সরকারি বিধি অনুযায়ী কোনোভাবেই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার সুযোগ নেই==প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা

সিটিভি নিউজ।। মাহবুব আলম আরিফ, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: ==============
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে যেন চলছে টাকার ‘নীরব লুটপাট’। পরীক্ষার ফি থেকে শুরু করে ক্লাস পার্টি—বিভিন্ন অজুহাতে কোমলমতি শিশুদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে টাকা। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও প্রধান শিক্ষকরা যেন পরিণত হয়েছেন ‘ফি আদায়কারী’তে।
শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে টাকা আদায় করেছেন বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। ফলে ক্ষোভে ফুঁসছে অভিভাবক সমাজ।

সরেজমিনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৭৮ নং হারপাকনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ছালেহা লাভলী তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ৮৩জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩০ টাকা, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ১০৭জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৫০ টাকা এবং পঞ্চম শ্রেণির ৫৭জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৬০ টাকা করে আদায় করেছেন। পাশাপাশি পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ক্লাস পার্টির নামে অতিরিক্ত নেওয়া হয়েছে আরো ২০০ টাকা।

একই অভিযোগ পাওয়া গেছে ১৭৫ নং জাংগাল আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও। সেখানে প্রধান শিক্ষিকা রুবাইয়া নাসরিন শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষার ফি বাবদ শিক্ষার্থীপ্রতি ৩০–৫০ টাকা করে নিয়েছেন। পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস পার্টির জন্য নেওয়া হয়েছে ১৫০ টাকা।

অভিযোগের বাইরে নন ১৪৯ নং ছিলমপুর কামিনী মোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল্লাহ সরকারও। বিদ্যালয়ের ১৯২জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রকারভেদে ৩০–৫০ টাকা করে পরীক্ষার ফি আদায় করা হয়েছে। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মিলাদ ও সার্টিফিকেটের জন্য অতিরিক্ত আরো ২০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

অভিভাবকরা বলছেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার ফি আদায়ের কোনো নিয়ম নেই। তারপরও চাপ প্রয়োগ করে টাকা আদায় করায় তারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

হারপাকনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরাফাতুল জানায়, “পরীক্ষার ফি-এর কথা বলে ৬০ টাকা এবং ক্লাস পার্টির কথা বলে তার কাছ থেকে ২০০ টাকা নেওয়া হয়েছে।”

যদিও হারপাকনা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ছালেহা লাভলী পরীক্ষার ফি নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তবে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মদন গোপাল চক্রবর্তী নিশ্চিত করেছেন যে বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে তিনি পরীক্ষার ফি আদায়ের সত্যতা পেয়েছেন এবং তা পরিদর্শন খাতায় উল্লেখ করেছেন।

জাংগাল আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জান্নাতুল আক্তারের মা সাজনা বেগম মুঠোফোনে বলেন, বিদায়ী অনুষ্ঠানের ১০০ টাকা আমি দিতে পারছি। আমার আর্থিক অবস্থা অনেক দুর্বল তাই আমি পরীক্ষার ফি এর টাকাটা এখনো দিতে পারি নাই। আমার মেয়ের সাথে আমার ছেলেও একটা ক্লাস থ্রিতে পড়ে। আমি ম্যাডামরার কথা মতন আমার মেয়ের পরীক্ষার ফির ৫০ টাকা ও ছেলের পরীক্ষার ফি ৩০ টাকা জোগাড় করছি। স্কুলে নিয়া অহন দিয়া আমু।

বরাবরের মতোই পরীক্ষার ফি নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন জাংগাল আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রুবাইয়া নাসরিন।
তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন আখন্দ।

এ বিষয়ে মুরাদনগরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “সরকারি বিধি অনুযায়ী কোনোভাবেই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। কেউ নিয়ে থাকলে সেটি অন্যায়। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সংবাদ প্রকাশঃ ০৮-১২-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like)
আরো পড়ুন