
সিটিভি নিউজ।। কুমিল্লার মুরাদনগরে ফজর আলী সুদের টাকা আদায়ের অযুহাতে রাত সাড়ে ১১টায় ভিকটিম নারীর শয়নকক্ষে প্রবেশ করে। এই সুযোগে ফজর আলীকে শায়েস্তা করার জন্য ছোট ভাই শাহ পরান মব সৃষ্টির উস্কানি দিয়ে এই ঘটনা সাজায়। নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার পেছনে এবং মব সৃষ্টির উস্কানিদাতা ও মূল পরিকল্পনাকারী হলো শাহ পরান। মূলত দুই ভাইয়ের মধ্যকার দ্বন্দ্বের জেরেই ভিকটিমের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয় সামাজিক মাধ্যমে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) সকাল ১১টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন। আরও জানান এই ঘটনায় শাহ পরানকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তিনি বলেন, গত ২৬ জুন দিবাগত রাতে কুমিল্লার মুরাদনগর থানাধীন বাহেরচর গ্রামের ভিকটিম তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করার সময় একই গ্রামের শহিদের বড় ছেলে ফজর আলী কৌশলে ভিকটিমের ঘরে প্রবেশ করে। এই সময়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভিকটিমের বাড়ির আশেপাশে অবস্থান করা একই গ্রামের অনিক, আরিফ, সুমন, রমজানসহ অজ্ঞাত ১০ জন ব্যক্তি দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে ভিকটিমকে শারীরিক নির্যাতন, শ্লীলতাহানীসহ অশ্লীল ভিডিও চিত্র ধারন করে এবং পরবর্তীতে উক্ত ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এই ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানায় একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ৩ জুলাই র্যাব-১১ কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানাধীন কাবিলা বাজার এলাকা হতে উক্ত ঘটনায় মব সৃষ্টির অন্যতম পরিকল্পনাকারী মো. শাহ পরানকে (২৮) গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকালে আসামির কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনার ১৫ দিন আগে ভিকটিম তার স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসে। বাহেরচর গ্রামের শহিদের বড় ছেলে ফজর আলী ও ছোট ছেলে শাহ পরান দীর্ঘদিন যাবৎ ভিকটিমকে উত্যাক্ত করে আসছিল। ঘটনার দুই মাস আগে তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের জের ধরে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই প্রেক্ষিতে গ্রাম্য শালিসে জন সম্মূখে বড় ভাই ফজর আলী তার ছোট ভাই শাহ পরানকে চর থাপ্পর মারেন। পরবর্তীতে শাহ পরান তার বড় ভাইয়ের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সুযোগের সন্ধানে থাকে। শালিসের কিছুদিন পর ভিকটিমের মা ফজর আলীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা সুদের বিনিময়ে ধার নেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যার পরে ভিকটিমের মা-বাবা নিকটবর্তী এক ব্যক্তির বাড়িতে সনাতন ধর্মালম্বীদের মেলা দেখতে যান। এই সুযোগে ফজর আলী সুদের টাকা আদায়ের অযুহাতে রাত সাড়ে ১১টায় ভিকটিমের শয়নকক্ষে প্রবেশ করে।’
র্যাব-১১ এর অধিনায়ক বলেন, ‘এই রাতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভিকটিমের বাড়ির আশেপাশে অবস্থান করা মামলার মূল হোতা শাহ পরান ও ফজর আলীর পূর্ব শত্রু একই গ্রামের আবুল কালামসহ অনিক, আরিফ, সুমন, রমজান এবং অজ্ঞাত ১০ ব্যক্তি দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করেই ভিকটিমকে শারীরিক নির্যাতন, শ্লীলতাহানী ও অশ্লীল ভিডিও চিত্র ধারন করে এবং পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর মূল হোতা শাহ পরানসহ আবুল কালাম ও অন্যান্য আসামিরা আত্মগোপন করে। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামি শাহ পরানকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি স্বীকার করে যে, পূর্ব শত্রুতার কারণে তার ভাই ফজর আলীর উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে তার নির্দেশনা মোতাবেক অন্যান্য আসামিদের সহায়তায় ভিকটিম ও ফজর আলীকে নির্যাতন, শ্লীলতাহানী ও অশ্লীল ভিডিও চিত্র ধারন পূর্বক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটায়। গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সংবাদ প্রকাশঃ ০৪-০৭-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=