চৌদ্দগ্রামে স্ত্রীকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টা, পুলিশের রহস্য উদঘাটন

সিটিভি নিউজ।। মনোয়ার হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে গত ০৩ ফেব্রুয়ারি নিজ বাড়ীতে রহস্যজনকভাবে খুন হন ঘোলপাশা ইউনিয়নের আমানগন্ডা এলাকার আব্দুল মোমিনের স্ত্রী শাহিদা বেগম (৬৫)। তাকে হত্যা করে সেনেটারী রিং এর তৈরি টয়লেটের টাংকির মধ্যে বিবস্ত্র অবস্থায় ফেলে উপরে স্ল্যাব দিয়ে ঢেকে রেখে যায় হত্যাকারী। সকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করার পর পারিবারিকভাবে তাকে দাফন করা হয়। এ ঘটনা নিহতের ছেলে মোহাম্মদ মাছুম বিল্লাহ (৪০) বাদী হয়ে থানায় একটি এজাহার দায়ের (মামলা নং-০৬, তারিখ: ০৪/০২/২০২৫ইং) করিলে থানা পুলিশ তদন্তে নামে।
মামলা রুজুর পর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং প্রাপ্ত তথ্যাদি যাচাই-বাছাই ও ঘটনার বিশ্লেষন করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিশাম উদ্দিন মো: জুনায়েদ ফোর্স সহ অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান স্বাক্ষী ও নিহতের স্বামী, স্থানীয় মসজিদের ইমাম মো: আব্দুল মোমিন (৬৮) কে  গত ২৭ মার্চ নিজ বাড়ী থেকে গ্রেফতার করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ধৃত আসামীকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। পুলিশ মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য আদালতে ধৃত আসামীর ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করলে আদালত ২দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ২১ এপ্রিল আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার হতে চৌদ্দগ্রাম থানায় আনা হয়। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আটককৃত আসামী আব্দুল মোমিন ভিকটিম শাহিদা বেগমকে খুন করার কথা স্বীকার করে এবং আদালতে এ সংক্রান্তে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ।

আসামীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ জানায়, ঘটনার আগের দিন ভিকটিম শাহিদা বেগম তার ১৩০ বছর বয়সী শ্বাশুড়ীর সাথে দূর্ব্যবহার করেন। বিষয়টি নিয়ে আসামী আব্দুল মোমিনের বৃদ্ধ মা তার কাছে নালিশ করেন। ঐদিন গভীর রাতে মেলামেশা শেষে আসামী আব্দুল মোমিন তার স্ত্রী অর্থাৎ ভিকটিমকে বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এতে ভিকটিম তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেন এবং বিভিন্ন গালমন্দ শুরু করেন। আসামী আব্দুল মোমিন ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিমের নাক-মুখ বালিশ চাপা দিয়ে কিছুক্ষণ ধরে রাখেন। এতে ভিকটিমের প্রাণহানী হলে রাত সাড়ে চারটায় নিহতের লাশ নিজ কাঁধে করে নিয়ে বাড়ীর টয়লেটের টাংকিতে ফেলে দেন এবং স্ল্যাব দিয়ে ঢেকে রাখেন। পরে আসামী নলকূপ থেকে গোসল করে মসজিদে চলে যান। মসজিদ থেকে এসে আসামী তার ছেলেকে ফোন দিয়ে বলেন, তার মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা ব্যাপক খোঁজাখুজির পর ভিকটিমের লাশ টয়লেটের টাংকিতে দেখতে পান। খোজাখুঁজির সময় আসামী সকলের সাথেই ছিলো, তাই তাকে কেউ সন্দেহ করেনি। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের লাশ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করে। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হলে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। প্রায় ৩ মাস পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ জানান, মামলার মাত্র তিন মাসের মধ্যে চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস একটি হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। বৃদ্ধ মায়ের সাথে খারাপ আচরণের ফলে স্ত্রীর উপর রাগান্বিত হয়ে বালিশ চাপা দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করেছে আসামী আব্দুল মোমিন। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা, ঘটনার বিশ্লেষণ ও অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে এ হত্যা রহস্য উম্মোচিত হল। এটিকে পুলিশি সাফল্য হিসেবে দেখছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। সংবাদ প্রকাশঃ ২৪-০৪-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like)
আরো পড়ুন