মুরাদনগরে সড়কের ধার ঘেঁষে পুকুর খননে ভাঙছে গ্রামীণ রাস্তা আইন অমান্যে হুমকিতে টেকসই উন্নয়ন

সিটিভি নিউজ।। এম ফয়জুল ইসলাম ফয়সাল, মুরাদনগর (কুমিল্লা) সংবাদদাতা:=========
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কের পাশে অবৈধভাবে পুকুর ও সেচ নালা খননের প্রবণতা বেড়েই চলেছে। সড়কের একদম ধার ঘেঁষে এসব জলাধার খননের কারণে দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সড়কের পার্শ্ব-ঢাল ও মূল কাঠামো। এতে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে এবং স্থানীয়দের দুর্ভোগ বেড়ে যাচ্ছে।

সরেজমিনে উপজেলার ধামঘর, নবীপুর, কামাল্লা, বাঙ্গরা, ছালিয়াকান্দি ও রামচন্দ্রপুর এলাকায় দেখা গেছে, অনেক গ্রামীণ সড়কের একদম পাশে গভীর পুকুর খনন করা হয়েছে। কোথাও নতুন খননের কাজ চলছে, আবার কোথাও পানি উঠে এসে সড়কের নিচের মাটি ধুয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে রাস্তা বেঁকে যাচ্ছে, ভেঙে পড়ছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকারি উদ্যোগে গ্রামীণ সড়কগুলোর ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু কিছু জায়গায় মানুষ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে সড়কের একদম পাশে পুকুর বা সেচ নালা খনন করায় রাস্তাগুলোর স্থায়িত্ব কমে যাচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক আব্দুল হান্নান বলেন, “আমরা এই রাস্তায় ফসল নিয়ে হাটে যাই। এখন পাশের পুকুরের কারণে মাটি সরে গিয়ে রাস্তা বসে গেছে। বৃষ্টি হলে পানি চলে আসে রাস্তার উপর।”

আরেকজন বাসিন্দা রোকন মিয়া বলেন, “রাস্তার পাশে পুকুর খনন করলে রাস্তার পাড় টেকে না। একটু দূরত্ব রেখে পুকুর করলে রাস্তা যেমন বাঁচে, তেমনি মানুষেরও সুবিধা হয়।”

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত পরিপত্রে বলা হয়েছে- “গ্রামীণ সড়কের ধার ঘেঁষে পুকুর, কূপ, মাটি বা সেচ নালা খনন দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাস্তার পাশে পুকুর বা নালা খননের কারণে পানির চাপ সড়কের ঢালে সরাসরি পড়ে, ফলে ধীরে ধীরে রাস্তার বেসমেন্ট দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে রাস্তায় ফাটল দেখা দেয় এবং কয়েক বছরের মধ্যেই রাস্তা ধসে যায়।

এছাড়া বৃষ্টির সময় এসব জলাধারের পানি উপচে পড়ে রাস্তায় উঠে আসে, যার ফলে যানবাহন চলাচলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে।

পরিবেশ সচেতন ব্যক্তিরা বলছেন, “উন্নয়নের স্বার্থে রাস্তাগুলোর স্থায়িত্ব রক্ষা করতে হলে জলাধার খননে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি।”

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী যেকোনো অবৈধ পুকুর বা নালা খননের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা এবং সুরক্ষা ঢাল নির্মাণের বিষয়টি বাধ্যতামূলক। যারা এসব নিয়ম অমান্য করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল বারী পূর্ণ বলেন, “অনেক যাচাই-বাছাইয়ের পর একটি সড়কের বাজেট প্রদান করা হয়। জনস্বার্থে আমরা নিয়মিতভাবে মানুষকে সচেতন করছি। সবাই যদি আইন মেনে চলে, তাহলে রাস্তা যেমন টিকে থাকবে, তেমনি উন্নয়নও হবে স্থায়ীভাবে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র সরকারি উদ্যোগ নয়— স্থানীয় জনগণ, জনপ্রতিনিধি ও ভূমিমালিকদেরও সচেতন হতে হবে। গ্রামীণ সড়ক শুধু একটি রাস্তা নয়, এটি যোগাযোগ, অর্থনীতি ও উন্নয়নের মূলধারা।

মুরাদনগরের নাগরিকদের দাবি, “আমরা উন্নয়ন চাই, কিন্তু টেকসই উন্নয়ন। তাই রাস্তার ধার ঘেঁষে পুকুর নয়— নিয়ম মেনে, দূরত্ব রেখে জলাধার তৈরি হোক।”

সড়ক টিকলে গ্রাম টিকে— আর গ্রাম টিকলে উন্নয়ন টিকে। তাই সময় এসেছে সবাইকে একসঙ্গে সচেতন হওয়ার। সংবাদ প্রকাশঃ ০৭-১০-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like)
আরো পড়ুন