মুরাদনগরে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বাড়ি দখল

সিটিভি নিউজ।।     এম ফয়জুল ইসলাম মুরাদনগর থেকে :===========
মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে তার বাড়ি দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালী একটি পরিবার। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের রানীমুহুরী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা কন্যা সেলিনা বেগম প্রভাবশালী মুর্শিদ মিয়াদের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেছেন। নির্যাতিত সেলিনা বেগম ধামঘর ইউনিয়নের রায়তলা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিলের মেয়ে।
সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মুক্তিযোদ্ধার কন্যা সেলিনা বেগমের স্বামী আবদুল মালেক কুমিল্লার সহকারী জজ মুরাদনগর আদালতে মামলা (দেওয়ানী ৬৫/২০১৯) করেন। ওই মামলায় ২০২২ সালের ১১ জানুয়ারি সাবেক ৫৭০ ও হালে ৯৭১ দাগে সাড়ে ৯ শতক বাড়ি আবদুল মালেকের পক্ষে রায় হয়। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটির বিরুদ্ধে প্রভাবশালী মুর্শিদ মিয়ার নেতৃত্বে একটি মহল নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আদালত থেকে রায় পাওয়া সাড়ে ৯ শতক বাড়ির মধ্যে সাড়ে ৫ শতকই দখল করে নিয়েছে। এরমধ্যে মুর্শিদ মিয়া সাড়ে ৩ শতক, জয়নাল এক শতক, প্রবাসী বিল্লাল আধা শতক ও শাহজাহান আধা শতক। দখল করে নেওয়া ওই জায়গায় টিন, কাঠ ও বাশের বেড়া দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটিকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তাদের ব্যবহৃত টয়লেট। টিউবওয়েলটি তুলে নিয়ে গেছে। বর্তমানে পুরো বাড়িটি দখল করে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটিকে ভিটে মাটি থেকে উচ্ছেদ করার পায়তারা করছে। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটির উপর হামলার বিষয়ে গত ৩ নবেম্বর থানায় অভিযোগ করার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে প্রভাবশালী মুর্শিদ মিয়া ও তার লোকজনেরা সটকে পড়ে। কিন্তু পুলিশ চলে যাওয়ার পর বাড়ি-ঘর ছেড়ে চলে যাবার জন্য মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটিকে তারা আবারো প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি অব্যাহত রেখেছে।
ভূক্তভোগী সেলিনা বেগম (৫০) জানান, ‘প্রভাবশালী মুর্শিদ মিয়া ও তার সহযোগিরা বেশ কয়েকবার আমাদের উপর হামলাও চালিয়েছে। এখন হুমকি দিচ্ছে খুন করে লাশ ঘুম করার। তাই আমরা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। প্রতিবেশী ছালাম ডাকাতি ও ছুরিকাঘাতের মামলায় সাড়ে ৮ বছর কারাগারে ছিলেন। ছালাম ও বিল্লালের স্ত্রী শাহিনুর দা, ছেনি নিয়ে গায়ে পড়ে আমাদের সাথে ঝগড়া করতে আসে। তাদের ভয়ে প্রতিবাদ করাতো দূরের কথা কেউ ভয়েও মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।’
ভূক্তভোগি আবদুল মালেক (৭১) সাংবাদিকদের কাছে পেয়ে হাই মাউ করে কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘আদালতে রায় পাওয়া সত্বেও আমার জায়গা জোরপূর্বক প্রভাবশালীরা দখল করে নিয়েছে। টাকার অভাবে উচ্ছেদ মোকদ্দমাও করতে পারছি না। জানিনা মরার আগে জায়গাটি দখলে দেখে যেতে পারব কিনা।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মুর্শিদ মিয়া বলেন, ‘আমি মালেকের কাছ থেকে আরো জায়গা পাবো। আদালত কর্তৃক সাড়ে ৯ শতক বাড়ির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে একতরফা ভাবে আদালত থেকে রায় নিয়ে এসেছে। উচ্ছেদ মোকদ্দমা করে আসুক। উচ্ছেদ করার জন্য হুমকি-ধমকি দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।’
এমন অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন রাসেল বলেন, ‘তাদের পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে শরিকদের মাঝে সমস্যা আছে। সেটি সামাজিকভাবে সমাধান করার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হয়েছে। দখলদাররা না মানায় বিষয়টি সূরাহা করা যাচ্ছে না।’
মুরাদনগর থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে নেই। যদি ঘটনা সত্যি হয়, তাহলে ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে নিরাপত্তার বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।’

সংবাদ প্রকাশঃ  ০৩-১১-২০২২ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন=  

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ