২৩ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার মহিয়সী নারী চৌধুরানী নবাব ফয়জুন্নেসার মৃত্যু বার্ষিকী 

সিটিভি নিউজ।।    নেকবর হোসেন  কুমিল্লাপ্রতিনিধি    ।।
দক্ষিন এশিয়ার  প্রথম ও শেষ নারী নওয়াব ছিলেন ফয়জুন্নেসা। তার জন্ম হয়েছিল এই কুমিল্লার  মাটিতেই।
চৌধুরানী নবাব ফয়জুন্নেসা ১৮৩৪ সালের ২৮শে মে কুমিল্লা  জেলার  লাকসাম থানার পশ্চিমগা্ঁও জমিদার  বাড়িতে জন্মগ্রহণ  করেন। তার বাবা আহমদ আলী চৌধুরী , যিনি শাহজাদা মীর্জা আওরঙ্গজেব  খান বাহাদুর নামে অধিক  পরিচিত  ছিলেন।তিনি মোগল সম্রাট বাহাদুর শাহের নিকটাত্মীয়  ছিলেন বলে জনশ্রুতি  রয়েছে। তার মায়ের নাম বেগম আরফান নুন নেসা চৌধুরী। জমিদার নওয়াব ফয়জুন্নেসা  ছিলেন  অসাম্প্রদায়িক,  প্রজাবৎসল , দানবীর,সমাজহিতৈষী,  তাছাড়াও   তিনি  নারীর শিক্ষা ও সমৃদ্ধির অন্যতমপথিকৃৎ। রক্ষনশীল মুসলিম  পরিবার ও পর্দা প্রথার কঠোর বেড়াজালে থেকে আনুষ্ঠানিক  শিক্ষাগ্রহণ  তিনি করতে পারেননি ।তবুও তিনি থেমে না থেকে নিজের  লাইব্রেরিতে  অবসরে পড়াশুনা করতেন,হিন্দু ধর্ম্বাবলম্বী গৃহশিক্ষকদের কাছে পড়াশুনা করতেন।তিনি বাংলা,সংস্কৃতি  তে বেশ দক্ষতা অর্জন করেন ।পাশাপাশি  আরবী,উর্দু ও পার্শিতে ও অনেক দখল ছিল তার।
তিনি তার দূরসম্পর্কের  চাচাতো ভাই , তাদের নিকটবর্তী জমিদার   মোহাম্মদ গাজীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। অজানা কোন কারনে তার বৈবাহিক সম্পর্ক  বেশিদিন  টিকেনি ।তিনি পশ্চিমগাঁও পিতার বাড়িতে  অবস্হান করতেন।
১৮৭৩ সালে তার মায়ের মৃত্যুর পর তিনি হোমনাবাদ-পশ্চিমগাঁও পরগনার জমিদার  হন।জমিদার হিসাবে ছিলেন প্রজাবৎসল, তিমি সমাজসেবা ও নারী শিক্ষায়  অগ্রণী ভুমিকা রাখেন।
বেগম রোকেয়া নারী শিক্ষার অগ্রদূত বলা হলে ও তার জন্মের  বহু বছর পূর্বেই  চৌধুরী ফয়জুন্নেসা কুমিল্লা  মহানগরীর ফয়জুন্নেসা সরকারি  বালিকা বিদ্যালয় ও লাকসামে একটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিস্ঠা করেন ।লাকসামের  বালিকা বিদ্যালয়টি আজকের লাকসাম নবাব ফয়জুন্নেসা  সরকারি ডিগ্রি কলেজ। তাছাড়াও দাতব্য চিকিৎসালয়,বহু  স্কুল,মসজিদ, মাদ্রাসা, রাস্তাঘাট, পুল,নির্মান করে গেছেন ।তার পরগনায় পানীয়জলের  সুবিধার জন্য বহু দীঘি ও খনন করেন। কুমিল্লা  ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের প্রতিস্ঠায়ও তার অবদান ছিল বলে জানা যায়।তার পরগনায় চৌদ্দটি মক্তবও সমপরিমান সংস্কৃত টোল স্হাপন করেছিলেন।তার জমিদারির বিশাল অংশই অবহেলিত,দরিদ্র  শিক্ষার্থীদের  বৃত্তির জন্য দান করে যান।
সুধাকর,ঢাকা প্রকাশ,ইত্যাদি প্রকাশনায়ও তিনি পৃস্টপোষকতা করেন।
উনিশ শতকের মুসলিম  নারীদের অবস্হানকে তুলে ধরে লিখেন রুপজালাল নামে সৃস্টিধমী উপন্যাস। তাছাড়া তিনি বেশ কিছু কবিতা ও উপন্যাস লিখেন।
১৮৮৯ সালে বৃটেনের  রানী ভিক্টোরিয়া  তাকে নওয়াব উপাধিতে ভুষিত করেন। দক্ষিন এশিয়াতে তিনি হলেন প্রথম ও শেষ নারী নবাব।
১৯০৩ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর  লাকসামের  পশ্চিম গাঁয়ের  বাড়িতে  চিরবিদায় নেন।
ঢাকা  বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীর নগর  বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি মেয়েদের  আবাসিক  হলের নাম তার নামানুসারে  রয়েছে ।২০০৪ সালে তাকে মরনোত্তর একুশে পদকে ভুষিত করা হয়।
আজ তাঁর এই মৃত্যু বার্ষিকীর দিনে বলছি নারী শিক্ষার  অগ্রদূত   এই মহিয়সী নারীর যোগ্য মর্যাদা  কি আমরা দিতে পেরেছি?
পর্দা প্রথার বেড়াজালে থেকে আজও তার কর্মযজ্ঞ আমাদের কে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতার ডোরে আবৃত করে

কুমিল্লার মাটি তাঁকে নিয়ে গর্ব করে।তার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধান্জলি।সংবাদ প্রকাশঃ  ২৩২০২০ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ