দেবীদ্বারঃ অবকাঠামো শিক্ষক সংকট ও অনিয়মে জর্জরিত দেবীদ্বার এসএ সরকারি কলেজ: হারাচ্ছে ঐতিহ্য

সিটিভি নিউজ।। এবিএম আতিকুর রহমান বাশার ঃ দেবীদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি/==================
দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ, জ্ঞান প্রদীপখ্যাত কুমিল্লা জেলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ‘দেবীদ্বার সুজাত আলী সরকারি কলেজ’ বর্তমানে নানা সংকট ও অব্যবস্থাপনার ঘূর্ণাবর্তে নিমজ্জিত।
প্রায় ছয় দশকের কাছাকাছি ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক সংকট, অবকাঠামোগত দুরবস্থা, প্রশাসনিক জটিলতা, শ্রেণীকক্ষ, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় পর্যাপ্ত ল্যাব ও সরঞ্জাম, মাঠ-ছাত্রাবাস-ছাত্রীনিবাস ও শিক্ষক আবাসনের অভাবে কলেজটির শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
১৯৬৮ সালে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক এমপি ক্যাপ্টেন সুজাত আলীর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত দেবীদ্বার কলেজটি ১৯৮৬ সালে সরকারীকরণ হয়। তবে সরকারীকরণের পর আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি। একসময় এ কলেজে ৭-৮ হাজার শিক্ষার্থী থাকলেও বর্তমানে সংখ্যা কমে প্রায় আড়াই হাজারে নেমেছে।
শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে নতুন ৬ তলা বিজ্ঞান ভবনেই সব বিভাগের ক্লাস চলছে। এর মধ্যে হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স চালু রয়েছে, আর রাষ্ট্রবিজ্ঞান, বাংলা ও দর্শন বিষয়ে অনুমোদনের অপেক্ষা।
প্রাক্তন ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবু হানিফ জানান, কলেজের সবচেয়ে বড় সমস্যা শিক্ষক সংকট। সরকারীকরণের সময় ৫৫টি জনবল অনুমোদিত পদের বিপরীতে বর্তমানে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা অর্ধেকেরও কম। ইংরেজি, কৃষি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও হিসাববিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক শূন্যতা রয়েছে। এছাড়া শরীরচর্চা শিক্ষক, ক্যাশিয়ার, অফিস সহায়ক, নৈশ প্রহরী ও বেয়ারার পদও শূন্য।
এই সংকটে পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সমস্যা সামাল দিতে ৬ জন খন্ডকালীন শিক্ষক এবং ১২ জন বেসরকারি কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থী সুমন দাস বলেন, অধ্যক্ষসহ শিক্ষকদের কোন আবাসনের ব্যবস্থা না থাকায় ঢাকা, কুমিল্লাসহ নানা জায়গায় অবস্থানরত শিক্ষকগন প্রতিদিন জার্নি করে, ক্লান্ত শরীর নিয়ে নির্ধারিত সময়ে কলেজে এসে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে একটি বিরাট সমস্যা রয়েছে।
শিক্ষার্থী মো. রুহুল আমীন বলেন, ‘আমি পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী। বিভাগটিতে দুইজন শিক্ষকের পদ অনুমোদিত থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকশূন্য। একদিনের জন্যও ক্লাস করতে পারিনি। ফলে পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যয়ের দায় আমাদের ওপর পড়ছে। তাছাড়া ল্যাব নেই, নিয়মিত শিক্ষক না থাকায় পড়াশোনায় আগ্রহও কমে যাচ্ছে।’
অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নুরুন্নাহার বলেন, ‘দেবীদ্বার সরকারি কলেজের’ অতীত ঐতিহ্য আজ হারিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে, অধিকাংশ বিভাগেই প্রয়োজনের তুলনায় শিক্ষক কম। খেলার মাঠটি পরিত্যক্ত, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। ছাত্রাবাস ও হোস্টেলের অবস্থা বেহাল, ড্রেনেজ না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই মসজিদে পানি ঢুকে যায়। বিশেষ করে ছাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রামাগার, নিরাপদ টয়লেট ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা না থাকায় আমরা নানা ভোগান্তিতে পড়ি।’
দেবীদ্বার সুজাত আলী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আহসান পাভেজ খোকন বলেন, ‘আমি কলেজটির প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে এর হারানো ঐতিহ্য ও গৌরব ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি। ইতিমধ্যে মিলনায়তনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে; মসজিদ, মাঠ, হোস্টেল, ছাত্র সংসদ ভবন, ল্যাবরেটরি, প্রশাসনিক ভবন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, কলেজের নিরাপত্তায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও আবাসন উন্নয়নে পরিকল্পনা নিয়েছি।’ তিনি শিক্ষা মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তা ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা কামনা করেন।
ছবির ক্যাপশনঃ দেবীদ্বার সুজাত আলী সরকারি কলেজ’র প্রধান গেইটের ছবি। সংবাদ প্রকাশঃ ২৬-১০-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like)
আরো পড়ুন