সিটিভি নিউজ।। বিল্লাল হোসেন, মুরাদনগর থেকে :=================
পরিবারের সদস্যদের না জানিয়েই আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। প্রথম দিকে পুলিশের গুলিতে কয়েকজন শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার পর তার পরিবার জানতে পারে যে, সে আন্দোলনের সমন্বয়ক। তখন আসিফ মাহমুদকে বাড়িতে ফিরে আসতে অনুরোধ করে বাবা, মা ও বোনেরা। পরিবারের সদস্যদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে আসিফ বলেন, আমার অনেক ভাই-বোন পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছেন, আমি আন্দোলন থেকে ফিরে আসবো না। হয় গুলি খেয়ে মরবো, না হয় আন্দোলন সফল করে ঘরে ফিরবো। এরপর থেকেই আসিফ মাহমুদের পরিবারে আতংক আর উৎকন্ঠা শুরু হয় বলে জানান তার ছোট বোন ইফাত জাহান লামিয়া। তিনি আরো বলেন, ৫দিন নিখোঁজের সময় তার মা, বোনসহ পরিবারের সকলের অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে যায়। ঘরে রান্নাবান্নাও হয়নি তখন, বন্ধ থাকে সকলের খাওয়া দাওয়া। আমরা লাশ ঘরে গিয়েও ভাইকে অনেক খুজেছি। আন্দোলন সফল হওয়ায় আমাদের অনেক ভাল লাগছে। আমরা চাই এমন খুনি, ফ্যাসিবাদী সরকার আর কখনো না আসুক।
জানা যায়, কোটা সংস্কারের লক্ষে শুরু হওয়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ঢাবি শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন আকুবপুর গ্রামের সন্তান। তার পিতা মো: বিল্লাল হোসেন আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভূইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তার মাতা রোকসানা আক্তার একজন গৃহিনী। আসিফ মাহমুদ তার পিতা-মাতার একমাত্র পুত্র সন্তান। তার বড় একজন ও ছোট দুইজন বোন রয়েছে।
আসিফ মাহমুদের স্কুল শিক্ষক পিতা বিল্লাল হোসেন জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। অজানা আতংক আর উৎকন্ঠা নিয়ে প্রতিদিন আসিফ মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করি। কিন্তু ১৯ জুলাই তার সাথে সকল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তার পর বিভিন্ন যায়গায় তাকে খোঁজ করেও পাইনি তখন আমরা এক প্রকার দিশেহারা হয়ে যাই। ২৩ জুলাই পত্রিকায় খবর প্রকাশ হয় আসিফ মাহমুদকে গুম করা হয়েছে। তারপর আমরা শাহবাগ থানায় নিখোঁজ ডায়েরী করতে গেলে ওসি আমাদের জিডি নেয়নি। সেখান থেকে যাত্রাবাড়ী থানায় যাই, সেখানেও একই ভাবে আমাদের ফিরিয়ে দেয় পুলিশ।
তারপর ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে প্রতিটা ওয়ার্ডে খোঁজ করি, কিন্তু আসিফমাহমুদের কোন সন্ধান না পেয়ে হাসপাতালের লাশ ঘরে গিয়ে খোজাঁখুজি করেও পাইনি। তারপর প্রেসক্লাবে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আসিফ মাহমুদের গুমের বিষয়টি দেশবাসীকে জানাই। পরদিন ২৪ জুলাই হাতিরঝিল এলাকায় আসিফ মাহমুদকে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায়। এ সময় তাকে গনস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিলে সেখান থেকে ২৬জুলাই পুলিশ পরিচয়ে আবারো তাকে তুলে নিয়ে যায়। ২৭ জুলাই ডিবি কার্যালয় থেকে ফোন করে জানায় আপনার ছেলে ডিবি কার্যালয়ে আছে এসে দেখে যান। আমি আর আসিফের মা সেখানে গিয়ে দেখা করলে তাদেরকে ছেড়ে দিবে বললেও পরে আর ছাড়েনি। ডিবি প্রধান হারুন সাহেব আমার থেকে ভিডিও রেকর্ড নিতে চেয়েছিলো যে সমন্বয়করা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষনা সেচ্ছায় দিয়েছে কিন্তু আমি রাজি হইনি। এক দিনপর আবারো ফোন করে আমাদের যেতে বলে তখন তাদের গাড়ী দিয়ে আসিফসহ আমাদেরকে বাড়ি পৌছে দেয়।
তিনি আরো বলেন, যে আসিফ মাহমুদ ছোট্টবেলা থেকেই একরোখা ছিলো। যেখানে অন্যায় দেখতো সেখানেই প্রতিবাদ করতো। তিনি এই আন্দোলনে নিহত সকলের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ও পরিবারের একজন সদস্যকে চাকরি দেয়াসহ সকল সমন্বয়ক এবং আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তার দাবিও করেন।
অজোপাড়া গায়ের ছেলে আসিফ মাহমুদের এমন সাফল্যে এলাবাসীও আনন্দিত ও গর্বিত। সংবাদ প্রকাশঃ =০৯-৮-২০২৪ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ক্লিক করুন=
গুলি খেয়ে মরবো, না হয় আন্দোলন সফল করে ঘরে ফিরবো, পরিবারকে না জানিয়েই আন্দোলনে যায় আসিফ মাহমুদ
আরো সংবাদ পড়ুন