‘রোজিনা ইসলামের ঘটনা স্বাধীন সাংবাদিকতার টুঁটি চেপে ধরার শামিল’–টিআইবি

সিটিভি নিউজ।।     স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের প্রতি আচরণ শিষ্ঠাচার বহির্ভূত ও স্বাধীন সাংবাদিকতার টুটি চেপে ধরার শামিল বলে মন্তব্য করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। অবিলম্বে তার মুক্তি ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

মঙ্গলাবার (১৮ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি এ দাবি জানায়।   সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে  বলা হয়, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে অনুসন্ধানী প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দীর্ঘ সময় আটকে রেখে হেনস্তা এবং রাতে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে যেভাবে নথি চুরির মামলা দেওয়া হয়েছে, তাতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) তীব্র নিন্দা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে। অবিলম্বে রোজিনা ইসলামের নামে দেওয়া মামলা প্রত্যাহার এবং নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। একইসঙ্গে এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করে সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে বিবেচনাবোধের পরিচয় দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে টিআইবি।

সংস্থাটি বলছে, করোনাকালে স্বাস্থ্য খাতের ক্রয় থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্যায়ে দুর্নীতির যে ভয়াল ও অমানবিক চিত্র জাতির সামনে এসেছে, তার অনেকটাই সম্ভব হয়েছে রোজিনা ইসলামের মতো অকুতোভয় সাংবাদিকদের নিরন্তর প্রচেষ্টা ও নিষ্ঠার কারণে। এই সময়ে এমন ঘটনা মুক্ত সাংবাদিকতার টুঁটি চেপে ধরারই নামান্তর।

সরকারি নথি চুরির অভিযোগ এনে দীর্ঘসময় ধরে একজন নারী সংবাদকর্মীকে আটকে রেখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা রোজিনা ইসলামের সাথে যে ধরনের নিপীড়নমূলক আচরণ করেছেন, তা শুধু শিষ্টাচার বহির্ভূতই নয়, তার প্রতি ক্ষোভের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং করোনা সংকট মোকোবিচলায় প্রতিষ্ঠানটির সমন্বয়হীনতা, পেশাদারিত্বের যে ঘাটতি ও স্বরূপ রোজিনা ইসলামের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলোতে উঠে এসেছে, এটাকে তারই ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া বিবেচনা করাই স্বাভাবিক। এখনও পর্যন্ত যারা কিছুটা হলেও নীতি ও নিষ্ঠার সাথে সাংবাদিকতা করছেন, শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে নিয়মিত জনস্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছেন, এটা তাদের জন্য দুর্নীতিবাজদের পক্ষ থেকে একটি হুঁশিয়ারি বার্তা বলে মনে করি। এর রেশ আমাদের ধারণারও বাইরে।’

এ ঘটনায় যেভাবে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার বিষয়কে টেনে এনে ঔপনিবেশিক আমলের ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট-১৯২৩’  এর ৩ ও ৫ ধারা এবং পেনাল কোডের ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় যেভাবে মামলা দায়ের করা হয়েছে, তাতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘এক্ষেত্রে রোজিনা ইসলামের সাংবাদিক পরিচয়কে কোনোভাবেই বিবেচনা করা হয়নি। বরং তাকে ফাঁদে ফেলে শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে পুরো গণমাধ্যমকেই একহাত নেওয়ার অপচেষ্টা করেছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল।’

ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘‘তথ্য অধিকার আইন পাস হওয়ার ফলে বাক ও মত প্রকাশের যে আশার আলোটুকু আমরা দেখতে শুরু করেছিলাম, অচিরেই ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে নিবর্তনমূলক ৩২ ধারায় ঔপনিবেশিক আমলের ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট-১৯২৩’ সন্নিবেশনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, রোজিনা ইসলামের ঘটনার মধ্য দিয়ে তার নগ্ন পরিণতি পেয়েছে। এর নিন্দা জানাবার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছি। আমরা কী সামনের দিকে এগোচ্ছি না-কি উল্টো যাত্রা শুরু করেছি? এর শেষ কোথায়! এক শ্রেণির অসাধু, নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিত কর্মকর্তা ও উচ্চ পদে আসীনদের কাছে সরকার কি ক্রমাগত জিম্মি হয়ে পড়ছে!”

ইতোপূর্বে সাংবাদিক নির্যাতনের একটি ঘটনারও সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়ার যে দৃষ্টান্ত রয়েছে, তার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ  করে টিআইবি গণতন্ত্র, ন্যায়বোধ, সুশাসন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখার স্বার্থে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের ভবিষ্যতের জন্য অবিলম্বে রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জোর দাবি জানাচ্ছে।

সংবাদ প্রকাশঃ  ১৮২০২১ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ