সিটিভি নিউজ।। নেকবর হোসেন কুমিল্লা প্রতিনিধি==================
কুমিল্লার বন্যা কবলিত ১৪টি উপজেলার মধ্যে বেশ কিছু উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও অবনতি হয়েছে দুটিতে। অপরিবর্তিত রয়েছে আরও দুটি উপজেলা। তবে গোমতি নদীর পানি কমে বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হওয়ায় স্বস্তিতে আছে নদীপাড়ের বাসিন্দারা। তবে মনোহরগঞ্জের ডাকাতিয়া নদীর বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে রয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে থেকে নেমে আসা ঢলে পানিতে কুমিল্লার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টিই বন্যা কবলিত হয়। পানি কমতে থাকায় অনেক উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও অবনতি হয়েছে মনোহরগঞ্জ ও নাঙ্গলকোট উপজেলায়। এ দু উপজেলায় আকস্মিক বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। ভঙ্গুর যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে উপজেলাগুলোতে যাচ্ছে না ত্রাণ। খাদ্য সংকটে বাড়ছে হাহাকার।
মনোহরগঞ্জ উপজেলার মাতুয়ারা খামারবাড়ি এলাকার বাসিন্দা রহমান মিয়া। নিজ বাসায় বৃষ্টিতে ভিজে অনাহারে-অর্ধহারে দিনযাপন করেছেন গত ছয় দিন ধরে। খাবারের জন্য বাড়ি-ঘরের মায়া ছেড়ে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে যাচ্ছেন নিলকান্ত সরকারি ডিগ্রি কলেজে।
মতুয়ারা গ্রামের আরেক বাসিন্দা রউফ মিয়া বলেন, পানি কিছুটা কমতে থাকলেও গেল দুদিন হঠাৎ পানি বেড়ে যায়। খাদ্য না থাকা ও পানি বেড়ে যাওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসি।
বসুয়ারা গ্রামের বাসিন্দা ডেকোরেটর শ্রমিক মরন দেবনাথ তাঁর অসুস্থ শিশুকে নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নেন চিকিৎসা নিতে। সেখানে পাননি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা। আকস্মিক পানি বেড়ে যাওয়া তাদের মতো এমন অনেকে আসছেন এ আশ্রয় কেন্দ্রে।
নিলকান্ত সরকারি ডিগ্রি কলেজ আশ্রয়কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবক জাহিদুল ইসলামি বলেন, ‘এ আশ্রয় কেন্দ্রে ৬৬২ জন আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে ২২০ শিশুসহ চারজন অন্তঃসত্ত্বা রয়েছেন। গেল দুদিন পানি বাড়ায় আরও মানুষ আসছে, আমাদের জায়গা সংকুলান হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘জেলা সদর থেকে অনেক দূরের উপজেলা ও ভঙ্গুর সড়কের কারণে এখানে সহজে কেউ ত্রাণ দিতে আসে না। স্থানীয় যুবকেরা মিলে এলাকায় খাবারের ব্যবস্থা করছি। আমরা আর পারছি না তাই কষ্ট হলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ সহায়তাসহ শিশু খাদ্য নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই।’
এদিকে গোমতির বাঁধ ভাঙায় ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়া বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি রয়েছে অপরিবর্তিত। তবে বিভিন্ন স্থান থেকে ত্রাণ আসায় সংকট নেই এ উপজেলায়।
এদিকে পানি কমতে শুরু করায় উপজেলা প্রশাসন থেকে বন্যা পরবর্তী সব উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহিদা আক্তার।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১০ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ পানিবন্দী আছে। ৭২৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৭৮ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ২২৫টি মেডিকেল টিম এদের চিকিৎসা দিচ্ছে। জেলা প্রশাসন থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩৩ লাখ নগদ টাকা ও ৬০০ মেট্রিকটন খাদ্য।
মনোহরগঞ্জ ইউএনও উজালা রানী চাকমা বলেন, জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা, ফেনী ও নোয়াখালীতে পানি কমে আমাদের জলাঞ্চল উপজেলা মনোহরগঞ্জে প্রবেশ করছে, ফলে পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে। হঠাৎ বন্যা উপজেলার ৯০ ভাগ প্লাবিত হয়েছে। ১০ ভাগ হয়তো উঁচু স্থান বা রাস্তাঘাট হবে। দুর্গম উপজেলা হওয়া এখানে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে কেউ আসে না।
ইউএনও আরও বলেন, ‘আমাদের সরকারি বরাদ্দ ৩ লাখ টাকা ও ২০ মেট্রিকটন খাদ্য অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। বন্যা কবলিত মানুষগুলো খাদ্য সংকটে হাহাকার করছে। এ জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ দেশের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, গোমতির পানি বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ১৩২ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল, মঙ্গলবার বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপরে দিয়ে প্রবাহিত হয়। আজ বুধবার গোমতির পানি বিপৎসীমার ২২ নিচে নেমে গেছে। তবে বেড়েছে ডাকাতিয়ার পানি। সংবাদ প্রকাশঃ =২৯-৮-২০২৪ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ক্লিক করুন=