
সিটিভি নিউজ।। মানিক ঘোষ,কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)প্রতিনিধি===============
দুঃস্থ ও অসহায় বৃদ্ধা মহিলাদের আশ্রয়স্থল হচ্ছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওল্ড কেয়ার হোম যেখানে কোনো খরচ ছাড়াই থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা আছে।
এই প্রতিষ্ঠানটি ঝিনাইদহ জেলা কালীগঞ্জ উপজেলার সমসপুর গ্রামে যাহা থানা হেডকোয়ার্টার থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত । পাঁচ বিঘা জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই ওল্ড কেয়ার হোম ২০১৪ সালে রেজিস্ট্রেশন ভুক্ত হয়।বাবার ব্যবসার জন্য আমরা সবাই কালীগঞ্জ উপজেলা শহরে বসবাস করি । এ জন্য এখানে বৃদ্ধাশ্রমের প্রধান অফিস স্থাপন করি।
জ্যোৎস্না মুখার্জী নামে এক মহিলা এই প্রতিষ্ঠানটি বুড়ি ভৈরব নদীর গাঁ ঘেঁষে তার পৈতৃক সম্পত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করেন ২০১২ সালে।
তিনি জানান, শ্বশুর শাশুড়ি ও আত্বীয় স্বজনদের কারনে ১৯৮৮ সালে এস,এস, সি পাশের পর আর লেখাপড়ার সুযোগ হয়নি। শ্বশুর শাশুড়ি ও আত্বীয় স্বজনদের রেখে তিনি স্বামীর সংগে ১৯৮৯ সালে ভারতে পাড়ি জমান। সেখানে ব্যারাকপুরে এক বৃদ্ধাশ্রমে নিয়মিত যেতেন আশ্রিত মা বাবাদের এক নজর দেখার জন্য। এদের কষ্ট দেখে আমি মনস্থির করি কখনও সুযোগ পেলে এমনই একটি বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তুলবেন। স্বামীর বাবা, ভাই ও আত্বীয় স্বজনদের কারনে ১৯৯৮ সালে আবার বাংলাদেশে ফিরে আসি। দুর্ভাগ্যবশত ২০০১ সালে আমার স্বামী মৃত্যু বরণ করেন। বাবার কাছে আমার মনের কথা খুলে বলি। বাবা ঐ সময় ক্যান্সারের রোগী। আমাকে অনুমতি দিলেন অসহায়দের সেবা করার জন্য। ২০১২ সালে শুরু করি পথচলা। প্রথমে দশ কক্ষ সহ একতলা দুই টা ভবন চারটি বাথরুম ও দুটি টিউবওয়েল সহ প্রতিষ্ঠা করি। রান্না করার জন্য একটি ঘর ও আনন্দ বিনোদনের জন্য টিভির ব্যবস্থা করি। বর্তমান ওদের আচরণের অনেক উন্নতি হয়েছে।
কোনো অনুষ্ঠান যেমন ঈদ,পুজা বৈশাখী মেলায় ওদের ঘুরতে নিয়ে যাই। বৃদ্ধা মায়েদের শাড়ি কাপড়, কম্বল, সাবান, টুথব্রাশ, টুথপেস্ট, শীতের সময় সোয়েটার দেওয়া হয়। এমন কি ওষুধ সরবরাহ করি। মাঝে মাঝে গান বাজনার আয়োজন করা হয় এবং বিভিন্ন খেলার ব্যবস্থা করা হয়।একটি টাকাও আমি ওদের কাছ থেকে গ্রহন করি না। বর্তমান এখানে ২০ জন বৃদ্ধা মায়েরা আছেন। এমন কি ওদের মৃত্যুর পর যদি আত্বীয় স্বজনেরা গ্রহন না করে তবে ওদের সমাহিত করার জন্য ৮.৫০ শতক জমি বরাদ্দ রেখেছি।
এক বৃদ্ধা মা বিষ্ণু প্রিয়া ,৮০ জানান, আমি এগার বছর ধরে এখানে আছি। এখানে অনেক সুখে আছি। আমি আমার বউমা বা ছেলের বোঝা হয়ে থাকতে চায় না। জ্যোৎস্না মা আমাদের অনেক যত্ন করেন।
আম্বিয়া খাতুন,৬৫ জানান, নিজের আত্বীয় স্বজন ও এত ভালো বাসে না যেমন জ্যোৎস্না মা আমাদের করেন। সমস্ত খরচ উনি বহন করেন এবং বিভিন্ন সময়ে আমাদের শরীরের খোঁজ খবর নেন।
উক্ত ওল্ড কেয়ার হোম এর সহ সভাপতি হাসেম আলী জানান, বাংলাদেশে এমন ওল্ড কেয়ার হোম আছে কিনা আমার জানা নেই। কারন কোনো টাকা পয়সা না নিয়ে এত খরচ চালানো সত্যিই দুরহ ব্যপার । কতটা আন্তরিক হলে এটা সম্ভব। যদি কেহ চাল দান করতে চান উনি শুধু ঐ চালটাই গ্রহন করেন। এমন উদার মনের লোক আমাদের সমাজে দরকার।
মহিলা সদস্য শেফালী খাঁ জানান, এই বৃদ্ধাশ্রমের কোনো তুলনা নেই। অনেক সুখে শান্তিতে আছেন এখানকার মায়েরা। সব কিছুর ব্যবস্থা ওদের জন্য এখানে আছে।
জ্যোৎস্না মুখার্জি পরিশেষে বলেন, একটা সমস্যা আছে শুধু প্রাচীরের। কোনো উদার মনের মানুষ বা সরকার যদি একটা প্রাচীরের ব্যবস্থা করতেন তবে আমার মায়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হতো।
কালীগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ দেদারুল ইসলাম জানান, আমি কিছু দিন আগে ওল্ড কেয়ার হোম পরিদর্শন করেছি। জ্যোৎস্না মুখার্জি একটা ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। আমি চেষ্টা করবো মায়েদের জন্য কিছু করতে। সংবাদ প্রকাশঃ ২৭-০৫-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=