শীতের আগমনী বার্তায় মুখরিত চারপাশ,স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করনীয়

সিটিভি নিউজ।। মোঃ আবদুল আউয়াল সরকার: সংবাদদাতা জানান ===== যেহেতু শীতকালে দিন ছোট হয় এবং রাত দীর্ঘ হয়, আমরা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘুমানোর প্রবণতা পাই। কেউ কেউ ‘হাইবারনেশন’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন আপনার ঘুমকে স্বাভাবিকের চেয়ে এক থেকে দুই ঘণ্টা বাড়ানো ভালো। যাইহোক, কিছু আনুষঙ্গিক কারণের যত্ন নেওয়া দরকার যেমন।
হিম বাতাসে শীতের আগমনী বার্তায় মুখরিত হয়ে উঠছে চারপাশ। তাপমাত্রা কমছে একটু একটু করে। নরম কুয়াশামাখা শীত মানেই যেনো খেজুর রস, গুঁড় আর পিঠাপুলির উৎসব। কিন্তু শীত মানেই যেমন পিঠাপুলির একটা আমেজ থাকে ঠিক তেমনি সর্দি জ্বরের মতন অসুস্থতা এসে হানা দেয়। আর এই অসুস্থতার জন্যেই অনেকেই প্রিয় এই ঋতুকে যেনো ঠিকভাবে উপভোগ করতে পারেন না। আবার অনেকেরই ভীষণ অপছন্দের ঋতু হয়ে উঠে শুধুমাত্র এই শারীরিক অসুস্থতার জন্য। এই বিড়ম্বনা থেকে বাঁচতেই চাই কিছু বাড়তি সুরক্ষা।
সর্দি, কাশি, গলায় খুশখুশে ভাব বা গলা ব্যাথা, জ্বর, হাত –পা ফাঁটা, হাত –পা সহজে গরম না হওয়া শীতের সাধারণ সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। ব্যক্তিভেদে অ্যালার্জিও দেখা দিতে পারে।
একবার সমস্যা দেখা দিলে তা থেকে পরিত্রাণের জন্য আমরা কত কিছুই না করে থাকি। কিন্তু যদি একটু আগে ভাগেই সচেতনতা অবলম্বন করা যায় তবে কিন্তু সমস্যাও এতোটা গভীর হয় না। কি সেই সচেতনতা এবার জানবো সেগুলোই। শীতকালে যেহেতু রোগাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে তাই চাই ভিতর থেকে সুরক্ষা। দেহের অভ্যন্তরীন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা গেলে অনেক রোগ থেকেই মিলবে সুরক্ষা। আর এর জন্য মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম। শীতকালীন শাকসবজি যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, টমেটো, শিম, লাউ, ব্রোকলি, মটরশুঁটি, মুলা, শালগম ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায়। যেমন, পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, বিটা ক্যারোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস সহ আরও অনেক গুরুত্ব পুষ্টি উপাদান। এছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ডায়েটারি ফাইবার বা খাদ্যআঁশ এর অন্যতম ভালো উৎস হিসেবেও বিবেচিত হয় এই সবজিগুলো।
কুসুম গরম পানি সেবন – শীতের শুরুতে অনেকেরই ঠান্ডা পানির জন্য সমস্যা দেখা দেয়। এর থেকে মুক্তি পেতে কুসুম গরম পানি গ্রহণের অভ্যাস বেশ ফলপ্রসু হিসেবে দেখা দেয়। এর সাথে এক চা চামচ খাঁটি মধুর ব্যবহার শরীরকে ভিতর থেকে গরম রাখতে সাহায্য করে।
ভেষজ উপাদানের ব্যবহার – বিভিন্ন ধরনের ভেষজ উপাদান যেমন, ত্রিফলা, অশ্বগন্ধা, সজিনা বা মরিঙ্গা, নিম ইত্যাদি অ্যান্টঅক্সিডেন্ট এর যোগান দেয়। তাছাড়াও বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় সুরক্ষা নিশ্চিত করে, একই সাথে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়াও কালিজিরা, মধু, তুলসি, আদার রস একসাথে মিশিয়ে গ্রহণেও শীতের সমস্যা অনেকটাই উপশম হয়।
ত্বক ও চুলের যত্নে করনীয়ঃ শীত মানেই শুষ্ক ত্বক ও রুক্ষ চুল। সেই সাথে চুল পরার সমস্যা তো আছেই। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে কত জন কত ধরণের পন্থাই না অবলম্বন করে থাকে। কিন্তু বাজারের ক্যামিকেল মিশ্রিত বিভিন্ন সামগ্রী অপেক্ষা প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার ত্বক ও চুলকে করতে পারে স্বাস্থ্যজ্জ্বল। তেমনই একটি উপাদান হচ্ছে নারিকেল তেল। নারিকেল তেল ত্বকে ময়েশ্চার ধরে রাখতে সাহায্য করে। ফলে শীতে ত্বক অত্যাধিক রুক্ষ হয়ে উঠে না। এছাড়াও জলপাই তেল বা অলিভ অয়েল এর ব্যবহারেও ত্বকের রুক্ষতা দূর করা যায়। অলিভ অয়েল ঠোঁট ফাটা প্রতিহত করতে দারুণ কাজ করে। অলিভ অয়েলের সাথে মধু ও চিনি মিশিয়ে ঘন ফেইস প্যাক তৈরি করা যায় যা দিয়ে ত্বকের মৃত কোষ দূর করা যায়। ত্বকের যত্নে বিভিন্ন প্যাক তৈরিতে মধু বিশেষভাবে ব্যবহৃত একটি উপাদান। তবে নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল বা মধু; যাই ব্যবহার করা হোক না কেনো তা হওয়া চাই খাঁটি। নাহলে এগুলোর ব্যবহারে উপকারের চেয়ে অপকারের সম্ভাবনাই বেশি।
হাত-পা গরম রাখতে করনীয়ঃ শীতে হাত – পা ঠান্ডা হওয়ার মূল কারণ রক্ত প্রবাহ ব্যহত হওয়া। অনেক সময় দেখা যায় হাত পায়ের রক্তনালী সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় রক্ত প্রবাহ ঠিকভাবে হতে পারে না। যার ফলে হাত পা বরফ শীতল হয়ে যায়। আবার অনেকের ব্যথার অনুভূতিও হতে পারে। এছাড়া অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতার কারণেও এই সমস্যা দেখা যায়। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য সবার আগে চাই হাত মোজা ও পা মোজার ব্যবহার। এর পাশাপাশি হাত পায়ে সরিষার তেল হালকা গরম করে মালিশ করলে রক্ত সঞ্চালন অনেকটা উন্নত হয়। ফলে হাত পায়ে গরম অনুভূত হয়। তাছাড়া নিয়মিত শরীরিচর্চায়ও রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় যা হাত পা সহ পুরো শরীর গরম রাখতে সহায়ক।
শীত আসার আগেই যদি এমন কিছু কিছু ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা যায় তবে সহজেই শীতের নানান শারীরিক সমস্যা থেকে উত্তরণ করা সহজ হয়। অভ্যাসে খানিকটা পরিবর্তন শীতের সুরক্ষা তে অনেকটা ভূমিকা পালন করে। তবে এর জন্য ব্যবহৃত প্রত্যেকটি উপাদান হওয়া চাই খাঁটি। কেননা প্রকৃতির মাঝেই লুকিয়ে আছে আমাদের সুরক্ষিত রাখার উপায়। আর এই শীতে আপনাদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সকল সামগ্রী পেতে ভরসা রাখতে পারেন খাস ফুডে।
শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী রাখতে মূলজাতীয় সবজি এক্ষেত্রে ভালো কার্যকর। বিট, মিষ্টি আলু, গাজর, শালগমের মতো নানা সবজি শীতে আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে। এসব সবজিতে থাকা ভিটামিন ও নানা পুষ্টি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। শীতের সময় বেশী করে টকজাতীয় ফল খেতে পারেন। কমলা, বরই, পেয়ারা ভিটামিন সির দারুণ উৎস হ’তে পারে।
ত্বক ভাল রাখার জন্য প্রয়োজন ফ্যাটি এসিড। বাদাম, মাছ এই ধরনের খাবার বেশী করে খান। ব্যালেন্সড ডায়েট মেনে চলুন। এছাড়া মাছের সঙ্গে শিম যুক্ত করে খেতে পারেন। এই শীতে নিয়মিত শিম খেলে ত্বকও ভাল থাকবে। খেতে পারেন পুষ্টিকর পালংশাকও। পালংশাক ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী। অতিরিক্ত ওযনও কমায়। এই সবজি শীতে আমাদের শরীরকে হাইড্রেট রাখতেও সহায়তা করে। সংবাদ প্রকাশঃ ২৬-১১-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=