সিটিভি নিউজ।। মনোয়ার হোসেন চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘আগামী নির্বাচন হবে মাস্তান-চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সকলের স্বাধীন মত প্রকাশের নির্বাচন। আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে এদেশের মানুষ একটি নতুন বাংলাদেশ দেখবে। যেখানে কোনো সন্ত্রাস-দুর্নীতি থাকবে না। সুতরাং একথা বলা যায়, বাংলাদেশের মানুষ আর মাস্তান-চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের ভোট দেবে না।
এ দেশের ক্ষমতাসীন দলগুলো প্রতিনিয়ত জনগণের সাথে প্রতারনা করেছে। বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে। তারা ওয়াদা দিয়েও জনগণের সাথে ওয়াদার খেলাফ করেছে। জনগণকে বঞ্ছিত করে নিজেদের ভাগ্য গড়েছে। এ বাংলাদেশ এভাবে আর চলতে পারে না। জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে শুধু স্বৈরাচারের পতন নয় বরং স্বৈরাচার এদেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছে। এদেশে আর কাউকে নতুন করে স্বৈরাচার হতে দেবে না জনগণ। জুলাই বিপ্লবের পর মানুষ আশা করেছিল এবার বোধহয় দেশে সত্যিকার পরিবর্তন হবে। নেতারা বুঝবে, নিজেদেরকে শোধরাবে। কিন্তু না তারা নিজেদের মধ্যে পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়নি। পরিবর্তনের আশায় তিনটি প্রধান লক্ষ্য নিয়ে গঠিত প্রফেসর ড. ইউনূস এর সরকার একটি ঐক্যমত কমিশন গঠন করে। সে কমিশনে দেশের ৩১টি রাজনৈতিক দল বিভিন্ন ইস্যুতে সংশোধনী ও দেশের কল্যাণে মতামত দিয়েছে। সকলে জুলাই সনদে স্বাক্ষরও করেছে। অথচ একটি বড় দল ঐসব সংস্কারে মোটাদাগে (৯টি উল্লেখযোগ্য বিষয়ে) নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। তারা সংস্কার চায় না। সংস্কার কেন চায় না জানেন? সংস্কার না চাওয়ার অর্থ হলো: আবার ১৫ বছরের অন্ধকারে ফিরে যাওয়া। সংস্কার না চাওয়ার মানে হচ্ছে, আবার অন্যায়ভাবে ভোট ডাকাতি করে ভোটারবিহীন নির্বাচন করে আবার স্বৈরাচার হয়ে ওঠা। এটি জুলাই শহীদদের সাথে বেঈমানী। এটি তাদের রক্তের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা। আমরা বলেছি, বাংলাদেশকে আর পিছিয়ে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজন হলে আবার জুলাই বিপ্লবের ডাক দেওয়া হবে। আবার ৫ আগস্টের আবির্ভাব হবে। বাংলার মানুষ আর স্বৈরাচার-ফ্যাসিবাদে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেবে না। এবার এদেশের ৪ কোটি যুবক নতুন ভোটার হয়েছে। যতই চেষ্টা হোক, বাংলাদেশের যুবকদের মধ্যে যে চেতনার উম্মেষ হয়েছে, পরিবর্তনের যে আকাঙ্খা তৈরী হয়েছে। ভালোকে গ্রহণ করার যে মানসিকতার প্রস্তুত হয়েছে। মিথ্যার বিরুদ্ধে যে ম্যান্ডেট দেওয়ার চিন্তাধারার যে ক্ষমতা তৈরী হয়েছে, তাদের মধ্যে শুভ বুদ্ধির যে উদয় হয়েছে, তাকে দমিয়ে দেওয়া যাবে না। তার প্রমাণ অতি সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া দেশের চারটি বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ নির্বাচন। এখানে নিরঙ্কুশভাবে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্যানেল তথা সত্যের বিজয় অর্জিত হয়েছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুনবতী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে গুনবতী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত বিশাল নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. তাহের আরও বলেন, আমরা সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরুতে বিশ্বাস করি না। আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। সুতরাং জামায়াত ক্ষমতায় এলে কাউকে নির্যাতন করা হবে না। দেশের সকল নাগরিক সমঅধিকার ভোগ করবে। এটি তাদের অধিকার। দেশের আলেম সমাজ তাদের সম্মান মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচবে।
দুর্নীতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এদেশে জামায়াতের দুইজন মন্ত্রী ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পায়নি। ওয়ান ইলেভেনের সময় আমাকে গ্রেফতারের পর দীর্ঘ ১৮ মাস কারাগারে বন্ধি রেখে বারবার তদন্ত কমিটি গঠন করেও কোনো দুর্নীতি পায়নি তারা। একপর্যায়ে দুদক স্বীকার করেছে, তথ্যগত ভুলের কারণে আমাকে তারা গ্রেফতার করেছিল। বিভিন্ন সময়ে জামায়াতের ৬২ জন এমপি ছিলেন, কারো বিরুদ্ধে কখনো একটি পয়সার দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সুতরাং মহান আল্লাহ চাইলে এবং দেশের জনগণের ভোটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যদি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে, এদেশ হবে দুর্নীতিমুক্ত একটি দেশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘শহীদ জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি একটি বৃহত্তম ও জনপ্রিয় দল ছিল। সেই বিএনপি এখনো বড় দল বটে। তবে, এখন আর জনপ্রিয় দল নয়। দেশের মানুষ এখন আর আগের মত বোকা নয়। তার এখন যথেষ্ট সচেতন। এখন আর তারা মিথ্যার পক্ষে রায় দিতে প্রস্তুত নয়। দুর্নীতিবাজ ও চাঁদাবাজদের রুখে দিতে দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ।
গুনবতী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমীর মো. ইউসুফ মেম্বারের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা জামায়াতের কর্ম পরিষদ সদস্য ডা. মঞ্জুর আহমেদ সাকির সঞ্চালনায় জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমীর মু. মাহফুজুর রহমান এবং জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্ম পরিষদ সদস্য ভিপি শাহাব উদ্দিন।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য আইয়ুব আলী ফরায়েজী, ইউনিয়ন ব্যাংকের সাবেক এমডি সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সালেহ, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা জামায়াতের আমীর মাওলানা মুহাম্মদ ইবরাহীম, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মু. বেলাল হোসাইন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক সৈয়দ একরামুল হক হারুন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও জামায়াত নেতা মেশকাত উদ্দিন সেলিম, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক অফিস সম্পাদক আবু সাঈদ মজুমদার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন মজুমদার, মাওলানা আব্দুল হাই, মোস্তফা নুরুজ্জামান খোকন, ইঞ্জিনিয়ার মজিবুর রহমান, শিবির নেতা শহীদ ইব্রাহীমের পিতা আব্দুল হক, সাবেক শিবির নেতা জীবন্ত শহীদ জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।
জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পৌর জামায়াতের নায়েবে আমীর কাজী মুহাম্মদ ইয়াছিন মজুমদার, রমনা কারের স্বত্ত্বাধিকারী রহমত উল্লাহ ফরায়েজী, আবাবিল হজ্জ গ্রুপের স্বত্ত্বাধিকারী আলহাজ্ব মো. আবু ইউসুফ, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মু. খাইরুল ইসলাম, সাবেক শিবির নেতা ও অস্ট্রিয়া প্রবাসী মো. শাহাদাত হোসাইন, বাতিসা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল হক মজুমদার খোকন, জামায়াত নেতা কাজী আব্দুল কাদের, সাহাব উদ্দিন রানা, নাজমুল হক মোল্লা বাদল, কপিল উদ্দিন মাহমুদ, দশবাহা মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া প্রমুখ। এ সময় চৌদ্দগ্রাম উপজেলা, গুনবতী ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত জামায়েত ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবির সহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ প্রকাশঃ ১৬-১১-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ ওমর ফারুকী তাপস
মোবাইল: 01711335013
www.ctvnews24.com