Saturday, April 19, 2025
spot_img
More

    মুরাদনগর থানায় হামলার ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা

    সিটিভি নিউজ।। কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধিঃ============= কুমিল্লার মুরাদনগর থানায় হামলাকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। করছে প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা। এরই মাঝে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা উল্টো পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন এবং সংবাদ সম্মেলন করে তাদের আধিপত্য প্রকাশ করছে। সর্বত্র চাঁদাবাজি বেড়েছে দ্বিগুণ। এতে জনসাধারণের মাঝে ভীতি এবং আতঙ্ক বিরাজ করছে। থানায় হামলার ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে উল্টো পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছে।
    সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২৪ মার্চ মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাদের উপর আক্রমণ করা হয়। এ ঘটনায় চাঁদার রশিদসহ রহিমপুর গ্রামের আবুল কালামকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশ। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতারা থানায় অভিযোগ দিতে গেলে চাঁদাবাজ আবুল কালামের পক্ষ হয়ে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মাসুদ রানা ওরফে গুছা মাসুদের নেতৃত্বে আসামি ছিনিয়ে নেয়ার জন্য থানায় আক্রমন করে। এ ঘটনায় পুলিশ ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ফয়সাল বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ ৬ জনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।
    এদিকে অভিযোগ রয়েছে থানায় হামলাকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের নামে দুটো মামলা থাকলেও পুলিশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলা সদর, কোম্পানীগঞ্জ, রামচন্দ্রপুর, দিঘিরপাড়, গাজিরহাট, বাঙ্গরাসহ বিভিন্ন সিএনজি স্ট্যান্ড, বাস স্ট্যান্ড, ভ্রাম্যমান দোকানসহ সর্বত্র চাঁদা আদায় অব্যাহত রয়েছে।
    কোম্পানীগঞ্জ- কুমিল্লা সড়কের একটি পরিবহনের মালিক জানায়, আগে যা দিতাম এখন তার দিগুণ দেয়া লাগে। না দিলে জোর করে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়।
    নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক মুরাদনগর সদর ও রামচন্দ্রপুর বাজারের কয়েকজন ভ্রাম্যমান দোকানদার বলেন, আগেও চাঁদা দেয়া লাগতো, এখনো দেয়া লাগে। একটি রাজনৈতিক দলের কর্মীরা প্রতিদিন একশো টাকা করে চাঁদা নেয়।
    কোম্পানীগঞ্জ বাজারের সবজি, মাছ, শুটকি দোকানদাররা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশ থেকে হাসিনার পতন হইছে, চাঁদাবাজি তো থেমে নাই। আমাদের ডেইলি চাঁদা দেয়াই লাগে।
    এছাড়াও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পুরো উপজেলায় চলছে অবৈধ ড্রেজারে মাটি উত্তোলন। কোন কোন ড্রেজার থেকে ফুট হিসেবে আবার কোথাও মাসোয়ারা হিসেবে চাঁদা নিচ্ছে। ফসলি জমি কেটে ইটভাটায় এক্সভেটর দিয়ে মাটি দেওয়া হচ্ছে। এতে নষ্ট হচ্ছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। এ নিয়ে জনমনে চরম বিরক্তি ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
    এদিকে উপজেলা সদরে বেড়েছে কিশোর গ্যাং এর দৌরাত্ম। সদরের ৯টি মহল্লায় অন্তত ১২টি কিশোর গ্যাং সক্রিয়। এদের মধ্যে দক্ষিণপাড়া, উত্তরপাড়া, মাস্টারপাড়া, চৌধুরীকান্দি, নোয়াকান্দি, রহিমপুর এলাকায় মহল্লাভিত্তিক এসব কিশোরগ্যাং গড়ে উঠেছে। তুচ্ছ ঘটনায় দেশীয় অস্ত্র রামদা, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল নিয়ে এক পক্ষ আরেক পক্ষের উপর ঝাপিয়ে পরে। এসব কিশোরগ্যাংদের দিয়ে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। অভিযোগ রয়েছে চাঁদাবাজদের শেল্টার দিচ্ছে সাবেক এক এমপি ও বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতা।
    বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক এডভোকেট ওবায়দুল হক সিদ্দিকী জানান, বিগত স্বৈরাচারের রোষানল থেকে রেহাই পেতে আমরা জুলাই বিপ্লব করেছি। কিন্তু স্বৈরাচার বিদায়ের পর থেকেই নতুন করে চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ মুরাদনগর উপজেলার জনগণ। সর্বত্র একটি গোষ্ঠীর চাঁদাবাজি চলছেই। চাঁদাবাজকে আটক করায় উল্টো থানায় আক্রমণ করা হয়। যা নব্য স্বৈরাচারের বহিঃপ্রকাশ বটে। আমরা অনতিবিলম্বে উক্ত ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।
    উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম জানান, স্বৈরাচারের বিদায় হয়েছে, দেশ স্বাধীন হয়েছে, কিন্তু মুরাদনগর স্বাধীন হয়নি। এখানে চাঁদাবাজি আগের চেয়ে দ্বিগুণ বেড়েছে। কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনাল থেকে ইদ্রিস, তুহিন, হেলালের নেতৃত্বে প্রতি বাস থেকে প্রতিদিন ৫০০ টাকা চাঁদা আদায় করে। যা আগে ছিলো ২০০ টাকা। তিনি আরো বলেন, ২২টা ইউনিয়নের স্বৈরাচারের দোসর চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে ২০-৩০ লাখ টাকা চাঁদা নিয়ে সাবেক এমপি কায়কোবাদ তাদের উপজেলায় মাসিক মিটিংয়ে অংশ নিতে দেয়। যা নজিরবিহীন। সদরের মায়া ফার্মেসী থেকে ৩০ লাখ টাকা চাঁদার বিনিময়ে ব্যবসা করতে দেয়। টাকার বিনিময়ে আওয়ামীলীগ পূনর্বাসন করছেন মূলত জাতীয় পার্টি থেকে আসা কায়কোবাদ। আমরা মুরাদনগরের মূলধারার বিএনপি তাঁর সাথে নাই। তাকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।
    উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ জাহের মুন্সি বলেন, চাঁদাবাজরা আসামি হওয়ার পরও প্রকাশ্যে ঘুরছে, মামলার মূল আসামী প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করছে যা অত্যন্ত হতাশাজনক। আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।
    এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান জানান, মামলার তদন্ত চলমান। আসামি ধরার অভিযানও চলছে।
    কুমিল্লার পুলিশ সুপার নজির আহমেদ খান দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে জানান, এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দুটি মামলার মধ্যে একটি মামলা ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকি আসামীদের গ্রেফতার করা হবে। সংবাদ প্রকাশঃ ১১-০৪-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=

    আরো সংবাদ পড়ুন

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -
    Google search engine

    সর্বশেষ সংবাদ

    Recent Comments