সিটিভি নিউজ।। গাজী জাহাঙ্গীর আলম জাবির, বুড়িচং, কুমিল্লা।।==============
কুমিল্লার অন্যতম শষ্য ভান্ডার গোমতীর বিস্তির্ণ চর। প্রতি বছর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বিপুল পরিমান পলি বহন করে চরের জমিতে সমৃদ্ধ করায় এখানকার মাটি উর্বর। নদীটি ভারত থেকে কুমিল্লা সদর উপজেলার কটকবাজার সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর বুড়িচং, ব্রাহ্মনপাড়া,দেবিদ্বার,মুরাদনগর,তিতাস হয়ে দাউদকান্দির সাপটায় মেঘনা নদীতে মিলিত হয়। নদীর চর এলাকায় সারা বছরজুড়ে নানা ফসল উৎপাদন করছে কৃষক। আর কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা উত্তর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে শত শত জমির মালিকরা পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরাতে বর্ষা পরবর্তী শুস্ক সময়ে উচ্চ ফলনশীল জাতের মরিচ উৎপাদন করতে চরের জমিতে ব্যস্ত সময় পার করছে।
জেলার বুড়িচং উপজেলার গোমতী নদীর পশ্চিম তীরের ভারেল্লা উত্তর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রাম। এই মৌসুমে যদি বলা হয় এটি মরিচের গ্রাম তাহলে ভুল হবে না। রামচন্দ্রপুর গ্রামের নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের যেদিকে চোঁখ সেদিকেই শত শত একর জুড়ে মরিচের চাষ। রামচন্দ্রপুর গ্রামের ঈদগাহ মাঠে ক্লান্ত শাহী রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান ও জালালের সাথে কথা হয়। তারা জানান, আশিনের শেষ দিকে চর শুকিয়ে গেলে তারা মরিচ চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তারা আরো বলেন, জমির মাটি নরম থাকায় জমি তৈরীতে খুব একটা সময় লাগে না। এরপর প্রয়োজনীয় সার প্রয়োগসহ জমি চাষাবাদের উপযোগী করে মরিচের চারা রোপন করি। তারা বলেন, মরিচ লাগানোর সময় হলেই বেসরকারী বীজ কোম্পানীর মাঠ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা তাদের বীজ ক্রয় করতে কৃষকদেও সাথে প্রতিযোগীতায় নেমে পড়েন। তবে বিগত সময়ে অপেক্ষাকৃত নিম্ন মানের বীজ চাষাবাদে কাঙ্খিত ফসল উৎপাদন করতে না পারায় অনেকটা সতর্ক রয়েছেন তারা। এ অবস্থায় তারা প্রায় প্রত্যেকেই ১৭০১ ডিজি এবং বিজলী প্লাস জাতের উচ্চ ফলনশীল মরিচের চারা রোপন করেন। রোপনের ৩৫/৪০ দিনের মধ্যেই ফুল এবং মরিচ আসতে শুরু করে। আর মোটামুটি দেড়মাসের মধ্যেই উৎপাদিত মরিচ বাজারজাত করা যাচ্ছে। এখানকার কৃষকরা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই কাচাঁ মরিচ বাজারজাত করে। কিছুটা মরিচ শুকিয়ে পরিবারের চাহিদা মেটালেও বেশীরভাই কাচাঁ অবস্থায় বিক্রি করেন। কৃষক আব্দুল আলীম, আবুল হোসেন,আব্দুল কাদের জানান, রামচন্দ্রপুর গ্রামের কমপক্ষে দু’শতাধিক পরিবারের লোকজন উচ্চ ফলনশীল জাতের মরিচ উৎপাদন করছেন। রিপন,আলিম,খোরশেদ, ছাদেক, ফখরুল, আনিস, সেলিম, নোয়াব, আলী আহমেদ, ইকবাল, দেলোয়ার, ইসমাইল , আবুল হোসেন, বাশার প্রমুখের নাম উল্লেখ করে কৃষক হাবিবুর রহমান আরো জানান, চরের চারিদিকে চোঁখ যতদুর যাবে সেসব জমিতে শুধুই মরিচ চাষে উল্লেখিত কৃষকরা কখনো তাদের পরিবারের সদস্য কখনো বা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে শ্রমিক এনে কাজ করাচ্ছে। পুরো গ্রাম জুড়ে মরিচ চাষের উন্মাদনা দেখা গেলেও আড়ালে থাকা এসব কৃষকদের দুঃখের কথাও বেড়িয়ে আসে একসময়। প্রথমে কৃষক হাবিবুর রহমান ও জালাল ,পরবর্তীতে আব্দুল কাদেরসহ আরো অনেকেই জানান, গত আগষ্ট মাসে বন্যায় এই চরে তাদের চাষকৃত ধান পানিতে তলিয়ে যায়। সরকারী-বেসরকারী কোনভাবেই তাদেরকে কোন সাহায্য সহযোগীতা করা হয়নি। একই ভাবে মরিচ চাষ করছি। লাভ লস সব আমাদের। সার,কীটনাশক,বীজ সব নিজ দায়িত্বে আমরা কিনে চাষাবাদ করছি। সরকারীভাবে কোন সাহায্য সহযোগীতা,পরামর্শ বা প্রনোদনা কিছুই পাচ্ছি না, এমনকি সরকারী অফিসের লোকজনের চেহারাও আমরা এ বছর দেখি নাই। নিজের পরামর্শ,বুদ্ধি দিয়েই চাষাবাদ করার কথা জানিয়েছেন কৃষক আব্দুল আলিম,আবুল হোসেন ,আব্দুল কাদের। আর এভাবেই একদল সংঘবদ্ধ কৃষকের প্রানান্ত চেষ্টায় রামচন্দ্রপুর গ্রামটি বিখ্যাত হয়ে উঠছে উচ্চ ফলনশীল ১৭০১ডিজি এবং বিজলী প্লাস মরিচ উৎপাদনে । কৃষকদের সহায়তার বিষয় জানতে চাইলে বুড়িচং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরিনা আক্তার জানান, কৃষকদের আমরা বিভিন্ন ভাবে সাহায্য সহযোগীতা করি। মাঠ পর্যায়ে সবসময় খবরাখবর নেই। তবে স্বল্প পরিসরের প্রনোদনা সবার কাছে পৌঁছে না বলে কৃষকরা অনেক অভিযোগ করে। সংবাদ প্রকাশঃ =০২-১২-২০২৪ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ক্লিক করুন=
বুড়িচংয়ের রামচন্দ্রপুর গ্রামে মরিচ চাষে বাম্পার ফলনের আশা
আরো সংবাদ পড়ুন