রাজা নেই রাজ্য নেই আছে দাঁড়িয়ে কালের সাক্ষী হয়ে রাজবাড়িটি

সিটিভি নিউজ।। মোহাম্মদ আককাস আলী :সংবাদদাতা জানান ===== রাজা নেই রাজ্য নেই আছে দাঁড়িয়ে কালের সাক্ষী হয়ে রাজবাড়িটি। আছে রাজা ও জমিদারের সময়কার রোপণ করা অনেক বটবৃক্ষ আর তৈরি করা নানা স্থাপনা। শুধু কালের সাক্ষী হয়ে রাজার শাসন আমলের প্রায় ২০০ বছরের স্মৃতি মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ঐতিহ্যবাহী নওগাঁর বলিহার রাজবাড়িটি। নওগাঁ জেলা শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরে বলিহার ইউনিয়নের বলিহার গ্রামে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী রাজবাড়িটি।
নওগাঁবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঐতিহ্যবাহী বলিহার রাজবাড়ি সংরক্ষণের জন্য প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর অবশেষে এটিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসাবে ঘোষণা করে।
২০২২ সালের ২৪ মার্চ সংস্কৃতিকবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে। এর পরই সেখানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে। ইতিহাস সূত্রে জানা যায়, সম্রাট আওরঙ্গজেব কর্তৃক জায়গীর লাভ করে বলিহার জমিদার পরিবার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নৃসিংহ চক্রবর্তী। বলিহার জমিদাররা তাদের জমিদারি বিভিন্ন স্থানে নানা স্থাপনা গড়ে তোলেন, যার মধ্যে বলিহার রাজবাড়ি অন্যতম। দেশ বিভাগের সময়কালে বলিহারের রাজা ছিলেন বিমলেন্দু রায়। জমিদারদের মধ্যে জমিদার রাজেন্দ্রনাথ ১৮২৩ খ্রিষ্টাব্দে বলিহারে একটি রাজ-রাজেশ্বরী দেবীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি মন্দিরে রাজেশ্বরী দেবীর অপরূপ পিতলের মূর্তি স্থাপন করেন। বলিহারের ৯ চাকার রথ এ অঞ্চলে প্রসিদ্ধ ছিল। প্রাসাদের কিছুটা দূরেই ছিল বিশাল বাগান। বাগানবাড়িটির সামনের পুকুর ঘাটের একটি ছাদ এখনো দাঁড়িয়ে আছে।
বলিহারের রাজাদের মধ্যে অনেকেই উচ্চশিক্ষিত ছিলেন। রাজা কৃষ্ণেন্দ্র নাথ রায় বাহাদুর একজন লেখক ছিলেন। তার লেখা গ্রন্থগুলোর মধ্যে কৃষ্ণেন্দ্র গ্রন্থাবলি ১ম ও ২য় খণ্ড অন্যতম। দেশ বিভাগের পর জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে রাজা বিমলেন্দু রায় সপরিবারে ভারতে চলে যান।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় এবং পরবর্তী সময়ে রাজবাড়ির বিভিন্ন নিদর্শন, আসবাবপত্র, দরজা-জানালাসহ বিভিন্ন সামগ্রী লুট হয়ে যায়। এরপর থেকে রাজবাড়িটি অব্যবহূত অবস্থায় পড়ে ছিল।। শুধু রাজবাড়ি চত্বরে অবস্থিত মন্দিরে স্থানীয় ভাবে পূজাআর্চা করা হয়। বর্তমানে রাজবাড়ির স্থাপনা, যা এখনো টিকে রয়েছে। এর মধ্যে রাজবাড়ির সামনে প্রকাণ্ড তোরণ, ভেতরের কম্পাউন্ডে প্রাচীন নাট মন্দির, রাজরাজেশ্বরী মন্দির, জোড়া শিবমন্দির আর বিশাল তিন তলাবিশিষ্ট প্রাসাদ।
জনশ্রুতি আছে, মোগল সম্রাট আকবরের সেনাপতি রাজা মানসিং বারোভুঁইয়াদের দমন করতে এ দেশে আসেন। দীর্ঘপথ অতিক্রম করায় সৈন্যরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। বিশ্রামের জন্য ও গুপ্তচরের মাধ্যমে বারোভুঁইয়াদের খবর জানার জন্য সেনাপতি মানসিং যাত্রা বিরতি করেন বলিহারে। সে সময় চলছিল শুষ্ক মৌসুম। বেশি দিন বসে থাকলে সৈন্যরা অলস হয়ে যেতে পারে ভেবে মানসিং সৈন্যবাহিনী দিয়ে সেখানে ৩৩০টি দিঘি ও পুকুর খনন করেন, সেগুলো এখনো রয়েছে গোটা বলিহার এলাকা জুড়ে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের পরিচালক ড. নাহিদ সুলতানা বলেন, ‘নওগাঁর বলিহার রাজবাড়ি একটি প্রাচীন স্থাপনা। স্থাপনাটির চারপাশ ঘিরে দেওয়া হয়েছে, যাতে কেউ এর ক্ষতি করতে না পারে। পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে বলিহার রাজবাড়িকে। প্রতিদিন এখানে বহু পর্যটক আসছেন।’ সংবাদ প্রকাশঃ ১১-১০-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=