সিটিভি নিউজ।। এবিএম আতিকুর রহমান বাশার ঃ দেবীদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি/===============
কুমিল্লার দেবীদ্বারের ১০ গ্রামের মানুষকে সীমাহীন দূর্ভোগে ফেলে সড়কের কাজ না করে পালিয়েছে ঠিকাদার ।
উপজেলার ১ নং বড়শালঘর ইউনিয়নের ছোটশালঘর কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের বাস ষ্ট্যাশন থেকে সৈয়দপুর বাজার পর্যন্ত ‘পল্লী সড়ক রক্ষনা বেক্ষন প্রকল্পের’ আওতায় ১ হাজার ৫৭৬ মিটার সড়কের কাজের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়।
গত বছরের ৪ ডিসেম্বর ৮৪ লক্ষ ২৫ হাজার ৯৬৮ টাকা প্রাক্কলন ব্যয়ে কাজটি পায় ‘ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ’। চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারী কাজটি সম্পন্ন করার করার কথা থাকলেও ওই কাজ অসম্পূর্ণ রেখে ঠিকাদার কাজী মো. তসলিম পালিয়ে গেছে। সড়কের প্রায় অর্ধেক ইট-সুরকী ফেললেও বাকী অর্ধেক সড়কের বক্স কেটে ঠিকাদার কাজ ফেলে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, সড়কের কাজ ফেলে রাখায় বড়শালঘর, ছোটশালঘর, ভবানীপুর, সৈয়দপুর, অনন্তপুর, পৈরাংকুল, প্রজাপতি, এগারগ্রাম, ইউছুফপুর, মহেশপুর গ্রামের হাজার হাজার মানুষের যাতায়ত ও যোগাযোগের অন্যতম বাহন এ সড়কটি। এছাড়াও বড়শালঘর এবিএম গোলাম মোস্তফা আদর্শ ডিগ্রী কলেজ, বড়শালঘর মফিজ উদ্দিন আহমেদ ইউএমই উচ্চ বিদ্যালয়, ইউছুফপুর উচ্চ বিদ্যালয়, সৈয়দপুর আলিয়া মাদ্রাসা ছাড়াও প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্ডার গার্ডেন স্কুল, হাট-বাজারে যাতায়তকারী চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন।
ছোটশালঘর গ্রামের ভোক্তভূগী আবুল কাসেম, নূরজাহান বেগম জানান, সড়কের প্রায় আধা কিলোমিটার বক্স গর্ত কেটে ৪ মাস ধরে ফেলে রাখায় ওই গর্তে জমে থাকা বৃষ্টির পানির কারনে সড়কটি দিয়ে চলাচলে স্কুলের বাচ্চা ও কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, পথচারি ও যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, অনেকের প্রয়োজনে কাঁদা-পানি মাড়িয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়। তারা আরো জানান, পরিবহনযোগে নির্মাণ সামগ্রী আনতে না পারায়, অত্র এলাকার একটি মসজিদ ও কয়েকটি ভবন নির্মানের কাজ পড়ে আছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২ শিক্ষার্থী রোকন ও সুমন বলেন, আমরা ঘর থেকে বের হলে সড়কে পানি, তাই স্কুলে যাইনা।
আবিদ হাজারী জানান, প্রথম ঠিকাদারকে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ থেকে চাপ প্রয়োগ করলে, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজী মো. তছলিম কাজ করতে আসেন, স্থানীয় বিএনপি’র সমর্খক জহিরুল ইসলাম ও মোস্তফাসহ কয়েকজন তছলিম কাজী থেকে জোরপূর্বক কাজটি নিয়ে যায়। তারাও কাজ না করে পালিয়ে যায়।
এ ব্যপারে ‘ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ’র স্বত্বাধিকার কাজী মো. তছলিম, পরবর্তীতে কাজের দায়িত্ব নেয়া বিএনপি সমর্থক জহিরুল ইসলাম ও মোস্তফার সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কারোর সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ চন্দ্র সরকার জানান, ছোট শালঘর থেকে সৈয়দপুর বাজারের সড়কের কাজটি পায় ‘ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ’র স্বত্বাধিকার কাজী তছলিম। কাজটি সম্পন্ন করতে বিলম্ব হওয়ায়, তাকে সতর্ক করলে সে কাজটি সম্পন্ন করতে যায়। এসময় স্থানীয় বিএনপি নেতা জহির ও মোস্তফা কাজটি তাদের তত্বাবধানে করবে বলে তছলিম কাজীকে সরিয়ে দেয়। পরবর্তীতে জহির মোস্তফারাও কাজটি করেনি। পূর্বের কাজটি বাতিলের চিঠি দিয়েছি। জনদূর্বোগ নিরসনে ওই সড়কের কাজ পুন:দরপত্র আহবানে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কাজ শেষ করতে হবে। তাতে সময় লাগবে ৬ মাস থেকে এক বছর। আপাতত: বক্স কাটিংএর স্থানটি জরুরী ভিত্তিতে বালু দিয়ে পুরন করে দেব, যাতে জনগনের চলাচল করতে পারে।
এবিএম আতিকুর রহমান বাশার, ০১৭৬১৭৪০২২৭, ৩১/০৫/২০২৫ইং।
ছবির ক্যাপশনঃ দেবীদ্বার উপজেলার ‘ছোট শালঘর থেকে সৈয়দপুর বাজার’ সড়কে বক্স কাটিং করে ঠিকাদার কর্তৃক ফেলে যাওয়া অংশের বেহাল অবস্থার ছবি।