দশ বছর ধরে শিকল বন্দী তিন ভাই-বোন

সিটিভি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন
সিটিভি নিউজ।।   মোঃ খালেদ বিন ফিরোজ     নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর আত্রাই উপজেলাধীন ব্রজপুর গ্রামের লবা প্রামানিক এর পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিন ছেলে-মেয়ে পাগল হয়ে দশ বছর ধরে শিকল বন্দি। সুস্থ এক ছেলে পাগল হওয়ার ভয়ে বাড়ীর ভিটা ছেরে অনত্র স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকে। এক মেয়ে বিয়ে হয়ে একনও স্বামীর বাড়ীতে সুস্থ আছে। প্রতিবেশিরা মাঝে মধ্যে তাদেরও পাগলামীর কথা শুনতে পান বলে জানান। অভাবী বৃদ্ধ বাবা-মা সহায় সম্বল হারিয়ে সময়মতো খেতে দিতে পারেন না অসুস্থ সন্তানদের। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে না পেরে শিকলে বন্দি করে রেখেছে তাদের। বৃদ্ধ লবা প্রামানিক এর কপালে জোটেনি বয়স্ক ভাতা। তিনিও সময় সময় বয়সের ভারে পাগলামি করে থাকেন। লবার স্ত্রী রাইজান মানুষের বাড়ীতে কাজ করে কখনো চেয়ে চিন্তে স্বামী-সন্তানের মুখে খাবার তুলে দেন। সরকারী সহায়তা বলতে শুধুমাত্র ১০ টাকা কেজি দরে চাল ক্রয়ের কার্ড আছে তাদের। দুবেলা দুমুঠো খেয়ে-পড়ে বাঁচতে এবং অসুস্থ সন্তানদের চিকিৎসা করাতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করে আকুতি জানান অসহায় বৃদ্ধ দম্পতি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের ব্রজপুর বাজার সংলগ্ন ব্রজপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশদিয়ে বয়ে চলেছে গ্রামীন রাস্তা।সেই রাস্তা ধরে কিছুদুর যেতেই পাকা একটি বাড়ী। বাড়িটির গলি দিয়ে পশ্চিম দিকে কয়েক ধাপ দিতেই হাতের ডানপার্শ্বে চোখে পড়বে দরজা-জানালা বিহীন ভাঙ্গা বাড়ী। ব্রজপুর বাজারে গিয়ে লবা প্রামানিকের বাড়ীর ঠিকানা জানতে চাইলে রাস্তা দেখিয়ে দিয়ে ঐ বাড়ীতে অনেকগুলো পাগল আছে বলে জানান তারা। বাড়ী তো নয় যেনো ভাঙ্গা পাখির বাসা। বাড়ীর ভেতরে তাকাতেই চোখে পড়বে উঠানে বাঁসের খুঁটির সাথে শিকলে আটকানো আছে মাঝ বয়সী নার্গিস নামে অসুস্থ মেয়ে। অনুরুপভাবে পশ্চিম ভিটায় দরজা-জানালা বিহিন মাটির কুঁরে ঘড়ের খুঁটিতে বাঁধা রয়েছে মাঝ বয়সের সাইফুল নামে অসুস্থ ছেলে। আবার সেখান হতে পূর্ব দিকে তাকাতেই ভাঙ্গা চালার নিচে চোখে পড়বে শিকল বন্দী মাঝ বয়সী রোজিনা নামে অসুস্থ মেয়ে। সম্পর্কে এরা আপন তিন ভাই-বোন। এদের বিয়ে-সন্তান সবই হয়েছিল। তাদের সন্তানেরা কেহ নানার বাড়ী কেহ দাদার বাড়ীতে বড় হচ্ছে বলে জানায় প্রতিবেশি সাজ্জাদ আলী। এক সময় পরিবারের লোকজন তাবিজ-কবজ এবং কবিরাজি করতো। বাড়ীর ভিটা এবং সন্তানের উপর কবিরাজির প্রভাব পরেছে বলে অনেকে মনে করেন। একারনে এলাকায় পাগলের বাড়ী নামে পরিচিত তারা।
মা রাইজান বেগম জানান, থালাতে করে খেতে দিলে আছরিয়ে ভেঙ্গে ফেলে। যে কারনে দুর থেকে পলেথিনের প্যাকেটে করে খেতে দিতে হয়। তাদের দেখা শোনা করতে গিয়ে আমিও মাঝে মধ্যে অসুস্থ হয়ে যাই।
বাবা লবা প্রামানিক জানান, পাবনা পাগলা গারদে রেখে ছিলাম। কিছুদিন পর সেখান থেকে পাঠিয়ে দিয়েছে। এখন আমি কি করবো, সন্তানদের কি খাওয়াবো কোন কুল কিনারা পাচ্ছিনা।
কথা হয় প্রতিবেশি হোসনে আরার সাথে। তিনি জানান, একসময় ভালো পরিবার ছিলো এরা। কোথা থেকে কিযে হলো তিন ছেলে মেয়ে অসুস্থ হয়ে পরিবারের সবকিছু উলোট পালট হয়ে গেল। আহসানগঞ্জ ইউনিয়ন সদস্য আহসান হাবিব কায়েস জানান, ইউনিয়নে আসা সরকারী অনুদানের পাশাপাশি আমরা প্রতিবেশিরা যখন যা পারি সাহায্য সহযোগিতা করে থাকি। স্থায়ীভাবে সরকারী সহায়তা পাওয়ার ব্যাপারে সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান তিনি।সংবাদ প্রকাশঃ  ২২২০২১ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

Print Friendly, PDF & Email