সালিশ বৈঠকে নিস্পত্তি, পরে মামলা দিয়ে হয়রানি

সিটিভি নিউজ।।    ফয়জুল ইসলাম ফয়সাল, মুরাদনগর থেকে :
আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে পারিবারিক বিরোধ সামাজিক ভাবে নিস্পত্তি হওয়ার পর পুনরায় আদালতে মামলা দায়েরের ঘটনা ঘটেছে। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন আন্দিকুট ইউনিয়নের হায়দরাবাদ গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। ভূক্তভোগি পরিবার গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রেসক্লাবে এসে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অহেতুক হয়রানি করার প্রতিকার চেয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, হায়দরাবাদ গ্রামের সোহেল রানা সরকারের মেয়ে ঐশী রানী সরকারের সাথে ২০১৯ সালের ৮ অক্টোবর সামাজিক ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় দক্ষিণ বাঙ্গরা গ্রামের শেখ সামছুল হকের ছেলে শেখ আব্দুর রশিদ। সাম্প্রতিক তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। অনেক দেন দরবার শেষে উভয়ের পরিবার বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে আসে। সে লক্ষে গত ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন আল-রশীদের বাড়িতে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে একটি শালিস বৈঠক হয়। বৈঠকে কনে ঐশী রানী সরকারকে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে স্থানীয় কাজীর মাধ্যমে তালাক নামা সম্পন্ন করেন বর শেখ আব্দুর রশিদ।
ঘটনা নিস্পত্তির ২৪ দিন পর (০৪/১১/২০২) কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ৩নং আদালতে একটি যৌতুকের মামলা করেন ঐশী রানী সরকার। বিজ্ঞ বিচারক পুলিশ সুপার কার্যালয়ের নারী ও শিশু সহায়তা সেলকে তদন্তভার দেন। সামাজিক ভাবে নিস্পত্তি হওয়া বিষয়টি পুনরায় আদালত পর্যন্ত গড়ানোর ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
ছেলের বাবা শেখ সামছুল হক বলেন, শেখ আব্দুর রশিদ আমার বড় সন্তান। অনেক শখ করে মেয়েটিকে ছেলের বউ করে আমার ঘরে এনেছিলাম। দুই বছর সংসার করার পর ছেলে কালো হওয়ায় তাকে নাকি পছন্দ হয়না। এমন উদ্ভট যুক্তি শুনে আমি মানসিক ভাবে কষ্ট পেয়েছি। অনেক চেষ্টার পরেও ব্যর্থ হয়ে মেয়ের পরিবারের কথামতো সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে আত্মীয়তা ছিন্ন করা হয়েছে। অথচ তারাই আবার একটি মহলের প্ররোচনায় আদালতে গিয়ে আমাদেরকে আসামী করে মামলা করলো। এ ভাবে একটার পর একটা ভোগান্তি আসবে চিন্তাও করি নাই। এমন হয়রানি থেকে আমরা প্রতিকার চাই।
সালিশ বৈঠকে নিস্পত্তি হওয়ার পরেও আদালতে কেন মামলা করলেন? এমন প্রশ্নে মেয়ের বাবা সোহেল রানা সরকার বলেন, কলেজ থেকে বাড়ি আসার পথে আমার মেয়েকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে তালাক নামায় স্বাক্ষর রাখে ছেলে আব্দুর রশিদসহ ৩জন। বিষয়টি সালিশে নিস্পত্তি হয়নি। তাই আমি ন্যায় বিচার পাওয়ার লক্ষে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।
সালিশ বৈঠকে উপস্থিত থেকে ঘটনার নিস্পত্তি কারীদের মধ্য থেকে হায়দরাবাদ গ্রামের আব্দুল আলীম, লিটন মিয়া, আব্দুল হাকিম ও মাজেদুল ইসলাম পারভেজসহ ৮/১০ জনের কাছ থেকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, সামাজিক ভাবে মানুষ নানান সমস্যা সমাধান করে থাকেন। উভয় পরিবারের ডাকে সালিশ বৈঠক হয়েছিল। আড়াই লক্ষ টাকার বিনিময়ে ঐশী রানী সরকার ও তার বাবা সোহেল রানা সরকার মিমাংসায় চলে যান। টাকা হাতে পেয়ে ঐশী রানী সরকার উপস্থিত গন্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে তালাকনামায় স্বাক্ষরও করেন। পরে কার প্ররোচনায় মেয়ে পক্ষ আদালতে মামলা দেয়, তা আমাদের বোধগম্য নয়। তবে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে, সমস্যা সমাধানে সামাজিক ভাবে কেউ এগিয়ে আসার মানুষিকতা রাখবে না।
মুরাদনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হারুন আল রশীদ বলেন, মেয়ের বাবা সোহেল রানা সরকারের দীর্ঘদিনের পিড়াপিড়িতে ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর আমার বাড়িতে সালিশ বসে। উপস্থিত গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ প্রাণপ্রন চেষ্টা করেছেন সংসারটি টিকিয়ে রাখার জন্য। মেয়ে ও তার বাবা কোন মতেই আমাদের কথা কর্নপাত করে নাই। শেষে আড়াই লাখ টাকা পেয়ে তাৎক্ষনিক তালাকনামায় স্বাক্ষর করেন ঐশি রানী সরকার। পরে শুনলাম মেয়ে নাকি আদালতে মামলা করেছেন, বিষয়টি দু:খজনক।

সংবাদ প্রকাশঃ  ১৩২০২১ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ