Tuesday, February 4, 2025
spot_img
More

    মানবিক ফেরিওয়ালা মিরাজুল হক মরণোত্তর দেহদান অসহায়দের খাওয়ান ফ্রি খাবার জ্ঞানের আলো ছড়াতে এলাকায় প্রতিষ্টিত করেছেন এক পাঠাগার

    সিটিভি নিউজ।। মানিক ঘোষ,নিজস্ব প্রতিনিধি====================
    মৃত্যুর পর দেহের অংশ চক্ষু ও কিডনি সহ নানা অঙ্গ প্রত্যাঙ্গ মানুষের কল্ল্যানে বিলিয়ে দেবার ঘোষনা দিয়েছেন এক মানবিক মানুষ। গত ২৩ জানুয়ারী এক ঘোষণাপত্র রোটারী পাবলিকে এভিডেভিট করে মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গিকার করে মানবতার এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ফুটপাতের হকার ফেরিওয়ালা মিরাজুল হক মোল্ল্যা । এমন মহৎ কাজের পাশাপাশি দরিদ্র হকার মিরাজুলের রয়েছে আরো অনেক মানবিক কাজের দৃষ্টান্ত। তিনি নিজ অর্থে এলাকার ভবঘুরে পাগল ও অসহায় মানুষের জন্য ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা করা ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার স্থাপনসহ গড়ে তুলেছেন করেছেন দু’টি মানবিক প্রতিষ্টান।
    ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের এম ইউ কলেজ পাড়ার মৃতঃ ইব্রাহিম মোল্ল্যার ছেলে মিরাজুল হক পেশায় একজন ফেরিওয়ালা (ভ্রাম্যমাণ হকার)। তার স্ত্রী জুলেখা বেগম শহরের অগ্রনী ব্যাংকের একজন পরিচ্ছন্নকর্মী। মানবতার প্রেমিক হকার মিরাজুলের পরিবারেও জন্ম হয়েছে দুই উজ্জল নক্ষত্র। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তানের মধ্যে মিরাজুলের বড় পুত্র জাহাঙ্গীর আলম ৪১তম বিসিএস ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত। ছোট ছেলে আলমগীর হোসেন ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের বিশ্ব ধর্ম ও সাংস্কৃতিক বিভাগের ছাত্র ও জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড়। আর দুই মেয়ে সারমিন সুলতানা মিনা ও সারমিন সুলতানা মুক্তাকে আগেই বিয়ে দিয়েছেন।

    মরোনত্তোর দেহদান নিয়ে ষাটোর্ধ বয়সের মিরাজুল হক বলেন, মৃত্যুর পর আমার মৃতদেহটি মাটিতে পুঁতে ফেলা ছাড়া পরিবারের সদস্যদের কোন কাজেই আসবেনা। তিনি বলেন, বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানে যথেষ্ট উন্নতি সাধিত হয়েছে। মৃতদেহের বিভিন্ন অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ অন্যদেহে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে চিকিৎসা বিজ্ঞান দ্বারা মানব কল্যানে কাজে আসে। এজন্য তার মৃতদেহটি কোন মানব কল্যাণ গবেষণায় ব্যবহার করাসহ যে কোন মানুষের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবার সুযোগ আছে। এসব উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণ সহ মানবতার সেবার উদ্দেশে মিরাজুল তার মরণোত্তর দেহ এবং চক্ষুদান করার ঘোষনাটি দিয়েছেন।

    মিরাজুল আরো বলেন, মরণোত্তর দেহ দান করা একটি মানবিক ও মহৎ কাজ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের নিত্য নতুন উচ্চতর গবেষণার জন্য আমার দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা মানব কল্যাণে ব্যবহার হবে। তার মৃতদেহটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ মেডিকেল শিক্ষাদান ও চিকিৎসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান” বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে স্বেচ্ছায় আমার মরণোত্তর দেহদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেখান থেকেই আমার চুক্তিবদ্ধ অনুয়ায়ী সন্ধানী জাতীয় চক্ষু সমিতি বাংলাদেশ কে চক্ষু প্রদান করিতে হইবে।

    মিরাজুল হকের জীবন সংগ্রাম ছিল আরো কঠিন। হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম মিরাজুলের পরিবারের অসচ্ছলতায় অভাবের সংসারে ১৪/১৫ বছর বয়েসেই তাকে নামতে হয় হকারী পেশায়। শহরের বাসষ্টান্ডে পরিবহন গাড়ীতে গাড়ীতে বাদাম, চানাচুর, তিলের খাজা, শোষা, রুমাল সহ নানান ধরনের সামগ্রী বিক্রি করে বেড়াত। ১৯৮৮ সাল থেকে এখনো ওই পেশায় যুক্ত আছেন তিনি। মিরাজুল বলেন, নিজে লেখাপড়া শিখতে না পারলেও এই পেশার আয় দিয়েই তিনি তার দুই ছেলেকে সর্ব্বোচ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। ছেলেদের অভাবনীয় সাফল্যের অবদানে মিরাজের স্ত্রী জুলেখা বেগমকে দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে রতœগর্ভা মায়ের সন্মাননা স্বারক।

    মানবিক মনের অধিকারী মিরাজুল হকের পরিবারে অভাব অনটন থাকলেও সমাজের অসহায়দের মানুষদের জন্য করে থাকেন মহত কাজ। তিনি সমাজের ভবঘুরে পাগল ও অসহায়দের মানুষদের জন্য ”জাগ্রত হোক মানবতা “ নামে গড়ে তুলেছেন একটি সেবামুলক মানবিক কল্যান সংস্থা। সেখানে প্রতিদিন দুপুর ১২ টা থেকে রাত ৮ টা পষন্ত পাগল ও অসহায়দের জন্য ফ্রি খাবার খাওয়ানো হয়। যার সম্পূণ ব্যায় বহন করেন হকার মিরাজুল। শহরের কলেজ পাড়াতে প্রতিষ্টিত ওই সংস্থাটির সাইনর্বোডে লেখা রয়েছে, ক্ষুধা লাগলে খাবার খেয়ে যান, বাড়ীতে অসহায় মানুষ থাকলে নিয়ে যান।
    এমন মানবিক কাজের বিষয়ে মিরাজুলের ভাষ্য, তিনি বাসষ্টান্ডে গাড়ীতে গাড়ীতে ফেরি করেন বেড়ান। সেখানে দেখেছেন অনেক ভবঘুরে পাগল অসহায় মানুষেরা ক্ষুধার তাড়নায় ছটফট করতে। ৯৮ সালে তারও শাররিক কিছুটা সমস্যা দেখা দেওয়ায় এলাকার মানুষ তাকে পাগল বলে আখ্যায়িত করেছিল। মিরাজুল বলেন, পাগলদেরও ক্ষুধা পায়। তাদের সেই কষ্ট দেখেই ইচ্ছা জাগে পাগলদের খাবারের জন্য কিছু একটা করবেন। সেই থেকে তিনি তার সেবামুলক প্রতিষ্টানের মাধ্যমে পাগলদের খাওয়াচ্ছেন।

    আরেক মানবিক কাজের দৃষ্টান্ত আছে মিরাজুল হকের। দরিদ্র পরিবারে জন্ম মিরাজুলের অর্থাভাবে প্রাথমিকের গন্ডি পেরোতে পারেনী। নিজের লেখাপড়া না শেখার কষ্ট লাঘবে তার আদম্য ইচ্ছা ছিল শত কষ্ট হলেও সন্তানদের লেখা শেখাবেন। তিনি সেটা পেরেছেন। এরই পাশাপাশি তার স্বপ্ন ছিল এলাকায় শিক্ষা ও জ্ঞানের আলো ছড়াতে একটি গন পাঠাগার প্রতিষ্টিত করবেন। তার সেই আশা পূরনেই ১০ বছর আগে প্রতিষ্টা করেছেন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার। সেখানে নিজ অর্থে কিনেছেন কয়েকশত বই। পরবতীতে সমাজের হৃদয়বান মানুষের সহায়তায় পাঠাগারটিতে বাড়িয়েছেন বইয়ের সংখ্যা। র্বতমানে পাঠাগারটির কাষক্রম চলমান আছে। সংবাদ প্রকাশঃ ০৩-০২-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= ==আরো =বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে নিউজ লিংকে ক্লিক করুন=

    আরো সংবাদ পড়ুন

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -
    Google search engine

    সর্বশেষ সংবাদ

    Recent Comments