Monday, March 31, 2025
spot_img
More

    ঈদযাত্রায় ঢাকা-চট্রগ্রাম-সিলেট মহাসড়কে যানজট : ডাকাতির ও ছিনতাইয়ের আশংকা

    সিটিভি নিউজ, এম আর কামাল, নিজস্ব প্রতিবেদক নারায়ণগঞ্জ : দেশের গুরুত্বপূর্ণ দু’টি মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। প্রতিবছর ঈদযাত্রায় এই দুই মহাসড়কে যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হয় জীবিকার তাগিদে রাজধানী ও আশেপাশের জেলা শহরে অবস্থান করা ঘরমুখো মানুষকে। ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে একই শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে, এবার যানজটের পাশাপাশি গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ভঙ্গুর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে ছিনতাই ও ডাকাতির আতংকের কথাও জানিয়েছেন পরিবহন চালক ও যাত্রীরা।
    ঈদযাত্রার ভোগান্তি কমাতে মহাসড়কে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা। ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ রাখতে অনিরাপদ চিহ্নিত স্থানগুলোতে হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশেরও টহল ও অবস্থান থাকবে। এদিকে ঈদযাত্রায় যানজট কমাতে ঈদের আগে ও পরে সাতদিন মহাসড়কগুলোতে জরুরি সেবা ব্যতীত পণ্যবাহী যান চলাচল নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
    হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর রিজিওনের কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী ওয়াহিদ মুর্শেদ বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এবার যানজটের শঙ্কা কম। তবে, একলেন থেকে ছয়লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান থাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটিতে যানজটের শঙ্কা রয়েছে। এ মহাসড়কে যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।
    পরিবহন চালক, যাত্রী ও পুলিশের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর সেতুর ঢাল থেকে কাঞ্চন পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়কে প্রতিনিয়ত যানজট থাকে। এই মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশের ৩৫ কিলোমিটারে উন্নয়ন কাজ চলছে। এছাড়া, এই সড়কের সাথে সংযুক্ত একলেনের এশিয়ান হাইওয়ে (ঢাকা বাইপাস) সড়কটিরও মদনপুর থেকে গোলাকান্দাইল পর্যন্ত তীব্র যানজটের শঙ্কা রয়েছে। ২১ কিলোমিটারের সড়কটির বেহাল দশার কারণে ভোগান্তি আরও বাড়বে।
    ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের তারাব এলাকায় কথা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়াগামী সোহাগ পরিবহনের চালক মো. রুবেলের সাথে। তিনি বলেন, “এই সড়কে যানজটের লাইগা কোনো উৎসব লাগে না, সবসময়ই যানজট থাকে। তিন ঘন্টার রাস্তা পার হইতে ৬ ঘন্টাও লাগে। ঈদের সময় গাড়ির চাপ বাড়লে তো আর কথাই থাকে না। সড়কটির উন্নয়নকাজে ধীরগতির অভিযোগও করেন এ চালক।
    সরেজমিনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর, তারাব, রূপসী এলাকায় যানজট দেখা যায়। যদিও, এখনো ঈদযাত্রা শুরু হয়নি। তবে, যানজটের জন্য হাইওয়ে পুলিশের ‘উদাসীনতাকে’ দায়ি করেন এ মহাসড়কে নিয়মিত পণ্য পরিবহন করা পিকআপের চালক জনি মিয়া। তিনি বলেন, খোদার তিরিশ দিন এইখানে জ্যাম থাকে। কয়েকটা জায়গায় পুলিশ ঠিকমতো দাঁড়ায়ে থাকলেই কিন্তু জ্যাম বেশিক্ষণ থাকে না। অথচ পুলিশ থাকে তাগো ধান্দা লইয়া।
    বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুর দুইটার দিকে তার সাথে কথা বলার সময়ই গুরুত্বপূর্ণ তারাব বিশ্বরোডের মোড়ে কোনো পুলিশের উপস্থিতি না থাকার বিষয়টিও নজরে আনেন তিনি। তবে, ছয়লেনের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সম্ভবনা কম থাকলেও মহাসড়কটির সাইনবোর্ড, শিমরাইল, মদনপুর, মোগড়াপাড়া, লাঙ্গলবন্দ, মেঘনা টোলপ্লাজা এলাকায় যানজটের শঙ্কা রয়েছে। এই স্থানগুলোতে যানজটের কারণ হিসেবে সড়কের উপর গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা, টোল আদায়ে ধীরগতি, ধীরগতির ছোট যানবাহনের অবাধ চলাচল ও অবৈধ স্ট্যান্ডকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
    এ মহাসড়কে যানজটের বাইরেও ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের শঙ্কার কথা জানালেন যাত্রী ও চালকরা। আগেও এই মহাসড়কটিতে ছিনতাই-ডাকাতির মতো অপরাধমূলক কর্মকা- ঘটলেও গত বছরের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মহাসড়কটি আরও অনিরাপদ হয়ে পড়েছে।
    গত বছরের ৯ ডিসেম্বর রাতে বান্দরবান যাবার পথে এ মহাসড়কের মেঘনা টোলপ্লাজা এলাকায় ডাকাতদলের হামলার শিকার হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। যানজটে আটকে পড়া তাদের মাইক্রোবাসে হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্রের মুখে ছাত্রনেতাদের মোবাইল, মানিব্যাগ লুট করে ডাকাতদল।
    পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের হিসাবে গত ছয় মাসে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থেকে কুমিল্লার চান্দিনা পর্যন্ত এ মহাসড়কে অন্তত ১০০ ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। যার বেশির ভাগের ক্ষেত্রে কোনো মামলা হয়নি। অন্যদিকে শেষ ছয় মাসে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনায় অন্তত ১৯টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
    ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটে চলাচল করা সেন্টমার্টিন পরিবহনের সাইনবোর্ড কাউন্টারের ব্যবস্থাপক মো. হাসান বলেন, মেঘনা টোলপ্লাজা ও দাউদকান্দির পর ডাকাতির শঙ্কা বেশি থাকে। রাতের বেলা হাইওয়ের দুইপাশ থেকে ডাকাতদল এসে প্রায়ই গাড়ি থামিয়ে ডাকাতির চেষ্টা করে। ঈদের যাত্রায় এই প্রবণতা আরও বেড়ে যায়। অনেকক্ষেত্রে গভীর রাত কিংবা ভোরে মহাসড়কে নামার পর গন্তব্যে পৌঁছানোর পথে ছিনতাইয়ের শিকার হন যাত্রীরা।
    এছাড়া, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মাধবদীর পর থেকেও সড়কটি খুব অনিরাপদ জানিয়ে নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে ডাকাতপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে পুলিশের পাশাপাশি সেনা টহলেরও দাবি জানান হাসান। যদিও, ডাকাত ও ছিনতাইপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে পুলিশের স্থায়ী চেকপোস্ট থাকবে বলে জানিয়েছেন
    ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ আবু নাঈম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ঈদযাত্রা ভোগান্তিহীন ও নিরাপদ করতে হাইওয়ে পুলিশের প্রতিটি থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে অতিরিক্ত পুলিশ ইতোমধ্যে মোতায়েন রয়েছে। যেসব স্পট বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত হয়েছে সেগুলোতে ফিক্সড পেট্রোল থাকবে। সংবাদ প্রকাশঃ ২৭-০৩-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=

    আরো সংবাদ পড়ুন

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -
    Google search engine

    সর্বশেষ সংবাদ

    Recent Comments