রূপগঞ্জে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বৈধকরণ ঃ আ’লীগের দালালদের পকেটে ৩০ কোটি!

সিটিভি নিউজ, এম আর কামাল, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়ন ও চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিতে স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামীলীগের দালালরা প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে তারা প্রায় ৩০ কোটি টাকা পকেটে ঢুকিয়েছেন। তবে কোনো সংযোগই এখনো বৈধ করা হয়নি। ফলে ওই ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে প্রশাসন।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন ও চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ৪২ গ্রামে প্রায় ১০ হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়েছে। গরু-ছাগল, স্বর্ণালঙ্কার এমনকি জমি বিক্রি করে স্থানীয় সরকার দলীয় প্রভাবশালী দালাল ও তাদের নিয়োজিত গ্যাস কমিটিকে টাকা দিয়েছেন তারা। তখন কথা ছিল কাগজপত্র ঠিক করে দেবেন তারা। এ পর্যন্ত অন্তত ৩০ কোটি টাকা তাদের পকেটে ঢুকেছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
এদিকে, সোমবার (২২ মার্চ) বিকেলে ওইসব এলাকার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় প্রশাসন। এতে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন ও চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ১০ হাজার পরিবারে গ্যাসের জন্য হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়ন ও চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতারা এক প্রকার ‘শাসন’ কায়েম করে আসছেন। এলাকায় এই রাজত্ব চালানোর জন্য তারা গ্যাস কমিটি করেন এবং এর মাধ্যমে গ্রাহকদের থেকে টাকা আদায় করছেন। গ্যাস-সংযোগের জন্য কমিটি নিজেদের মত করে ফি নির্ধারণ করে দেয়। এ ধরনের ১০ হাজার সংযোগ দেয়া হয়েছে, যা থেকে দালালদের পকেটে ঢুকেছে অন্তত ৩০ কোটি টাকা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গ্যাস দেয়ার কথা বলে ২০১২ সালে স্থানীয় আওয়ামীলীগের দালালরা মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গ্যাসের সুফল পেতে ওই সময় মানুষ পালের গরু-ছাগল, হাস-মুরগি, স্বর্ণালঙ্কার এমনকি গাছপালা জমিজমা বিক্রি করে গ্যাস কমিটির প্রধান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদ আলী এবং আওয়ামী লীগকর্মী ও ইউপি সদস্য বজলুকে টাকা দেন।
চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের এক মুদি দোকানি জানান, গ্যাস সংযোগ নেয়ার সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ২৫ হাজার টাকা কিস্তিতে তুলে এনে দিয়েছেন তিনি। সেসময় কথা ছিল কাগজপত্র ঠিক করে দেবে। কিন্তু কাগজ আর ঠিক করে দেয়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভাওয়ালিয়া পাড়া এলাকার এক গৃহণী বলেন, ‘স্বর্ণের চেইন আর গরু বিক্রি করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ৩০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম গ্যাস সংযোগের জন্য। গ্যাস লাইন বৈধ হবার তো দূরের কথা সংযোগই বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে।’
কায়েতপাড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনের অভিযোগ, ‘নাওড়া এলাকায় বৈধ গ্যাসের সংযোগ দেয়ার কথা বলে এলাকাবাসীর কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা নিয়ে গেছে আওয়ামী লীগের কয়েকজন দালাল।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জায়েদ আলী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী অবৈধ গ্যাস সংযোগের ব্যাপারে জড়িত নয়।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুসরাত জাহান বলেন, ‘সারাদেশে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা কায়েতপাড়া ইউনিয়নের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছি। পুরো উপজেলায় পর্যায়ক্রমে এ অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
তিতাসের সোনারগাঁও জোনাল বিপণন অফিসের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মেজবাহ উর রহমান বলেন, ‘গত সোমবার কায়েতাপাড়ায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। গ্যাস সংযোগ বৈধ করার নাম করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কেউ টাকা নিয়ে থাকলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সংবাদ প্রকাশঃ  ২৪২০২১ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ