সুইসাইড নোট লিখে নারী পুলিশ কনষ্টেবলের আত্মহত্যা ॥ আসামী গ্রেফতার হয়নি

সিটিভি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

সিটিভি নিউজ।।      দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি নয়ন ॥ ‘কয়েকটা মানুষ আমাকে এত পরিমাণ নির্যাতন করেছেন যে, আমি নিজে নিজেই আত্মহত্যা করেছি। আমি আমার নির্যাতনের বিচার চাই, না হলে মরে গিয়েও শান্তি পাব না, যতদিন না এদের বিচার হয়। তাদের অত্যাচার ও নির্যাতনে আমি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছি’ এমন সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেছে গাইবান্ধা সদর থানার পুলিশ কনষ্টেবল মোছাঃ বিউটি আক্তার।এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিউটি আক্তারের পিতা মোঃ বাবুল হোসেন বাদী হয়ে গাইবান্ধা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

মূলতঃ যৌতুকসহ বিভিন্ন কারনে-অকারনে বিউটির উপর অমানুষিক নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে বিউটি আত্মহত্যা করেছে বলে বিউটির পরিবার সুত্র জানায়। এছাড়া তার শেষ চিঠিও সে কথাই প্রমাণ করেছে। কিন্তু আসামীদের এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি। মামলার এজাহারে বিউটি আক্তারের বাবা দিনাজপুর সদর উপজেলার দাইনুর (কনজকুড়ি) গ্রামের বাসিন্দা বাবুল হোসেন উল্লেখ করেন, আমার একমাত্র কন্যা কং-১৭০, মোছাঃ বিউটি আক্তার, পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে গাইবান্ধা জেলা চাকুরি করতো। চাকুরিরত অবস্থায় একই থানায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল এবং দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার পূর্ব সুকদেবপুর (সরকারপাড়া) গ্রামের মোঃ মমতাজ আলীর পুত্র কং-৭৭৪ মোঃ রাব্বী সরকারের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর হতেই স্বামীর বাড়ীর লোকজন বিউটির উপর যৌতুকের চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। তারা বিভিন্ন সময় বিউটির উপর শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। এসব কাজে রাব্বী সরকারের সাথে সহযোগী হিসেবে কাজ করে মোঃ মোকলেছুর রহমান (৪৮), পিতা-মৃত-মোহাম্মদ আলী, মোছাঃ মিনারা বেগম (৪২), স্বামী মোঃ মোকলেছুর রহমান, মোছাঃ মমতাজ আক্তার মুনমুন (২৪), পিতা- মোঃ মোকলেছুর রহমান, মোঃ মমতাজ (৫০), পিতা অজ্ঞাত (১নং আসামীর পিতা), মোছাঃ মনজিলা বেগম (৩২), মোছাঃ আছিয়া বেগম (৩০), মোছাঃ বেলী বেগম (২৯), মোছাঃ বেলী (২৮), মোছাঃ মেহেদী আক্তার (২৫), সর্ব পিতা মোঃ মমতাজ আলী, মোছাঃ রাবেয়া বেগম (৪৫), স্বামী মোঃ মমতাজ আলী।

এজাহারে বিউটি আক্তারের বাবা উল্লেখ করে বলেন, তারা আমার কন্যার কাছে বিয়ের যৌতুক বাবদ নগদ ১০,০০০,০০/- (দশ লক্ষ) টাকার দাবীতে আমার কন্যাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল। তারা আমার কন্যাকে প্রায়ই আত্মহত্যা করতে বলত এবং আমার কন্যা জীবিত থাকিলেও সংসারে তাহার জায়গা হবে না বলে হুমকী-ধামকীসহ খোটা দিত। এমতাবস্থায় আমার কন্যা গর্ভবতী হইলেও তার স্বামী রাব্বী সরকার তার উপর শারীরিক নির্যাতন করে গর্ভপাত ঘটায়। আমার কন্যা উপরোক্ত অবস্থাতেও শত কষ্ট নির্যাতন সহ্য করে ঘর সংসার করতে থাকলেও অত্যাচার ও নির্যাতনের মাত্রা সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়।

বিউটির বাবা এজাহারে আরো উল্লেখ করেন, গত ১৯ ডিসেম্বর গাইবান্ধা জেলার সদর থানার পার্শ্বে মহুরী পাড়ায় অবস্থিত ভাড়া বাড়ীতে আমার মেয়ে বিউটি আক্তার বিষ পান করিলে তাৎক্ষণিক ভাবে তাহাকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ এ্যাম্বুলেন্সে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার কন্যাকে মৃত ঘোষনা করে। আমি মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে গাইবান্ধা যাই এবং আমার কন্যার বাড়ীতে তার আত্মহত্যার কারন জানিতে চাহিলে আমার নিহত কন্যার স্ব-হস্তে লিখিত একটি চিঠি (মৃত্যুর কারণ বিষয়ে লিখিত জবানবন্দি) পাই। আমার কন্যা উক্ত চিঠিতে উল্লেখ করেন যে, “এই কয়টা মানুষ আমাকে বাঁচতে দিল না, আমাকে এত পরিমাণ নির্যাতন করেছেন যে, আমি নিজে নিজেই আত্মহত্যা করেছি। আমি আমার নির্যাতনের বিচার চাই, না হলে মরে গিয়েও শান্তি পাব না, যতদিন না এদের বিচার হয়। তাদের অত্যাচার ও নির্যাতনে আমি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছি, ১। মোঃ রাব্বী, ২। মমতাজ, ৩। মনজিলা, ৪। আছিয়া, ৫। বেলী, ৬। বেবী, ৭। মেহেদী, ৮। রাবেয়া’গণের নাম উল্লেখ করে।

এমন অবস্থায় আমার কন্যার আত্মার শান্তির স্বার্থেও আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এলাকাবাসীও বিউটি আক্তারের আত্মহত্যার বিচারের বিষয়ে আসামীদের শাস্তি চান।

সংবাদ প্রকাশঃ  ৩১১২২০২০ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

Print Friendly, PDF & Email