চৌদ্দগ্রামে গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য বজলু

চৌদ্দগ্রামে আপত্তিকর অবস্থায় প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে যুবদল নেতা আটক, বর্বরতা চালিয়ে বিয়ে পড়ালেন স্থানীয় যুবলীগ নেতা
ভিডিও ভাইরাল, গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য বজলু
সিটিভি নিউজ।। মনোয়ার হোসেন,সংবাদদাতা জানান =কুমিল্লা: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে অনৈতিক সম্পর্কের (পরকীয়া) অভিযোগে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে প্রেমিক সহ আটকের পর হাত-পা বেঁধে বজলুর রহমান নামের স্থানীয় এক ইউপি সদস্য কর্তৃক ব্যাপক মারধরের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে মারধরের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হতে থাকে। চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনা ঘটেছে উপজেলার ৪নং শ্রীপুর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামে। মারধরের শিকার হওয়া গৃহবধূ ওই গ্রামের কুয়েত প্রবাসী রতন মিয়ার স্ত্রী। আটককৃত পরকীয়া প্রেমিক বিল্লাল হোসেন একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি ও পার্শ্ববর্তী তারাপুষ্কুরণী গ্রামের বাসিন্দা। সামাজিক শালিসের পরে তাদেরকে বিয়ে পরিয়ে দেওয়া হয়। আটককৃত বিল্লাল চার কন্যা সন্তানের জনক। ইতিমধ্যে তার দুটি মেয়েকে বিয়েও দিয়েছে সে। পেশায় সে এলাকার ডিস ব্যবসায়ী ও চা দোকানদার। ডিস লাইনের কার্যক্রমের সুবাধেই ওই নারীর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। অপরদিকে আটক নারীও দুই পুত্র সন্তানের জননী।
স্থানীয় সূত্র এবং ভাইরাল ভিডিও থেকে জানা গেছে, প্রবাসী রতনের স্ত্রীর সাথে বিল্লাল মিয়ার অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে তাদেরকে গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে আটক করে স্থানীয়রা। বিষয়টি নিয়ে গোপালনগর গ্রামের বজলু মেম্বারের নেতৃত্বে একটি শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ২ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, তাদেরকে আটকের পর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বজলু মেম্বার ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করছে। এ সময় ওই নারী বাঁচার আকুতি জানিয়ে বিলাপ করছিলো। তার পাশেই বসে ছিলো পরকীয়া করতে এসে আটক হওয়া স্থানীয় যুবদল নেতা বিল্লাল হোসেন। ইউপি সদস্য কর্তৃক আইন হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দু’টি সংসার তছনছ হওয়ার নেপথ্যের কারিগর বজলু মেম্বারের বিচারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকালে সরেজমিনে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা গেছে, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে। অভিযুক্ত মেম্বার পলাতক রয়েছে। সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে আটকের বিষয়ে এলাকায় অভিযান অব্যাহত রেখেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধরকারী অভিযুক্ত ৪নং শ্রীপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. বজলুর রহমান শ্রীপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন রুবেলের মামা সে। মামা-ভাগিনা মিলে তখন এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে এই বজলু মেম্বারের দাপটে কেউই এলাকায় শান্তিতে ছিলনা। এলাকার সকল মারামারি-হানাহানির মূলহোতা এ মেম্বারের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারী থেকে শুরু করে অনিয়ম-দুর্নীতির নানান অভিযোগ রয়েছে। ২০১৯ সালের মে মাসে এক নারী সহ অপ্রীতিকর অবস্থায় চৌদ্দগ্রাম বাজারস্থ আছুশাহ্ ফকির রোডের ‘বেতিয়ারা হাউজ’ নামক বাড়ি থেকে আটক করে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ। ইউনিয়ন পরিষদের সেবা নিতে আসলে কৌশলে ওই নারীকে চৌদ্দগ্রাম বাজারে এনে ওই বাড়িতে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে বজলু মেম্বার। স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আওয়ামী লীগ দলীয় প্রথম সারির কয়েকজন নেতার বিশেষ সুপারিশে নামমাত্র একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। অল্প কিছুদিন পর জামিন পেয়েও যায় সে।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার মারধরের শিকার হওয়া ওই নারী বজলু মেম্বারে ভাতিজার স্ত্রী। ওই নারীর স্বামীর অনুপস্থিতিতে দীর্ঘদিন যাবৎ তাকে ভোগ করার পায়তারা করে আসছে এই বজলু মেম্বার। ভাগে আনতে না পারার বেদনা থেকে বজলু মেম্বারের নেতৃত্বে স্থানীয়রা যুবদল নেতা বিল্লাল হোসেনের সাথে অপ্রীতিকর অবস্থায় আটক করে তাকে। পরদিন তার নেতৃত্বেই একটি শালিস বিচার হয়। বিচারে অভিযুক্ত নারীকে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে বজলু মেম্বার। পরে উভয়কে বিবাহ পরিয়ে দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ দলীয় সরকার পালিয়ে যাওয়ার পরও বজলু মেম্বারের খুঁটির জোর কোথায়? বিষয়টি নিয়ে জনমনে নানান প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। মারধরের এ ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এই ঘটনার পর অভিযুক্ত ইউপি সদস্য বজলুর রহমান পলাতক রয়েছে। তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কলটি না ধরায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবারের। তবে মঙ্গলবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনা জানতে পেরেছি। এঘটনায় কেউ অভিযোগ না দিলেও অভিযুক্ত ইউপি সদস্যকে আটক করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। সংবাদ প্রকাশঃ ২২-১০-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=