
সিটিভি নিউজ।। ওমর ফারুকী তাপস (লেখক)ঃঃ নিজাম উদ্দিন দুলাল কুমিল্লা শহরের মোগলটুলি এলাকার একজন কৃতি সন্তান। বহুগুণে গুনান্বিত একজন মানুষ নিজাম উদ্দিন দুলাল। কুমিল্লার নাট্যাঙ্গনের ইতিহাস লিখতে হলে নিজাম উদ্দিন দুলালের নাম বাদ দিয়ে লিখা সম্ভব না। একই এলাকার বাসিন্দা হবার কারণে আমার সাথে ওনার ছিল সু সম্পর্ক। আমি ওনাকে খুব শ্রদ্ধা করতাম তিনি আমাকে পছন্দ করতেন। স্বাধীনতার আগে ও পরের সময়ে দুলাল ভাইয়ের বাবার একটি রেষ্টুরেন্ট ছিল আমার বাসার সামনে, নাম ছিল দুলালিয়া রেস্টুরেন্ট। দুলাল ভাই নাটক ও কমেডি বেশ পছন্দ করতেন। আমার দেখায় তিনি ছিলেন একজন ব্যংক কর্মকর্তা, ভালো ফুটবল খেলোয়ার ও নাট্য অভিনেতা ও নাট্য নির্দেশক। স্বাধীনতা পরবর্তি সময়ে কুমিল্লায় নাটকের বেশ জনপ্রিয়তা ছিল। সন্ধ্যার পর নাটকের রিহের্সাল চলতো মোগলটুলি এলাকায় । দুলাল ভাই নিজে অভিনয় করে অভিনেতাদেরকে চরিত্রটি বুঝিয়ে দিতেন বেশ সুন্দরভাবে। কুমিল্লা টাউনহল মঞ্চে নাটক পরিবেশিত হতো ওনার দিক নির্দেশনায়। ঐ সময়ে দর্শকদের কাছে দুলাল ভাই ছিলেন বেশ জনপ্রিয়, অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি।। দুলাল ভাই জনতা ব্যাংকে চাকরিতে যোগদানের পর নাট্যাঙ্গনে তার উপস্থিতি কমতে থাকে। তার পরও বছরে দু একবার ওনাকে নাট্যমঞ্চে দেখাযেতো। দুলাল ভাইয়ের ছোটভাই খোকনের সাথে ৮০ দশকের শুরুতে আমার বেশ বন্ধুত্ব ছিল। সেই সুবাদে ওনাদের বাসায় আসা যাওয়া ছিল আমার। মাঝে মাঝে চকবাজার জনতা ব্যংকে গেলে ওনার সাথে দেখা হতো, কথা হতো । আমি সাংবাদিক হবার কারণে তিনি প্রায়ই আমাকে কুমিল্লার নাট্যঙ্গনের ইতিহাস নিয়ে পত্রিকায় লিখতে বলতেন। ওনার পুত্র মুকুল ও আমার পুত্র বিধান একই ক্লাশে লেখাপড়া করতো। সেই সুবাদে মুকুলকে তার বাবার কথা জিঞ্জাস করতাম। ২০১৭ সালে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমীর একটি অনুষ্ঠানে আমার সাথে দেখা হলে বেশ খুশি মনে আমার সাথে ছবি তুলেন। দুলাল ভাই গত ২০ এপ্রিল চির বিদায় নিয়ে আমাদের মাঝ থেকে চলে গেলেন। রেখে গেলেন তার এক সংগ্রামী ইতিহাস। জীবনদশায় আমরা দুলালভাইকে তেমন মূল্যায়ন করতে পারিনি। এই প্রজন্মের মানুষরা দুলাল ভাই সম্পর্কে তেমন জানেনা। দুলাল ভাই, ভালো থাকুন পরপারে। আপনার মৃত্যুর পর অনুভব করছি আপনি খুবই ভালো ও উদার মনের মানুষ ছিলেন।