মোগলটুলীতে ময়দায় ও বিষাক্ত কেমিক্যালে প্রসাধণী তৈরি কারখানা সিলগালা, মালিক আটক

সিটিভি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

সিটিভি নিউজ।।   বিষাক্ত কেমিক্যাল, ময়দা দিয়ে তৈরি দেশী ও বিদেশী প্রসাধনী কোম্পানীর নাম ব্যবহার করে নকল কসমেটিক্স প্রসাধনী তৈরির কারাখানায় অভিযান করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
সোমবার সকালে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নকল ও অনুমোদনহীর প্রসাধনী কারখানায় অভিযান করে কারখানাটি সীলগালা করে দেয় ও এর মালিক মোঃ আবু সুফিয়ানকে আটক করে ৬ মাসের জেল ও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। নকল কারখানার প্রসাধনী তৈরির সামগ্রী নষ্ট করে কারখানাটি সীলগালা করা হয়।
বাজারে বহুল প্রচলিত কুমারিকা তেল এই কারখানায় তৈরি হয় কণ্যারিকা নামে। মুখে ব্যবহার করার ফেয়ার এ্যান্ড লাভলী হয়ে যায় ফেসিয়াল লাভলী। সুগন্ধি ফগ হয়ে যায় ফগস। বিএসটিআই এর অনুমোদনহীন নকল ও বিষাক্ত ক্যামিকেল দিয়ে তৈরী করা হতো এসব প্রসাধনী। বিক্রির জন্য খুবই চাকচিক্যভাবে মোড়ক তৈরী করা হয়। মোড়কে নাম লিখা হয় সুক্ষ্মভাবে। খুব মনোযোগ দিয়ে না দেখলে বুঝার উপায় নেই প্রসাধনীগুলো নকল। গত দু’বছরের অধিক সময় ধরে কুমিল্লা মোগলটুলি এলাকার উত্তর গায়চরের সরদার বাড়ি থেকে বাজারজাত করা হয় এসব প্রসাধনী।
সোমবার ২৪ আগস্ট সাড়ে ১১ টায় অভিযোগ পেয়ে কারখানাটিতে ভোক্তা অধিদপ্তর ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসন যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। কারখানাটিকে সিলগালা করা হয়। ভোক্তা অধিকার আইনে কারখানার মালিককে ৬ মাসের জেল ও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
কুমিল্লা ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ আছাদুল ইসলাম বলেন, আমরা গোপন তথ্যর ভিত্তিতে জানতে পারি কুমিল্লা মোগলটুলি হাইস্কুলের পেছনের সরদার বাড়ীতে নকল পণ্যর কারখানা রয়েছে। এখানে এসে দেখি দু’টি কক্ষে তৈরী হচ্ছে প্রসাধনী। তিনজন মহিলা তৈরীকৃত প্রসাধনী মোড়কজাত করছেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরী হচ্ছে প্রসাধনী। কারখানায় কোন ল্যাব নেই। প্লাস্টিকের ড্রামে রাখা আটা-ময়দা। পাশে খোলা ড্রামে তেল ও ক্যামিকেল। ড্রামের আদা-ময়দা, তেল ও ক্যামিকেল মিশ্রণ করার একটি যন্ত্র। এগুলো ব্যবহার করেই তৈরী করা হতো প্রসাধনীগুলো। ৫ টি দেশী বিদেশী প্রসাধনীর ২৫ টি ক্যাটাগরির নকল পন্য তৈরী করতেন আবু সুফিয়ান। তিনি নিজেই মালিক, নিজেই টেকনিশিয়ান।
ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আছাদুল ইসলাম আরো জানান, অননুমোদিত তৈরী করা এসব প্রসাধনী স্বাস্থ্যর জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর।
নকল পন্যর কারখানার মালিক মোঃ আবু সুফিয়ানের বাড়ী চান্দিনার নবাবপুর এলাকায়। মোগলটুলি এলাকায় তিন কক্ষের ভাড়া বাসায় এসব পন্য তৈরী করেন। আবু সুফিয়ান জানান, ঢাকা থেকে ক্যামিকেল ও অন্যান্য অনুষঙ্গ এনে তিনি এসব প্রসাধনী তৈরী করতেন। তিনি নিজেই কারখানার মালিক। নিজেই ক্যামিস্ট। পন্য বাজারজাত করতেনও নিজেই। তার তৈরী প্রসাধনীর জন্য তিনি নিজেই কম্পিউটার দোকান থেকে বারকোড বানিয়ে এনেছেন। প্রসাধনী তৈরী হয়ে গেলেই প্রসাধনীর মোড়কে বসিয়ে দিতেন বারকোড। কারখানায় প্রসাধনী বোতল ও মোড়কীকরণ করতেন তিনজন নারী।
বিএসটিআইয়ের অনুমোদণ আছে কি না জানতে চাইলে আবু সুফিয়ান জানান, তিনি ট্রেড মার্কের জন্য আবেদন করেছেন। ব্যবসা পরিচালনার জন্য আর কোন অনুমোদন পত্র তার নেই।
ঘন্টাব্যাপী অভিযান শেষে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সাঈদ জানান, কারখানার মালিকের কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রসাধনী তৈরী করতেন। নেই কোন ল্যাব। নেই কোন কেমিষ্ট। বিভিন্ন দেশী বিদেশী প্রসাধনীর আদলে নকল প্রসাধনী তৈরী করতেন। আর এমনসব অপরাধের কারনে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে কারখানার মালিক আবু সুফিয়ানকে ছয়মাসের জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করি। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সাঈদ আরো জানান, জনস্বার্থে এমন অভিযান অব্যহত থাকবে।

সংবাদ প্রকাশঃ  ২৪২০২০ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=

Print Friendly, PDF & Email