কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে প্রাচীন সভ্যতা সংস্কৃতির লীলাভূমি যোগীর ঘোপা

সিটিভি নিউজ।। মোহাম্মদ আককাস আলী :নওগা জেলা সংবাদদাতা জানান ====কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে প্রাচীন সভ্যতা সংস্কৃতির লীলাভূমি যোগীর ঘোপা। নওগাঁ জেলার বরেন্দ্র জনপদের প্রাণকেন্দ্র ধামইরহাট উপজেলার দক্ষিণ পূর্ব সীমান্তবর্তী এবং পত্মীতলা উপজেলার পূর্ব-উত্তর প্রান্তে আমাইড় ইউনিয়নের চকভবানী মৌজায় প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শনটি অবস্থিত। বাঙলা সাহিত্যের আদিরূপ চর্যাপদ রচনা ও আধ্যাত্মিক বিপবের সূতিকাগার এবং সেন রাজাদের ব্রাহ্মণ্যবাদী নির্যাতন নিপীড়ন থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে নাথ যোগীরা সাম্যবাদী ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার অনুঘটক হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। নাথ সন্ন্যাসীদের আমন্ত্রণেই বখতিয়ার খিলজি বাংলা বিজয়ে উৎসাহিত হয়েছিলেন।
এককালের প্রমত্তা আত্রাই নদীর আদি খাত মতান্তরে যমুনা নদীর ভাটির অংশ বর্তমানে শীর্ণকায় মৃতপ্রায় ঘুকসী নদীর পশ্চিম দিকে ধামইরহাট উপজেলার সীমানা দিয়ে প্রবাহিত তিনটি উপনদীর বর্তমানে সরু খালে রূপান্তরিত জলরাশি বুড়িদহ নামক গভীর খাদের পতিত হয়েছে। বুড়িদহের তীরে গড়ে উঠা চর বা টিলা সাদৃশ্য উচ্চ স্থানে প্রতিষ্ঠিত অতীত ঐতিহ্যের নীরব সাক্ষী এই প্রত্ম স্থানটি। স্থানীয় লোকেরা ঐতিহাসিক এই স্থানকে জুগির থান বলে জানেন।
যোগ সাধনা হলো মানবাত্মার সাথে পরমাত্মার মহামিলন তথা মোক্ষ লাভের অভিষ্ঠ লক্ষ্যে উপাসনার সনাতন ধর্মীয় একটি পৌরাণিক মতবাদ। পাহাড়ের গুহা অভ্যন্তরে তান্ত্রিক সাধনায় নিয়োজিত হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত নাথ দ্বীনাথ শিবের উপাসক ধর্মাবলম্বী একদল সংসার ত্যাগী উপাসক, সন্ন্যাসী, তপস্বী, যোগী বা যুগি নামে পরিচিত। গোফা বা গুহার অনুরূপ ঘোপ /খোপ বা নির্জন কুঠুরিতে নাথ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসীরা ধ্যান তপস্যা বা যোগ সাধনায় লিপ্ত থাকায় স্থানটি যোগীর ঘোপা নামে পরিচিতি লাভ করেছে।
ঐতিহাসিক স্থানটি পাল পূর্ব যুগের বলে ধারণা করা হয়। পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপালের পৌত্র দেবপালের রাজত্বকালে ৮২১-৮৬১ খ্রিঃ যোগীর ঘোপা প্রসিদ্ধ স্থানের মর্যাদা লাভ করে। বলা বাহুল্য যে, চারশত বছরের রাজত্বকালে পাল রাজারা বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা দান করলেও ধর্মীয় ক্ষেত্রে উদারতার পরিচয় দিয়ে প্রজাসাধারণের আকুন্ঠ সমর্থন লাভ করেছিলেন। দেবপাল তাঁর রাজত্বকালের শেষভাগে অধিকাংশ সময় জুগির ঘোপা রাজভবনে ধাপের টিকর? দূরত্ব প্রায় ৫০০ মিঃ অবস্থান করতেন। তিনি হয়তোবা নাথ যোগীদের উদার যোগ দর্শনে আকৃষ্ট ছিলেন। বলা হয়ে থাকে যে এই স্থানে তিনি মৃত্যুবরণ করার পর তাঁকে সমাহিত অথবা দাহ করা হয়। রাজা দেবপালের দাহকৃত স্থানেই বর্তমানের যোগীর ঘোপা প্রতিষ্টিত হয়েছিল। এই জন্য ঐতিহাসিক স্থানটিকে দেবপালকা ছত্রী চিতা ভষ্মের উপর নির্মিত স্থাপনা নামেও অভিহিত করা হয়।
রামচরিতম কাব্য গ্রন্থের রচয়িতা কবি সন্ধ্যাকর নন্দীর বর্ণনামতে বরেন্দ্রভূমি পাল রাজাদের আদি নিবাস ছিল। ইতিহাস গবেষকদের মতে এই প্রতœস্থানের সন্নিকটে আমাইড় গ্রামে রাজা রামপালের রাজধানী রামাবতী দেবপালের অনুরূপ একটি রাজভবণের ধ্বংসাবশেষের অস্তিত্ব বিদ্যমান। এছাড়াও ঐতিহাসিক বাদাল স্তম্ভলিপি সংলগ্ন স্থানে পাল রাজবংশের বংশানুক্রমিক মন্ত্রী পরিবারের বাসভবন অবস্থিত ছিল। এই অঞ্চলে দেবপালের অবস্থানের পশ্চাতে রাজনৈতিক কৌশলগত কারণটিও কল্পনার অবান্তর নয়। আসমুদ্র হিমাচল দিগি¦জয়ের গৌরবময় কৃতিত্বের পশ্চাতে মন্ত্রী দর্ভপাণি মিশ্র অসামান্য অবদান রেখেছিলেন। রাজা স্বয়ং মন্ত্রী মহাশয়ের সাক্ষাতের জন্য তাঁর দ্বারে অপেক্ষা করতেন। স্তম্ভলিপির ষষ্ঠ শ্লোক থেকে সুস্পষ্টভাবে এই তথ্যটি প্রতিয়মান হয়। সংবাদ প্রকাশঃ ০৬-০৯-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=