেই। এমনকি চিকিৎসা না করলেও এমনিতেই ডেঙ্গু জ্বর ভাল হয়ে যায়। ডেঙ্গু জ্বর হলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে এরোগে মৃত্যু ঝুঁকি নেই। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, সুস্থ থাকুন।
বিশেষ সতর্কতা
ডেঙ্গু জ্বর আক্রান্ত রোগীদের সাধারণ জ্বরের মতো অ্যাসপিরিন অথবা অন্য কোনো জ্বরের বা ব্যথার ওষুধ দেওয়া যাবে না। কোনো অ্যান্টিবায়োটিকও নয়, কারণ এ সময় অ্যান্টিবায়োটিক কোনো সাহায্য করে না। শুধুমাত্র প্যারাসিটামল রোগীর জ্বর কমাতে সাহায্য করে। এসময় রোগীকে প্রচুর তরল খাবার দিতে হবে। দৈনন্দিন খাবারের সাথে পানি, খাওয়ার স্যালাইন, স্যুপ, দুধ, তাজা ফলের রস ইত্যাদি রোগীর জন্য সহায়ক। মায়ের দুধ পানকারী শিশুদের মায়ের দুধ খাওয়ানো যাবে। এছাড়া গর্ভবতী মায়েদের ডেঙ্গু হলে অন্যান্য রোগীর মতোই যতœ নিতে হবে।
রোগী কেন মারা যায়
অত্যধিক তাপমাত্রার জ্বরের জন্য দেহে পানিশূন্যতা দেখা দেয় দ্রুত। কোষের অভ্যন্তরীণ তরল কমে যায়, আশপাশের রক্তনালিতে চাপ পড়ে, শুরু হয় রক্তক্ষরণ। ইন্টারনাল ব্লিডিং। বেশি মাত্রায় রক্তক্ষরণ চলতে থাকলে অণুচক্রিকা বা প্লেটলেট সংখ্যায় কমে যায়। প্লেটলেট কমে গেলে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে না, ফলে ধীরে ধীরে রক্তক্ষরণ আরও বাড়তে থাকে। দেখা দেয় শক সিনড্রম। শরীরের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। যথাযথ চিকিৎসা-ব্যবস্থাপনার অভাবে রুগী দ্রুত অবনতি ঘটে। নেমে আসে অবাঞ্ছিত মৃত্যুর অন্ধকার।
রক্তের কোন পরীক্ষা জরুরি
রোগের লক্ষণ দেখে চিকিৎসকের পরামর্শমতো রক্তে বিশেষ অ্যান্টিবডির উপস্থিতি নির্ণয়ের মাধ্যমে সাধারণত ডেঙ্গু শনাক্ত করা হয়। তবে এটি কোনো নিশ্চিত পরীক্ষা নয়। সাধারণ জ্বর হলেই এটি করার দরকার নেই, কারণ এটি ব্যয়বহুল পরীক্ষা। সাধারণ জ্বর যদি উচ্চ তাপমাত্রায় (১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি) হয়, তাহলে প্রথমেই রক্তের একটি রুটিন পরীক্ষা করে অণুচক্রিকা বা প্লেটলেট কাউন্ট দেখে নেওয়াটা জরুরি। যদি প্লেটলেট বা অণুচক্রিকা সংখ্যায় এক লাখের কম হয়, তাহলে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।
সচেতনতা ও সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণে ডেঙ্গুকে প্রতিরোধ করা খুব কঠিন কিছু নয় মোটেও।
এ বছর ডেঙ্গু যেনো একপ্রকার নীরবে মহামারী আকার ধারণ করেছে। এ বিষয়ে সকলকে সচেতন হতে হবে। সকলের সচেতনতাই এখন একমাত্র ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে পারে।
লেখক: চিকিৎসা প্রযুক্তিবিদ,শিক্ষক ও গনমাধ্যমকর্মী।সংবাদ প্রকাশঃ ১০০৭২০২৩ ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like>  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ