স্ত্রীকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা, থানায় লাশ ফেলে পালাল পরিবার

সিটিভি নিউজ।। সোহাবুল সোহাগ রিপোর্টার।।============
কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার পর সেটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী লোকমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত পরিবার থানায় মেয়েটির মরদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। নিহত তরুণীর বাবা থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ অভিযোগ নিতে শুরুতে গড়িমসি করে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
জানা গেছে, চৌদ্দগ্রাম শুভপুর ইউনিয়নের মধ্যম হাজিরা পাড়ার লোকমানের সাথে বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতন সহ্য করে আসছিলেন সুমাইয়া আক্তার (২৫)। সুমাইয়া আক্তারের ৩ বছরের একটি ছেলে সন্তানও আছে। স্বামী লোকমান, শ্বশুর মনু মিয়া, শাশুড়ি সালেহা বেগম ও ননদ মানসুরা আক্তার দীর্ঘদিন ধরে সুমাইয়ার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। নিহত সুমাইয়া আক্তার (২৫) ঘটনার সময় সে নিজ বাড়িতেই ছিলেন। মৃত্যুর আগেও (১৩ আগস্ট) মুঠোফোনে স্বাভাবিকভাবে তার মায়ের সাথে কথা বলেছে। কথা বলার ঘন্টাখানেক পর মেয়ে তার মাকে কল দিয়ে বলেছে আম্মু…. আমারে মাইরা চান কিতা করছে। আমারে লইয়া যান। পরে শশুর কল দিয়ে মেয়ের বাবাকে বলে, আপনার মেয়ে মারা গেছে বাড়িতে আসেন। বলার পর হঠাৎ পরিবারের সদস্যরা মরদেহ সরাসরি থানায় নিয়ে গিয়ে আত্মহত্যার দাবি করেন। এরপর লাশ রেখে তারা সেখান থেকে সরে পড়েন। পুলিশ স্বামী লোকমানকে নিহত পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করে।
আত্মহত্যার বিষয়টি পুরোপুরি মিথ্যা বলে দাবি করে নিহত মেয়ের বাবা সেলিম মিয়া জানান, “আমার মেয়েকে তারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। সে আত্মহত্যা করেনি। আমি থানায় গিয়ে মামলা করতে চাইলে পুলিশ নানা অজুহাতে আমাকে ঘুরাতে থাকে। তারা বলে ‘তদন্ত করে দেখা হবে’, কিন্তু কোনো অভিযোগ নিচ্ছে না। এখন ওসি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানাইছে, সন্ধ্যায় নাকি তারা হত্যা মামলা নিবে।
মেয়ের মা বিলকিস বেগম জানান, জামাই বিদেশ যাইতে আমি পুরো টাকা দিছি। মাইয়ারা বিভিন্ন অত্যাচার করার কারনে যখন টাকা চাইছে তখন টাকা দিছি। তার টাকা লাগলে টাকা চাইত আমার মাইয়ারা কেমনে মাইরা লাইছে। সকাল সারে ১০ টায় (বুধবার) মেয়ে আমারে কল দিয়ে বলে.. আম্মু আমারে মাইরা চান কিতা করতে করছে। আমারে লইয়া যান। পরে তারা কল দিয়া কয় আমনের মেয়ে নাই। চাইয়া যান। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চাই।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ও আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, মেয়েটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং আত্মহত্যা বলে যেভাবে প্রমাণ দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে, তাতে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিলাল উদ্দিন বলেন, “আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলা নিবনা কেন! ওনারা লাশ দাফন শেষ করে সন্ধ্যায় থানায় আসবে। তারা হত্যা মামলা দিলে আমরা অবশ্যই হত্যা মামলা নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
তবে পরিবারের পক্ষ থেকে যেহেতু হত্যার অভিযোগ তোলা হয়েছে, তাই পুলিশের শ্লথ ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, তদন্তে ধীরগতি ও অভিযোগ না নেওয়ার প্রবণতা প্রকৃত অপরাধীদের রক্ষা করতে পারে।
নিহতের মরদেহ বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে দ্রুত বিচার ও অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে। সংবাদ প্রকাশঃ ১৪-০৮-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=