সিটিভি নিউজ।। মোঃ অপু খান চৌধুরী।।সংবাদদাতা জানান ====
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় ফায়ার সার্ভিসের নির্মাণ প্রকল্পের সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে সাত বছর আগে। অথচ এতো বছর অতিবাহিত হলেও অজ্ঞাত কারণে আজও শুরু করা হয়নি এর নির্মাণ কাজ। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
উপজেলার সাহেবাবাদ এলাকায় ৩৬.৭৫ শতক জমি অধিগ্রহণ করে ফায়ার সার্ভিস নির্মাণের সাইনবোর্ড কুমিল্লা জেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ গত সাত বছর আগে স্থাপন করেছিলেন।
জানা গেছে, ব্রাহ্মণপাড়াকে ১৯৮৩ সালের ৭ নভেম্বর প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ফলশ্রুতিতে উন্নয়নের প্রয়োজনে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। উপজেলা প্রতিষ্ঠার ৪০ বছর পার হলেও ওই উপজেলায় এখনও স্থাপিত হয়নি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন। ফলে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় ওই উপজেলায় বিভিন্ন সময়ে ছোট-বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রতি বছরই কোটি কোটি টাকার সম্পদ ভস্মিভূত হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ওই উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় উপজেলা সদরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাট-বাজারের দোকানপাট, শিল্প প্রতিষ্ঠান,বাসাবাড়ি ও গুরুত্বপুর্ন স্থাপনাসমুহ আগুনের চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। উপজেলার ব্রাহ্মণপাড়া সদর বাজার, সাহেবাবাদ বাজার, অলুয়া বাজার, ধান্যদৌল বাজার, বড়ধুশিয়া বাজার, চান্দলা বাজার, ষাইটশালা বাজার, মাধবপুর বাজার, কান্দুঘর বাজার, সিদলাই বাজার, মহালক্ষীপাড়া বাজার, দুলালপুর বাজার, নাল্লা বাজার ও শশীদল বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে পেট্রোল, অকটেন, ডিজেল, কেরোসিনের অস্থায়ী মজুদদারদের বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। ফলে ওই সকল বাজার সমুহ অগ্নিকান্ডের চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ব্যাংক, বীমা ও সরকারি বেসরকারি অফিসসহ সরকারী গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে ওই উপজেলায়। উপজেলা সদরসহ হাটবাজার বা কোন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে পার্শ্ববর্তী জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা, ব্রাহ্মণপাড়ার পার্শ্ববর্তী উপজেলা বুড়িচং এবং জেলা সদর কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিসের উপরই একমাত্র নির্ভর করতে হয়। ফলে কসবা, বুড়িচং বা কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিস দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোবার আগেই আগুনে পুড়ে সব ছাই হয়ে যায়। এতে ভোগান্তি পোহাতে হয় ওই উপজেলার বাসিন্দাদের।
সাহেবাবাদ বাজারের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, গত সাত বছর আগে কুমিল্লা থেকে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে ফায়ার সার্ভিস নির্মাণের স্থানে একটি সাইনবোর্ড বসিয়ে যায়। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সাত বছর গত হলেও এখনো ফায়ার সার্ভিস নির্মাণের কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব ফায়ার সার্ভিস অফিসটি স্থাপন করা হোক।
স্থানীয় বাসিন্দা বিল্লল হোসেন সরকার বলেন, উপজেলা প্রতিষ্ঠার অনেক বছর পেরিয়ে গেলেও এই উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করা হয়নি। সাবেক আইনমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য প্রয়াত এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু এর অনুমোদন করে যায়। পরে ওই স্থানে সাইনবোর্ড স্থাপন করা হলেও এখনো পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়নি। উপজেলাবাসী চায় দ্রুত ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি নির্মিত হোক।
ব্রাহ্মণপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী ও বাজার কমিটির সভাপতি হাজী মোজাম্মেল হক দুলাল বলেন, ব্রাহ্মণপাড়ায় ফায়ার সার্ভিসের অফিস না থাকায় প্রতিবছর অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ব্রাহ্মণপাড়াবাসীর দাবী আর সময় ক্ষেপণ না করে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের অফিস স্থাপন করা হোক।
সাহেবাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন চৌধুরী বলেন, প্রতিবছরই সাহেবাবাদ পাইকারি বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ফলে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও বাসাবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মানুষ ক্ষতির মুখে পড়ে। অচিরেই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি নির্মিত হলে উপজেলাবাসী এর সুফল পাবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, এ উপজেলায় বিভিন্ন হাট বাজার, এবং বাড়ি ঘরে প্রতি বছর অগ্নিকাণ্ডে দুই-তিন কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়। ফায়ার সার্ভিস স্টেশন দ্রুত নির্মাণ হলে উপজেলাবাসী অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহ ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পাবে।
কুমিল্লা জেলা ফায়ার সার্ভিস ও ডিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. বজলুর রশিদ বলেন, আমাদের সহকারী পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া স্যার দাপ্তরিক কাজে দেশের বাইরে আছেন। তিনি থাকলে সবটুকু জানাতে পারতেন। তবে আমি যদ্দুর জানি ব্রাহ্মণপাড়ায় ফায়ার সার্ভিস ভবন নির্মাণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স ম আজহারুল ইসলাম বলেন, জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম সুজন ( ভারপ্রাপ্ত ) ও আমি ফায়ার সার্ভিস নির্মাণের বিষয়টি উপস্থাপন করেছিলাম। সে প্রেক্ষিতে জানা গেছে ফায়ার সার্ভিস নির্মাণ বিষয়ক ফাইলটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা আছে। আশা করা যাচ্ছে এই অর্থবছরে এর বরাদ্দ পাওয়া যাবে। সংবাদ প্রকাশঃ ১৪-৭-২০২৪ ইং সিটিভি নিউজ এর (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like> See More =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ছবিতে ক্লিক করুন= =আরো বিস্তারিত জানতে কমেন্টসে লিংকে ক্লিক করুন=