সিটিভি নিউজ, এম আর কামাল, নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ : সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসাবে উত্তাল নারায়ণগঞ্জ। রবিবার (৪ আগস্ট) শিক্ষার্থীরা সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করে ভোর থেকেই বিক্ষোভ করছেন। এমনকি পাড়া মহল্লাতেও তারা অবস্থান নেন।
এতে নারায়ণগঞ্জের সবগুলো প্রবেশপথ বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ রয়েছে নারায়ণগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাওয়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল। বেলা বাড়ার সাথে হাজারো শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে বিক্ষোভ মিছিলে অচল পড়ে নারায়ণগঞ্জ।
এ সময় আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়, পুলিশ সুপার কার্যালয়, জেলা পরিষদ কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ আয়কর অফিসসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি স্থাপনা ভাংচুর করে অগ্নিসংযোগ করে এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও বিক্ষোভ করে। এ সময় আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশ টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের ও ঘটনা ঘটে। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন তারা কোনো অগ্নিসংযোগ করেননি।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুরে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগে পুলিশ বাধা দিলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষেও ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
তথ্যমতে, রবিবার (৪ আগস্ট) সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন গুরুত্ব পয়েন্টে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণঞ্জ অংশের বন্দরের মদনপুর ও সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোগ থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে মহাসড়কে চলাচলরত যানবাহনে বাধা দেয়।
এদিকে আন্দোলনকারী বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে বিএনপির নেতাকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষকেও যোগ দিতে দেখা গেছে।
এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়ায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবে ভাংচুর করে। একপর্যায়ে ক্লাবে অগ্নিসংযোগ করে। পরে শিক্ষার্থীরাই এ আগুন নিভিয়ে ফেলে এবং মাইকে ঘোষণা দেয় তারা কোনো অগ্নিসংযোগ করেননি।
দুপুরের দিকে শিক্ষার্থীদের সাথে জেলা ও মহানগর বিএনপির, যুবদল, ছাত্রদলসহ বিএনপির অংঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবন্দসহ বিভিন্ন নেতাকর্মী অংশ গ্রহন করে বিক্ষোভ করতে থাকে।
অপরদিকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আন্দোলনকারীরা নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা লিংক রোডে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ আয়কর অফিস ও জেলা পরিষদ কার্যালয় ভাংচুর করে। এ সময় তারা জেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে একটি অটোতে অগ্নিসংযোগ করে। সড়কের পাশে পেট্রোল পাম্পে থাকা শীতল পরিবহনের কয়েকটি বাস ভাংচুর করে।
পরে বেলা ১২ টার দিকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কার্যালয় ঘিরে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় আইনশৃংখলাবাহিনী নিরাপত্তা বেষ্টনি দিয়ে সতর্ক অবস্থানে দাড়ায়। সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা বেষ্টনি ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ভাংচুর চালায়। একপর্যায়ে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ঢুকতে গেলে পুলিশ তাদের বুজিয়ে প্রতিহত করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। পরে টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ তাদের দিকে গুলি ছোড়া হয়ে। এঘটনায় অর্ধ্বশতাধিক আহত হয়েছেন। তবে এ বিষয়ে পুলিশের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জ অংশের বিভিন্ন পয়েন্টে সকাল থেকে হাজার হাজার ছাত্র জনতা অবস্থান নেন। এ সময় পুরো যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে তারা বিক্ষোভ করতে থাকেন। তবে কোনো যানবাহন ভাঙচুর কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানে ক্ষতি সাধন করেননি আন্দোলনকারীরা।
অপরদিকে মহাসড়কের মদনপুরে একটি পিকআপে অগ্নিসংযোগ করে আন্দোলনকারীরা। এ সময় পুলিশ বাধা দিয়ে তাদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
দুপুর ৩টার দিকে ফতুল্লা থানায় হামলা চালিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এতে একজন এসআই আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ সুপার কার্যালয় সংলগ্ন ফতুল্লার চাঁদমারি এলাকা ও পঞ্চবটিতে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলছে। জেলা জুড়ে বিরাজ করছে আতংক। সংবাদ প্রকাশঃ ০৪-৮-২০২৪ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ক্লিক করুন=