সিটিভি নিউজ।। মোঃ অপু খান চৌধুরী।।সংবাদদাতা জানান ====
গ্রাম-বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির একটি অংশ ছিল এক সময়ের কাচারিঘর।
কালের বিবর্তে বাঙ্গালীর সংস্কৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে কাচারিঘর। এক সময়ের এ কাচারিঘর বর্তমান সময়ের গেস্টরুম কিংবা ড্রয়িং রুম স্থান দখল করে নিয়েছে।
৯০ দশকের পূর্বে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের ছিল কাচারিঘর। বাইরের লোকজন যেন অন্দরমহলের নারীদের দেখতে না পান, সে জন্যই মূলত বাহির বাড়িতে স্থাপিত হতো এই ঘর। কাঠের কারুকাজ করা টিন অথবা ছনের ছাউনি থাকত ঘরের চাল।
বর্তমান সময়ে গ্রাম-গঞ্জের হাতেগোনা দু’একটা বাড়িতে কাচারি ঘরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। তবে তা পড়ে আছে জরাজীর্ণ অবস্থায়। ৯০ দশক পর্যন্ত বাঙ্গালী ও ধর্মীয় নানা সংস্কৃতির সঙ্গে এই কাচারি ঘর অনেকাংশে জড়িত ছিল।
পূর্বপুরুষরা কাচারি ঘরে বিয়ে-সাদী, সালিশ-বৈঠক, গল্প-আড্ডায় বসতেন। সকাল বেলায় ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের আরবি পড়ার জন্য মুক্তবের ব্যবস্থা থাকতো কাচারি ঘরে। এ ঘরেই রাতযাপন করতেন বেড়াতে আসা অতিথিরা।
বিপদে পড়লে পথচারী বা মুসাফিররা রাতযাপনের ব্যবস্থা থাকত কাচারি ঘরে। অনেক সময় জায়গীর বা লজিং মাস্টারও এ ঘরে থাকতেন। কাচারিঘরে বাড়ির স্কুল-কলেজগামী ছেলেরা পড়াশোনা করতো। দিনের বেলা কাজের শ্রমিকরা ক্লান্তি দূর করতে বিশ্রাম নিতো এই কাচারি ঘরে। বর্তমান সময়ে ড্রয়িং রুমে বসে টিভি দেখার মতো গ্রামের লোকজনদের উপস্থিতিতে কাচারিঘরে বসত পুঁথিপাঠ।
তবে কালের বিবর্তনে বাঙালি সংস্কৃতির নানা অনুষঙ্গের মতো হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কাচারি ঘর। নব্বই দশকেরও আগে প্রায় গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতেই ছিল কাচারি ঘর, যা এখন নেই বললে চলে।
সিদলাই আমির হোসেন ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, বর্তমানে ড্রয়িংরুমে সাজসজ্জার মাধ্যমে যেমন পরিবারের আভিজাত্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ঝাড়বাতি, সোফা সেট, অ্যাকিউরিয়াম, ইন্টেরিয়র, রুচিশীল ছবি দিয়ে মনোমুগ্ধকরভাবে সাজানো হয় অতিথিশালা বা ড্রয়িংরুম। একসময় এ কাচারি ঘর ছিল অভিজাত্যের প্রতীক।
উপজেলার ধান্যদৌল গ্রামের ৭৫ ঊর্ধ্ব বয়সের সিদ্দিকুর রহমান বলেন এক সময়ে গ্রামের প্রায় প্রতিটা বাড়িতে কাচারি ঘর ছিল, এখন কয়েকটি বাড়িতে জরাদীর্ণ অবস্থায় কাচারি ঘর রয়েছে। কিন্তু কাচারি ঘর থাকলেও কোন কার্যক্রম এখন নেই। ঘরগুলি রয়েছ পরিত্যাক্ত অবস্থায়।
সংবাদ প্রকাশঃ ২৩-০১-২০২৫ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন=