এইচএসসিতে জিপিএ-৫ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করা ইচ্ছুক প্রতিবন্ধী প্রীতিলতার

সিটিভি নিউজ।।    মানিক ঘোষ নিজস্ব প্রতিনিধি===========
ইচ্ছে শক্তি আর আত্মবিশ্বাস কে পুজি করে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে গিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলার শহীদ নূরালী কলেজ থেকে ২০২৩ সালে মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার ইর্ষনীয় সাফল্যের কারণে মাতা, শিক্ষক,সংগঠন সহপাঠী সহ এলাকার সবাই খুশি।প্রীতিলতা ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ৪ নং নিয়ামতপুর ইউনিয়নের মোস্তবাপুর গ্রামের মৃত প্রশান্ত সাহার মেয়ে।
প্রীতি লতা জানায় তারা দুই বোন, বড় বোন প্রিয়াংকা সাহা বিয়ে হয়ে গেছে। নিজেদের কোন জমিজিরাত নেই এমন কী বাড়ি ভিটা টুকুও নেই।তার দাদুর বাড়ীর পাশে অগ্নি সাহার এক টুকরা জমিতে কোন রকমে টিনের ছাবড়া করে মা মেয়ে বসবাস করে। তাদের এই কষ্টের ভিতরে সনাতন সেবক সংসদ গ্রুপ পড়া লেখার সহযোগিতা করেছেন।সনাতন সেবক সংসদ গ্রুপ আমার পিতৃতুল্য তাদের সহযোগিতার জন্য এইচএস সি পরীক্ষা জিপিএ-৫ পেয়েছি।তাদের সহযোগিতা থাকলে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া লেখা করে ভাল স্থানে যেতে পারব।
প্রীতিলতার বাবা প্রায়াত প্রশান্ত সাহার বাড়ী ছিল যশোর বারিনগরে।তার বাবা মা পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বাব মারা যান।তার মা শ্বশুর বাড়ি ফিরে আসলেও তাদের বসবাসের জায়গা থাকলে আর ফিরে পাননি। দাদুর বাড়ী কালীগঞ্জ মোস্তবাপুর গ্রামে মায়ের সাথে ফিরে আসে।
প্রীতি লতাকে বাড়ীর পাশে ফারাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে। তার পর মোস্তবাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে।তার পড়ার আগ্রহ দেখে শিক্ষক সহ সকলে তার সহযোগিতা করে এস এস সি পরীক্ষায়-৪.৮৬ পেয়ে শহীদ নূর আলী কলেজে ভর্তি হয়। বাড়ীর থেকে যাতাযাত সহ তার পড়া লেখা করার জন্য অর্থের সমস্যা হয়ে পড়ে। দৈনিক আমাদের সময় , দৈনিক পূর্বাঞ্চল পত্রিকার প্রতিনিধি ও সনাতন সেবক সংসদ গ্রুপ কালীগঞ্জ এডমিন মানিক ঘোষ জানতে পারে।সাথে সাথে সনাতন সেবক সংসদ গ্রুপ কালীগঞ্জের উপদেষ্টাদের নিয়ে প্রীতিলতার বাড়ীতে যায়ে তার পড়া লেখা সহ সকল দ্বায়িত্ব নেন।অসহায় প্রীতি লতাকে সব সময় খোজখবর নিয়েছে।সে এইচ এস সি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।
সনাতন সেবক সংসদ গ্রুপের উপদেষ্টা ও যশোর খাজুরা সরকারি শহীদ সিরাজ উদ্দিন হোসেন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বিকাশ চন্দ্র রায় জানান প্রতিবন্ধী প্রীতি লতার কথা শুনে খারাপ লাগায় আমরা সকলে তার পাশে থেকে পড়া লেখার খরচ বহন করেছি।আমি তাকে নিজে পড়ায়েছি।তার ইচ্ছা শক্তি অনেক,আশা করি সে ভাল স্থানে পৌছাতে পারবে। আমাদের সংগঠন তার পাশে সব সময় থাকবে।
দৈনিক আমাদের সময় ,দৈনিক পূর্বাঞ্চল পত্রিকার প্রতিনিধি ও সনাতন সেবক সংসদ গ্রুপ কালীগঞ্জ এডমিন মানিক ঘোষ জানান
অসহায় পিতা হারা প্রতিবন্ধী প্রীতিলতার এইচ এস সি রেজাল্ট ভাল হওয়ার সংবাদ শুনে আমাদের গ্রুপের সকলে খুশি।আমরা চাই সে পড়া লেখা করে ভাল স্থানে পৌছাতে পারে ও মানুষের মত মানুষ হোক।আমরা তার পাশে আছি থাকবো।
মা সুজাতা সাহা জানায় জন্মের পর থেকে পায়ের শক্তি কমে যায় প্রীতি লতার । দুটি পা চিকন হয়ে যায় এবং হাঁটাচলার শক্তি হারিয়ে ফেলে। বড় হবার সাথে সাথে তার পা দুটি একেবারেই অকেজো হয়ে পড়েছে। এখন সে আর হাটা চলা তেমন করতে পারেনা। আমি একটা কারখানায় কাজ করি তা দিয়ে কোন রকম দিন আনি দিন খায়।পরে এক হৃদয়বান সংগঠন সনাতন সেবক সংসদ গ্রুপ কালীগঞ্জ আমার মেয়ের পড়া লেখা সকল খরচ বহন করে।তাদের সহযোগিতায় মনোবল ও সাহস দিয়ে তার এইচ এস সি পরীক্ষার রিজাল্ট ভাল করে। তিনি তার মেয়ের স্বপ্ন পুরনের জন্য দোয়া চেয়েছেন।
শহীদ নূর আলী কলেজের অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু জানান, হুইল চেয়াওে করে লেখা পড়া- এভাবেই চলছে প্রীতিলতার জীবন। বহু প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এইচএসসিতে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ অর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। অধ্যক্ষ আরো বলেন, সে মেধাবী শিক্ষার্থী।তার পাশে সনাতন সেবক সংসদ গ্রুপ কালীগঞ্জ সংগঠন সব সময় খোজ নিয়েছে।তার পড়ালেখার সকল খরচ এই সংগঠন দিয়ে এসেছে। কলেজের শিক্ষকরা আন্তরিকতার সঙ্গে তাকে পাঠদানসহ সব সময় খোঁজখবর রাখতেন। প্রবল ইচ্ছে শক্তির কারণে পড়ালেখা করে সে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশরাত জাহান প্রতিবেদককে জানান ,প্রীতিলতা সমাজের জন্য অনুকরনীয় ।সে নানা প্রতিবন্ধকতা সত্বেও নিজের পড়া লেখা চালিয়ে যাচ্ছে ,এ কারনে আমি তাকে সাধুবাদ জানাই ।তার প্রতি আমাদের দৃষ্টি থাকবে ।

সংবাদ প্রকাশঃ ০২১২২০২৩ ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like>  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ