যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন শ্বাশুরী আটক

গৃহবধূ জোৎস্না বেগমকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনের ছবি আছে।

সিটিভি নিউজ।।   এবিএম আতিকুর রহমান বাশার,    দেবীদ্বার(কুমিল্লা) প্রতিনিধি//========
কুমিল্লার দেবীদ্বারে যৌতুকের জন্য প্রবাসী স্বামীর প্ররোচনায় এক গৃহবধূকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে তার শ^শুর- শ^াশুরী ও ননদের বিরুদ্ধে।
সংবাদ পেয়ে বুধবার রাত ১১টায় উপজেলার ধামতী গ্রামের উত্তর পাড়াস্থ (কোরের পাড়) দুলাল মিয়ার বাড়ি থেকে পুলিশের সহযোগিতায় ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন তার স্বজনরা। ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে নির্যাতিতার শ^াশুরী জুলেখা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, বাবার বাড়ি থেকে একলক্ষ টাকা এনে দিতে বুধবার বিকেলে ওই গৃহবধুকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন চাপ দেয়। সে টাকা এনে দিতে রাজী না হওয়ায় শ^শুর, শ^াশুরী ও ননদেরা মিলে দু’টি নারিকেল গাছের সাথে দু’হাত বেঁধে তার উপর শারিরীক নির্যাতন চালায়। স্থানীয়দের চাপে নির্যাতিতা গৃবধূর হাতের বাঁধন খুলে দিলেও ঘরে আটক রেখে রাতে আবারও তার উপর নির্যাতন চালায়। সংবাদ পেয়ে গৃহবধূর স্বজনরা তাকে উদ্ধারে ওই বাড়িতে গেলে তাদের বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি।
পরে দেবীদ্বার থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক(এএসআই) সারোয়ার তালুকদার একদল পুলিশ নিয়ে রাত ১১টায় তাকে উদ্ধার করে আনলে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্বজনরা।
দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন নির্যাতিতা গৃহবধূ জ্যোৎসনা জানান, প্রায় ১৬ বছর পূর্বে ধামতী গ্রামের দুলাল মিয়ার পুত্র হেলাল এর সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা যৌতুক পরিশোধ করতে হয়। বিয়ের পরপরই বাবা মারা যান। এরই মধ্যে আমাদের সংসারে ২ ছেলে ও ২ মেয়ের জন্ম হয়। প্রায় ১২ বছর পূর্বে আমার স্বামী ওমান যাওয়ার সময় আরো ২ লক্ষ টাকার জন্য চাপ দিলে আমার ভাইয়েরা ১ লক্ষ টাকা দেন। গত এক বছর পূর্বে দেশে এসে আবারো বাকী ১লক্ষ টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। প্রতিনিয়ত টাকার জন্য নির্যাতন চালাতে থাকে। স্বামী চলে যাওয়ার পর স্বামীর প্ররোচনায় আমার শ^শুর দুলাল মিয়া, শ^াশুরী জুলেখা বেগম, দুই ননদ মৌসুমী ও পাখী তার উপর প্রতি নিয়ত নির্যাতন চালাতে থাকে। আমার মাথার চুলগুলো টেনে ছিড়ে প্রায় শেষ করে ফেলেছে। মুখে কিল-ঘূষি আর থাপ্পরে দাঁতগুলোও নড়ে গেছে। গতকাল বুধবার বিকেলে বাবার বাড়িতে ১ লক্ষ টাকা এনে দিতে আবারো অমানবিক নির্যাতন চালায় শ^শুর, শ^াশুরী, ননদেরা। এক পর্যায়ে আমার দু’হাত বেঁেধ দু’টি নারিকেল গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন চালায়। রাতে ঘরে নিয়েও একই অবস্থা করে।
নির্যাতিতার মা ফরিদা বেগম জানান, মেয়েকে বহুবার নিয়ে আসতে চেয়েছি। সে ৪ সন্তানের মায়ায় আসেনি। গত ১৫ বছরে অন্তত: ১০/১২টি সালিস হয়েছে, ছেলের পক্ষ সালিসের রায় মেনে পরে উল্টোটা করে। এখন আর কেউ সালিস করতে আসেনা। আমার আত্মীয় স্বজনও যায়না। আমরা গরিব মানুষ কত টাকা দিতে পারি। আমার ৪ ছেলে দিন মজুর।
ভিক্টিমের ভাই জামাল হোসেন জানান, বুধবার বিকেলে একলক্ষ টাকা বাবার বাড়ি থেকে এনে দিতে চাপ দিলে, জ্যোৎস্না রাজি না হওয়ায় শ^শুর, শ^াশুরী ও ননদেরা মিলে দু’টি নারিকেল গাছের সাথে তার দু’হাত বেঁধে শারিরীক নির্যাতন চালায়। পরে স্থানীয়দের চাপে তার হাতের বাধন খুলে দিলেও রাতে আবারো নির্যাতন চালাতে থাকে। আমরা বোনকে উদ্ধারে তাদের বাড়িতে গেলে আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে পুলিশের সহযোগীতায় রাত ১১টায় বোনকে উদ্ধার করে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করাই।
এ ব্যাপারে নির্যাতিতা গৃহবধূর শ^শুর বাড়ির কারো সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর জানান, অভিযান চালিয়ে ভিক্টিমের শ^াশুরী জুলেখা বেগমকে আটক করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।   সংবাদ প্রকাশঃ  ২৭-১০-২০২২ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন=  

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ