অনুমতি ছাড়াই বানিজ্যমেলা; গুড়িয়ে দিল প্রশাসন

জেলা প্রশাসক বলছেন- মেলার কোন অনুমোদন দেইনি। মেলার আয়োজক যুবলীগ নেতা বলছেন- জেলা প্রশাসকের অনুমোদনসহ নিয়ম মেনেই মেলার আয়োজন করেছি।

সিটিভি নিউজ।।  এবিএম আতিকুর রহমান বাশার,     দেবীদ্বার(কুমিল্লা) প্রতিনিধি// জানান ==
মেলা উদ্ভোধনের একদিন আগেই মেলার সমস্ত আয়োজন গুড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন। অনুমতি ছাড়াই বানিজ্যমেলার আয়োজন প্রায় সম্পন্ন করে ফেলেছেন আয়োজকরা। আগামীকাল ৩১ মে বানিজ্য মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা ছিল।
এ বিষয়ে ্আয়োজক উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবলীগ উপজেলা সভাপতি আবুল কাসেম ওমানী বললেন জেলা প্রশাসকের অনুমোদন নিয়েই মেলার আয়োজন করেছি। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন আমি কাউকে কোন মেলার অনুমোদন দেইনি।
মঙ্গবার সকাল ১১ টায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন সুলতানার নেতৃত্বে অনুমোদন বিহীন অবৈধ বানিজ্যমেলার সমস্ত আয়োজন গুড়িয়ে দিয়েছেন। এসময় মেলা উচ্ছেদ অভিযানে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) খাদেমুল বাহার আবেদ এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও বিপুল সংখ্যক গ্রাম পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
স্থানীয় ও প্রশাসনের সূত্রে জানাযায়, বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের তত্বাবধানে আয়োজিত এ মেলার কোন অনুমোদন না নিয়েই দেবীদ্বার রেয়াজ উদ্দিন সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এবিএম গোলাম মোস্তফা ষ্ট্যাডিয়ামে মেলার আয়োজকরা এ মেলার আয়োজন করেন। মাঠের চতুপার্শে¦ প্রায় অর্ধশতাধিক দোকান, সু-বিশাল টাওয়ার, বিনোদনের জন্য বিভিন্ন রাইডস প্রতিষ্ঠা এবং মাঠের মধ্যভাগে গর্ত করে ফোয়ারা নির্মাণসহ যাবতীয় কার্যাদী সম্পন্ন হলেও ৩০ মে সকাল পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের কোন অনুমোদন না থাকায় প্রশাসনের পক্ষথেকে এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয় বলে জানান, ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন সুলতানা।
স্থানীয়রা জানান, বানিজ্য মেলা, তাঁত মেলা নামে পূর্বেও এ মাঠে আয়োজন করা হয়েছে। যাতে বানিজ্য বা তাঁত মেলার কোন ঐতিহ্যই লক্ষ্য না করা গেলেও, বিভিন্ন কোম্পানীর রিজেক্ট ও মেয়াদ উত্তির্ণ, নি¤œমানের মালামাল সরবরাহ করে ভোক্তা ও ক্রেতাদের সাথে প্রতারনা করা হয়। প্রতিবারই ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এ মেলার আয়োজনে স্থানীয় ব্যাবসায়িরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মূখীন হয়। খেলা ধূলা করা মাঠের অভাবে বিপাকে পড়তে হয় ক্রীড়ামোদীদের।
একাধিক স্কুল ছাত্র জানান, দেবীদ্বারের খেলা ধূলার একমাত্র মাঠটি বানিজ্য ও তাঁত মেলা বসানো, প্রভাবশালীদের গাড়ি পার্কিং, মাঠে ইট, বালু, পাথর রাখা এবং কোরবানী ঈদের হাট বসানোর কারনে মাঠটি খেলার অনুপযোগী ও পরিত্যাক্ত হয়ে থাকে বছরের অধিকাংশ সময়। পাথরের কনা, খানাখন্দের কারনে মাঠে নামতে পারেনা খেলোয়াররা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ি জানান, মেলার নামে জুয়ার আসর থাকে জমজমাট, মেয়াদ উত্তির্ণ ও নি¤œমানের সামগ্রী বিভিন্ন অফারের মাধ্যমে ঠকানো হচ্ছে ক্রেতাদের। স্থানীয় ব্যবসায়িরা সারা বছর কোনরকমে টিকে থেকে বছরের দুই ঈদ ও একটি পূঁজার অপেক্ষায় থাকেন। কিছু সুুবিধাভোগী তাদের স্বার্থে আমাদের রিজিকের উপর আঘাত হানে। বাজারের দেখভালে বাজার কমিটিও এ সময় ব্যবসায়িদের পক্ষে না থেকে মেলার আয়োজকদের সাথে তাল মিলিয়ে চলেন।
দেবীদ্বার গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, প্রায় ১৫/২০ দিন ধরে মেলার কার্যক্রম চলছে। কোন ধরনের অনুমতি ছাড়া থানার নাকের ডগায় বিভিন্ন স্থাপনা নির্মানে মেলার সমস্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে ফেলল অথচ থানা পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনধরনের বাঁধা কিংবা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলনা, এমন নিরব ভূমিকায় প্রশাসনও প্রশ্নবিদ্ধ।
এ ব্যপারে দেবীদ্বার রেয়াজ উদ্দিন সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সবুর আহমেদ বলেন, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাসেম ওমানী স্কুল মাঠ ব্যবহারের আবেদন সম্বলিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সুপারিশকৃত একটি চিটি নিয়ে আসেন। আমিও ইউএনও সাহেবের সুপারিশে পাশে অনুমোদন দিয়েছি। মাঠ কেন ব্যবহার করবে সে কারনটা না জেনেই অনুমোদনের বিষয় জানতে চাইলে তিনি আর কোন জবাব দেননি।
উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাসেম ওমানী বলেন, আমি জেলা প্রশাসকের অনুমোদনসহ সব নিয়ম মেনেই মেলার আয়োজন করেছি। শুধু মাত্র শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য। প্রতিহিংসায় প্রতিপক্ষ মেলার বিরোধীতা করছে।
দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি তদন্ত) খাদেমুল বাহার আবেদ জানান, আমরা একাধিকবার মেলা বন্ধ রাখার জন্য আয়োজকদের নিষেধ করেছি। নিষেধ অমান্য করে মেলার ষ্টল ও রাইডস নির্মাণ করে যাওয়ায়, ব্যাবস্থা নিতে লিখিতভাবে পুলিশ সুপারের বরাবর আবেদন করেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা জানান, আমি কোন বানিজ্য মেলা বা তাঁত মেলা আয়োজনের কোন চিঠি পাইনি, কারা এ মেলার আয়োজন করছে তাও জানিনা। মেলার বিষয়ে আমি কোন অনুমোদন দেইনি। মেলার অনুমোদন দেয়ার এখতিয়ার জেলা প্রশাসনের।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, জেলা প্রশাসকসহ কারোরই কোন অনুমোদন ছাড়া মেলা বৈধ না। তাছাড়া এ মেলায় গুটিকয়েক লোকের অর্থ উপর্জন ছাড়া সামগ্রীকভাবে মানুষের কল্যাণে এ মেলা নয়, এখন বর্ষার সিজন, পরীক্ষা চলছে, সামনে ঈদ এসময় এ মেলা কোনভাবেই কাম্য নয়, তাই ২৮ মে উপজেলা মাসিক আইনশৃংখলা সভা ও সমন্বয় কমিটির সভায় রেজুলেশন করে মেলার কার্যক্রমের উপ নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম ‘কালের কন্ঠ’কে জানান, বানিজ্য মেলাই নয়, কোন মেলার অনুমোদন আমি দেইনি।

সংবাদ প্রকাশঃ ৩০০৫২০২৩ ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like>  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ