রূপগঞ্জে নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় আ’লীগের  দুই নেতার বাড়িতে হামলা, ভাংচুর লুটপাট  অগ্নিসংযোগ ও ২ গুলিবিদ্ধসহ আহত-১৫

সিটিভি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

সিটিভি নিউজ, এম আর কামাল, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউপি নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় নাওড়া এলাকায় মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) রাতে আওয়ামীলীগের দুই নেতার বাড়িতে পরাজিত বিদ্রোহী প্রার্থী আ’লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। ২/৩’শ সদস্যের একদল সন্ত্রাসী রাম দা, ছুরি, বল্লম, চাইনিজ কুড়াল, শর্টগান, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এ হামলা চালায়।

হামলাকারীরা কায়েতপাড়া ইউপি যুবলীগের সাবেক সভাপতি মোশারফ হোসেন, কায়েতপাড়া ইউপি মহিলালীগের সভাপতি জোসনা আক্তারের বাড়িতে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে এ হামলা চালায়। মহিলা ও শিশুরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। সংঘর্ষে ২জন গুলিবিদ্ধ ও ১৫জন আহত হয়। গুলিতে আহত নাওড়া গ্রামের মৃত ফজুল মিয়ার ছেলে ইউসুফ মিয়া (৪০) ও ওমেদ আলীর ছেলে রেনু মিয়াকে (৩৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আহত সুবহান (২৮), জায়েদা খাতুন (৩০), নুরজাহান (৩২), কে মুমুর্ষ অবস্থায় ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যান্যদের রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের দেওয়া আগুনে আওয়ামীলীগ নেতা মোশারফ হোসেনের ৫টি বসতঘর, ৪টি মোটরসাইকেল, ১টি প্রাইভেটকার ও কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী যুবলীগের কার্যালয়  ভস্মীভূত হয়।

কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মহিলালীগের সাধারণ সম্পাদক মিনারা বেগম বলেন, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীকে পরাজিত হয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান, তার সমর্থক জসিম উদ্দিন জসু ও আলেক মিয়ার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালায়।

কায়েতপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি আমির হামজা বলেন, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মিজানুর রহমান পরাজিত হওয়ায় তার সমর্থিত সন্ত্রাসীরা একের পর এক নৌকা প্রতীকের সমর্থিতদের ঘর বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে। নেতাকর্মীদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করছে। পুলিশ ও র‌্যাব নিরব ভূমিকা পালন করছে।

কায়েতপাড়া ইউপি নির্বাচনে নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাহেদ আলী বলেন, নির্বাচনের পরদিন থেকে নাওড়া এলাকার নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের বাড়িতে একের পর এক হামলা, লুটপাট চালানো হচ্ছে। কিন্তু পুলিশ ও র‌্যাব সন্তুষজনক ভূমিকা রাখছেনা। ক্ষতিগ্রস্থদের মামলা রুজু করছে না। তাতে সন্ত্রাসীরা উৎসাহিত হয়ে একের পর এক হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করে যাচ্ছে। গত ২৭ নভেম্বর ৮জন গুলিবিদ্ধের ঘটনায়ও পুলিশ এখনও মামলা নেয়নি।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএফএম সায়েদ বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

উল্লেখ গত ১১ নভেম্বর কায়েতপাড়া ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ্ব জাহেদ আলী নৌকা প্রতীকে ৫৫৮ ভোট বেশি পেয়ে জয়লাভ করেন। আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মিজানুর রহমানের পরাজিত হয়। ১২ নভেম্বর নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় আওয়ামীলীগ নেত্রী লিপি আক্তার গুলিবিদ্ধ হয়ে এখনও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এখানে নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি ও অসহায় হয়ে পড়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।

সংবাদ প্রকাশঃ  ০১-১২-২০২১ইং । (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে/লিংকে ক্লিক করুন=  

Print Friendly, PDF & Email