Sunday, December 22, 2024
spot_img
More

    গোমতীর চরে কৃষকদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা (কুমিল্লা সদর, বুড়িচং সহ বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন)

    সিটিভি নিউজ।। গাজী জাহাঙ্গীর আলম জাবির, বুড়িচং, কুমিল্লা।। সারা বছর ব্যাপী কৃষকরা বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করে নিজেদের ভাগ্য বদলের পাশাপাশি স্বনির্ভর দেশ গঠনে ভূমিকা রাখছে। বিগত প্রায় দু’দশক গোমতীর চরাঞ্চল প্লাবিত না হওয়ায় কৃষকরা নিরাপদেই চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করলেও চলতি বছরে অতি বৃষ্টির সাথে পাহাড়ি ঢলে গোমতীর চরাঞ্চল প্লাবিত হয়। তলিয়ে যায় হাজার হাজার একরের ফসলী জমি। চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয় কৃষকরা। তবে,পানি কমে গেলে চরের চাষীরা আবার ঘুরে দাড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তবে,খেয়াল নেই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
    ভারত থেকে আসা কুমিল্লার প্রধান নদী গোমতী জেলার কটকবাজার সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে জেলার আদর্শ সদর, বুড়িচং,ব্রাহ্মনপাড়া,দেবীদ্বার,মুরাদনগর,তিতাস হয়ে দাউদকান্দির সাপটা নামক স্থানে মেঘনা নদীতে মিলিত হয়। প্রতিবছর ওপার থেকে আসা নদীটি বর্ষাকালে বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে বিপুল পরিমান পলি বহন করে উর্বর করে গোমতীর চরাঞ্চল। আর সেই উর্বর জমিতে চাষীরা ধান, গম, ভূট্টা, ইক্ষু, পাট, আলু, নানা জাতের শাক-সব্জিসহ শীতকালীন বিভিন্ন তরি-তরকারি উৎপন্ন করে আসছে বছরের পর বছর ধরে। দায়িত্বশীল সূত্র মতে সীমান্তের ওপারে ভারত নদীতে একাধিক বাঁধ দেওয়ায় নদীটি বছরের বেশির ভাগ সময়ই পানি কম থাকে। এতে বিগত বছরগুলোতে নদী তীরের কৃষকরা নিশ্চিন্ত মনে বারো মাসই বিভিন্ন প্রকারের ফসল উৎপাদন করে আসছিল। চলতি বছরে আমাদের দেশ ও ভারতে অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে গোমতীর দু’কূল ছাপিয়ে যায় পানিতে। এতে চরের পুরো অংশ পানিতে তলিয়ে গেলে সর্বস্বান্ত হয় কৃষক। পরবর্তীতে চরের পানি নেমে গেলে আবারো ভ্যাগ্য ফেরাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে নদী তীরের কৃষকরা। এসময় কৃষকরা আগাম ও দ্রুত ফলনশীল সব্জি উৎপাদনে ঝুঁকে পড়ে। রোপন করে লালশাক ,ডাটা শাক,পুঁই শাক,মুলাসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসব্জি। সরেজমিন গোমতীর কুমিল্লা সদরের আমতলী, নিশ্চিন্তপুর, কাইচ্চাতলী বুড়িচংয়ের সমেষপুর,বাগিলারা, বাজেবাহেরচর, ভান্তি,পূর্বহুরা, বালিখাড়া,কামাড়খাড়াসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায় কৃষকদের ঘুরে ঔদাড়াবার দৃশ্য। নদীর দু’কূল ছাপিয়ে সৃষ্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা যখন নতুন করে আবারো ভাগ্য ফেরাতে ব্যস্ত,তখন চরাঞ্চলের উল্লেখিত স্থানগুলোর কৃষকদের ভরসা নিজেরাই। আমতলী,নিশ্চিন্তপুর, এলাকার চরে চাষাবাদে ব্যস্ত নান্টু নামের এক কৃষক জানান, সরকারী পর্যায়ে কেউই কোন খবর রাখেনি বা নিতে আসেনি। বন্যা পরবর্তীতে মাঠ চাষাবাদের উপযোগী করে গত প্রায় ১৫ দিন আগে তিনি চরের প্রায় ১০ একরেরও বেশী জায়গাজুড়ে মুলা চাষ করেছেন। কিছু অংশে করেছেন লাল শাক ও ডাটা শাক। এরই মাঝে তার আবাদ করা মুলা ও লাল শাক বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে তিনি জানান, জমি তৈরীর কাজ শেষ পর্যায়ে, কয়েক দিনের মধ্যেই আলু রোপন করবো। তিনি বলেন, আমতলী,নিশ্চিন্তপুর, এলাকায় তিনিসহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্য জাহাঙ্গীর,শাহআলম,রুবেল,হালিম,আব্দুল এ মৌসুমে প্রায় ২০ একরের বেশী জমিতে সব্জিসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করছেন। একই দৃশ্য উল্লেখিত বুড়িচং অংশের চরের। সেখানেও এমুহুর্তে কৃষকরা ব্যস্ত লাল শাক,ডাটা শাক,মুলা চাষে। কৃষক মালু মিয়া বলেন, শাক,মুলা দ্রুত বর্ধনশীল তথা অল্প সময়ে বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠায় বন্যা পরবর্তী চাষীরা প্রাথমিক লাভের আশায় চরের বিস্তির্ণ এলাকাজুড়ে এসব রি-তরকারীর চাষ করেছেন। তারা জানান,বন্যা পরবর্তী স্বল্প সময়ে অনেকেই বাজারে তরকারীর উচ্চ মুল্য দেখে অধিক লাভবান হতে এরই মাঝে ছোট আকারের মুলা,লাল শাক,ডাটা শাক বাজারে বিক্রি করা শুরু করেছেন।এতে লাভ ও হচ্ছে ভালো। তবে,একাধিক কৃষক আক্ষেপ করে বলেন, সরকার কৃষকদের নানাভাবে সাহায্য-সহযোগীতা করলেও আমাদের আমতলী,নিশ্চিন্তপুর,কাইচ্চাতলী এলাকার চরাঞ্চলের কয়েক শত একর জমি চাষাবাদ করা কৃষকদের জন্য কখনো কোন সরকারী প্রনোদনা বা সাহায্য করতে আসেনি,আমরা পাই নি । বন্যা পরবর্তী গোমতীর চরের কৃষকদের অবস্থা জানতে চাইলে, কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ জানান, গত আগষ্ট মাসের মাঝামাঝি বন্যায় গোমতীর চরের কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হলেও এখানকার পরিশ্রমি কৃষকরা বন্যা পরবর্তী দ্রুততম সময়ে চরে শাক-সব্জির আবাদ শুরু করে ঘুরে দাড়াবার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, গোমতীর চরের সব্জি কুমিল্লার মানুষের চাহিদার বিরাট একটা অংশ পূরন করে।

    ক্যাপশনঃ কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার কাচিয়াতলী এলাকার গোমতীর চর থেকে তোলা ছবি। সংবাদ প্রকাশঃ ২৩-১০-২০২৪ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ক্লিক করুন=

    আরো সংবাদ পড়ুন

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -
    Google search engine

    সর্বশেষ সংবাদ

    Recent Comments