সিটিভি নিউজ।। মোজাম্মেল হক আলম, লাকসাম : সংবাদদাতা জানান ==
১১ই ডিসেম্বর বৃহত্তর লাকসাম হানাদার মুক্ত দিবস। এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীকে হটিয়ে মুক্ত হয়েছিল বৃহত্তর লাকসাম। পাকবাহিনীর কবল থেকে স্বাধীনতাকামী মুক্তিযোদ্ধারা এদিন লাকসামকে শত্রু বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত করেন। দীর্ঘ নয় মাসের যুদ্ধ আর নির্যাতনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীসহ সর্বস্তরের জনগণের উল্লাস ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠে এ অঞ্চল। ৭১’র এ দিনে লাকসাম হাইস্কুল মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা নজির আহমেদ ভূঁইয়া কর্তৃক প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করার মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করেন স্বাধীনতাকামী মুক্তিযোদ্ধারা।
জানা যায়, লাকসাম রেলওয়ে জংশনের অদুরে থ্রী-এ সিগারেট ফ্যাক্টরীতে এ অঞ্চলে পাক হানাদার বাহিনীর মূল ঘাঁটি ছিলো। এ অঞ্চলে যুদ্ধ পরিচালনা, অস্ত্র এবং যুদ্ধের যাবতীয় উপকরণ সরবরাহ করা হতো এখান থেকেই। এ ঘাঁটিতে বিভিন্ন স্থান হতে বাঙালি নারী-পুরুষ, যুবক-যুবতীদের ধরে এনে পাশবিক নির্যাতন শেষে হত্যা করে পাশেই বেলতলী নামক স্থানে মাটি চাপা দেয়া হতো। বর্তমানে এ স্থানটি ‘বেলতলি বধ্যভূমি’ নামে পরিচিত।
১৯৭১ সালের ১৫ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনারা প্রথমে লাকসাম জংশন ও দৌলতগঞ্জ বাজার দখলে নিয়ে লাকসাম সিগারেট ফ্যাক্টরিতে স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে। আর এখান থেকেই চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনীসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা নিয়ন্ত্রণ করতো। যুদ্ধকালীন পাকবাহিনীকে প্রতিরোধ করতে লাকসাম জংশন এলাকায় ৪টি সশস্ত্র বাহিনী গঠিত হয়। এই বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন সুবেদার আবদুল জলিল, ক্যাপ্টেন মাহবুব, ব্রিগেডিয়ার দিদারুল আলম, মেজর এনাম আহমেদ এবং ফ্লাইট সার্জন ছিদ্দিকুর রহমান।
পরবর্তীতে মিত্র বাহিনী লাকসাম জংশন ও সিগারেট ফ্যাক্টরীসহ বিভিন্ন অবস্থানের উপর বিমান হামলা চালিয়ে পাকসেনাদের তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলেন। দুই দিন ধরে প্রচন্ড যুদ্ধের পর পাক বাহিনী লাকসাম থেকে পশ্চিম দিকে মুদাফরগঞ্জ হয়ে চাঁদপুরের দিকে পালাতে থাকে। পালানোর সময় মিত্র বাহিনী চুনাতী নামক গ্রামে এবং মুক্তিবাহিনী শ্রীয়াং ও বাংলাইশে পাক বাহিনীকে মুখোমুখি আক্রমন করেন। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর অসংখ্য প্রাণহানিসহ অনেক পাকসেনা বন্দি হয়। অবশেষে ১১ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিবাহিনী লাকসামকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করেন।
লাকসাম মুক্ত দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এতে যুদ্ধকালীন কমান্ডাররা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করবেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেয়ার বৃহত্তর লাকসামের শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল (গণকবর) বেলতলী বধ্যভূমিতে ‘স্মৃতিসৌধ’ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম সাইফুল আলম। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এমপি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় শীঘ্রই ‘স্মৃতিসৌধ’ নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ প্রকাশঃ ১০–১২–২০২০ইং । (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24 এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন। সিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)