নারায়ণগঞ্জ আদালতে বৃদ্ধ মায়েদের আহাজারি আমার পোলায় রাজনীতি করে না, গাড়ি চালাইতে গেসিলো ধইরা লইয়া গেসে

সিটিভি নিউজ, এম আর কামাল, নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ : চোখে-মুখে কষ্টের ছাপ নিয়ে সোমবার (২৯ জুলাই) সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গনে বসে ছিলেন বৃদ্ধা করিমন বেগম। কাছে গিয়ে কারণ জানতে চাইলে, মুহুর্তের মধ্যেই চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরতে শুরু করে তার। কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমার পোলায় কোন রাজনীতি করে না। আগেও করে নাই। গাড়ি চালাইতে গেসিলো, ধইরা লইয়া গেসে।
আমার পোলাডাই আমার শেষ আশা ভরশা। তার ছেলে মো. হাসান (৩০)। দীর্ঘদিন ধরে বাস চালিয়ে সংসার চালাতো সে। পিতা হাবিবুল্লার মৃত্যুর পর খুব ছোটবেলা থেকে পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া শুরু করে হাসান। সে ছাড়া পরিবারে উপার্জন করার মতো কেউ নেই বলে জানান করিমন বেগম। হাসানকে ২৫ জুলাই রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পুলিশের দায়ের করা সহিংসতার মামলায় গ্রেফতার করা হয়। কোন ভাবে জানতে পেরে, পরের দিন ২৬ জুলাই থানায় গিয়ে ছেলের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত হন বৃদ্ধা মা।
সকাল থেকেই মায়ের সাথে বড় ভাই হাসানকে জামিন করাতে আদালতে ঘুরছে ছোট ভাই কবির। সে সিদ্ধিরগঞ্জের এক মাদ্রাসার ৯ম শ্রেনিতে পড়ালেখা করছে। করিমন বেগম জানান, ‘ সাত বছর বয়স থেকাই পরিবারের লগে কাজ শুরু করে হাসান। প্রায় ১০ বছর ধইরা বাস চালাইয়া পরিবার চালায়। সে তো কোন রাজনীতি করে না, তাকে কেন ধইরা নিয়া আইলো জানি না। আমার শ্বশুর ১ শতক জায়গা ৩ ভাইরে দিয়া গেসে। সেখানেই আমরা থাকি। সে ছাড়া তো আমগো পরিবারে উপার্জন করার কেউ নাই। উকিল কইলো জামিন হইতে পারে। দেহি আল্লাহ কি করায়।’
সোমবার করিমন বেগমের মতো অনেকেই নাশকতার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে নেওয়ার পর তাদের প্রিয়জনকে খুঁজতে আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করেন। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে আদালত প্রাঙ্গন।
একই থানার মামলায় ২৬ জুলাই রাতে রূপগঞ্জের চনপাড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা কাদির (৩৫)কে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত কাদির পেশায় একজন গার্মেন্টস কর্মী। পিতার নাম আব্দুল মুজিদ।
কাদিরের বড় বোন পারভিন জানান, শুক্রবার রাতে আমার ভাইকে পুলিশ ধরে নিয়ে আসছে। তাকে বিএনপির লোক বলে চালান করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘রূপগঞ্জ পুলিশ কইলো, তারা নাকি আমার ভাইকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পাঠাইছে। এখনো থানায় যাই নাই, আগে কোর্টে আসছি। এখনো কোন খোঁজ পাই নাই। এখানে না পাইলে থানায় গিয়া জিগামু। আমার ভাই কোন রাজনীতি করে না।’
এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় আরও বেশ কয়েকটি পরিবারের সাথে। তাদের অভিযোগ অনেকটা এমনই। তারা সবাই নি¤œ আয়ের মানুষ বলে দাবি করছেন পরিবারের সদস্যরা। তাদের কোনো রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই বলেও জানান তারা। প্রিজন ভ্যানে করে আসামীদের কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় কান্নায় ভেঙ্গে পরেন পরিবারের সদস্যরা।
অপরদিকে ২৯ জুলাই দুপুর পর্যন্ত পাওয়া তথ্য মতে, নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি থানায় ২৯টি মামলা হয়েছে; যেখানে পাঁচ হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, নারায়ণগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নিরীহ মানুষ ও শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৫৬৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জেলার থানা গুলোতে গ্রেফতার বাণিজ্যেরও অভিযোগ করেছে গ্রেফতারকৃতদের স্বজনরা। সংবাদ প্রকাশঃ ২৯-৭-২০২৪ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ক্লিক করুন=

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like)
আরো পড়ুন